রাজু আহমেদ | প্রকাশিত, ৫ জুন ২০২৫|
ঢাকা: রাজধানীর পল্লবীর বাউনিয়াবাধে তিনদিন আটকে রেখে নির্মম নির্যাতনের পর ফারজানা নামের এক নারীকে হত্যা করা হয়েছে। নিহতের পরিবারের অভিযোগ, পল্লবী থানা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের একাধিক নেতাকর্মী এই ঘটনায় জড়িত। হত্যাকাণ্ডের পেছনে ছিল টাকার লেনদেন।
মামলার এজাহারে অভিযুক্তদের মধ্যে মোঃ মামুন (৪০), মুক্তার (৩৫), আক্তার হোসেন (৩২), রনি (৩২), মোকছেদ আলী (৩৫), জনি (২৮), সোহেল বেপারী (মোস্তফা), আসলাম গাজী (ইসমাইল গাজী), ওমর (৩৫), শাকিল (৩৫), লাল চাঁন (৩২), রাকিব (৩২) সহ অজ্ঞাত আরও ১০-১২ জন উল্লেখ রয়েছে।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ৩০ মে সাভার থেকে ফারজানাকে অপহরণ করে শ্রমিক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মামুন, সদস্য সচিব সোহেল, ৫ নম্বর ওয়ার্ড যুবদল নেতা মুক্তার হোসেন, বিএনপি কর্মী আক্তার হোসেন, রনি, ৫নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আসলাম গাজী, মোকসেদসহ আরও কয়েকজন। তাকে প্রথমে একটি ক্লাবঘরে আটক রেখে পরে বাউনিয়াবাদের এ-ব্লকে মুক্তার হোসেনের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।
সেখানে অন্তত ছয়-সাতজন মিলে ফারজানার ওপর অমানবিক নির্যাতন চালায়। তাকে ছেড়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ৫ লাখ টাকা আদায় করে। পরে ছিনিয়ে নেয় মোবাইল, বিকাশ ও ব্যাংক অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড। অ্যাকাউন্টে প্রায় ৫০ লাখ টাকার তথ্য পেয়ে তারা আরও অর্থ আদায়ের চেষ্টা করে। একপর্যায়ে ৪ জুন ফারজানা মৃত্যুবরণ করেন।
ফারজানার ভাই রকি পল্লবী থানায় অপহরণ, আটকে রেখে অর্থ আদায়, নির্যাতন ও হত্যার অভিযোগে মামলা করেছেন। তবে তার অভিযোগ, মামলার এজাহার বারবার পরিবর্তন করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের বিল পরিশোধ করতেও স্থানীয়দের কাছে হাত পাততে হয়েছে।
অভিযুক্তরা পল্লবী থানা বিএনপির প্রভাবশালী নেতা মোতালেব এবং মাদক কারবারি ও কথিত বিএনপি নেতা আল ইসলামের ঘনিষ্ঠ বলে স্থানীয়দের দাবি। তাদের অভিযোগ, বাউনিয়াবাদে এ ধরনের ঘটনা আগেও ঘটেছে, কিন্তু রাজনৈতিক আশ্রয়ে অপরাধীরা বারবার রক্ষা পেয়ে যাচ্ছে।
এ ঘটনায় স্থানীয়দের সহায়তায় সেনাবাহিনী বাড়ির মালিক মুক্তার হোসেন ও তার বোনকে আটক করে পল্লবী থানায় হস্তান্তর করে।
পল্লবী থানার ওসি বলেন, “মামলা হয়েছে, আসামি ধরতে অভিযান চলছে।”

















