রাসূল (সা.) এর আদর্শ ও আওলিয়া কেরামদের অনুসৃত পথেই নৈতিক পুনর্জাগরণের পথ পীর সাহেব ছারছীনা
নিজস্ব প্রতিবেদক: শনিবার, ৮ নভেম্বর ২০২৫
রাজধানীর চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র হিযবুল্লাহর কেন্দ্রীয় কাউন্সিল–২০২৫। সারাদেশের মহানগর, জেলা, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা থেকে আগত প্রতিনিধি, পর্যবেক্ষক ও অতিথিদের উপস্থিতিতে দিনব্যাপী এ কাউন্সিল এক অনন্য মিলনমেলায় রূপ নেয়।
পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত ও নাতে রাসূল (সা.) পরিবেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন হয়। সংগঠনের সাংস্কৃতিক দল ‘জুলফিকার’ মনোমুগ্ধকর গজল পরিবেশন করে। উদ্বোধনী অধিবেশনে সভাপতির বক্তব্যে সংগঠনের বর্তমান সভাপতি মুফতি শামসুল আলম মোহেব্বী সংগঠনের অগ্রযাত্রা, কার্যক্রম ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জমিয়তে হিযবুল্লাহর আমীর ও ছারছীনা দরবার শরীফের পীর হযরত মাওলানা মুফতি শাহ্ আবু নছর নেছারুদ্দীন আহমাদ হুসাইন (মা.জি.আ.)। তিনি বলেন, “বর্তমান সময়ের সবচেয়ে বড় সংকট হলো নৈতিকতা ও আদর্শের সংকট। ছাত্র সমাজ যদি আল্লাহভীরু হয়, তাহলে সমাজে সত্য, ন্যায় ও আদর্শের শাসন প্রতিষ্ঠিত হবে।”
পীর সাহেব হুজুর আরও বলেন, “ছাত্র হিযবুল্লাহ এমন এক প্রজন্ম তৈরি করছে যারা ইমান, আকীদা, তাকওয়া, আদর্শ ও নেতৃত্বগুণে পরিপূর্ণ হবে। প্রিয়নবি (সা.) ও আওলিয়া কেরামদের আদর্শ অনুসরণ করেই ব্যক্তি, সমাজ ও দেশ গঠন সম্ভব।”
সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মুফতি শামসুল আলম মোহেব্বী এবং সঞ্চালনা করেন মুহা. বাহাউদ্দীন মোস্তাফি। সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ ছাত্র হিযবুল্লাহ তরুণ প্রজন্মকে ইসলামী চেতনায় উজ্জীবিত করতে নিরলসভাবে কাজ করছে। শরীয়ত ও মারেফতের সমন্বয়ে সমাজে ইতিবাচক নেতৃত্ব গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য।”
আলোচনা পর্বে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদারেছীন-এর সভাপতি ও দৈনিক ইনকিলাব সম্পাদক আলহাজ্ব এ. এম. বাহাউদ্দীন, হযরত মাওলানা শাহ আবু বকর মুহাম্মদ সালেহ নেছারুল্লাহ, মাওলানা মির্জা নুরুর রহমান বেগ, কবি রুহুল আমীন খান, ড. সৈয়দ মুহাম্মদ শরাফত আলী, মাওলানা শাহ মুহা. নেছারুল হক ও মাওলানা আ. খ. ম. আবু বকর সিদ্দিকসহ অনেকে।
প্রথম অধিবেশনে উপস্থাপিত হয় গত এক বছরের সাংগঠনিক প্রতিবেদন, যেখানে দাওয়াতি, সাংগঠনিক ও সেবামূলক কার্যক্রমের সারসংক্ষেপ তুলে ধরা হয়। দ্বিতীয় অধিবেশনের আলোচ্য বিষয় ছিল ‘ছাত্র সমাজের আদর্শিক পুনর্জাগরণে ইসলামী নেতৃত্বের ভূমিকা’। বক্তারা বলেন, শিক্ষাঙ্গনে মূল্যবোধ ও নৈতিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনা সময়ের দাবি।
শেষ অধিবেশনে গঠিত হয় নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি। নবনির্বাচিত সভাপতি বলেন, “বর্তমান বস্তুবাদী সমাজে নৈতিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে ছাত্র হিযবুল্লাহ এক আলোকবর্তিকা। আমরা রাজনীতির প্রতিযোগিতায় নয়, আদর্শের প্রতিযোগিতায় বিশ্বাসী।”
সমাপনী অধিবেশনে আগাম কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করা হয়। এতে দাওয়াতি কার্যক্রম সম্প্রসারণ, নৈতিক প্রশিক্ষণ কর্মশালা, বইপাঠ আন্দোলন এবং শিক্ষাঙ্গনে ইতিবাচক সংস্কৃতি গড়ে তোলার উদ্যোগের কথা উল্লেখ করা হয়।
অনুষ্ঠানের শেষাংশে মিলাদ ও কিয়াম অনুষ্ঠিত হয়। পীর সাহেব হুজুর কেবলার দোয়া-মুনাজাতে দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহর কল্যাণ কামনার মধ্য দিয়ে কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের সমাপ্তি ঘটে।


















