নিজস্ব প্রতিবেদক| ঢাকা, রবিবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৫:
রাজধানীর মিরপুরের পল্লবী এলাকায় নকশাবহির্ভূত ভবন নির্মাণের বিরুদ্ধে রাজউকের মোবাইল কোর্ট অভিযান চালানো হয়েছে। এই পদক্ষেপের সূচনা ঘটে গত ৭ মার্চ ২০২৫ তারিখে বাংলাদেশ একাত্তর ডটকমে প্রকাশিত এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশের পরপরই। প্রতিবেদনে উল্লেখিত অপরাধের ভিত্তিতে রাজউক দুইটি ভবনের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
অভিযানে মোট দেড় লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয় এবং দুই ভবনের অবৈধ নির্মাণাংশ ভেঙে ফেলা হয়, যা স্থানীয়দের মাঝে স্বস্তি ও ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।
বোরহান উদ্দিনের ভবনে মোক্ষম আঘাত: ভাঙচুর ও জরিমানা
প্রথম অভিযানে, নড়াইল জেলার দিঘলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ বোরহান উদ্দিনের মালিকানাধীন পল্লবীর তিনতলা ভবনে অভিযান চালানো হয়। রাজউকের অনুমোদন না নিয়েই ভবনটির পিলার, দেয়াল ও জানালা ফুটপাত এবং রাস্তার অংশ জুড়ে নির্মাণ করা হচ্ছিল।
রাজউক মোবাইল কোর্ট ভবনের নিচতলার বেশির ভাগ অংশ ভেঙে ফেলে এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে। স্থানীয়দের অভিযোগ অনুযায়ী, ভবনটির কারণে চলাচলের রাস্তা প্রায় অচল হয়ে পড়েছিল এবং কোনো ধরনের নিরাপত্তা বেষ্টনি ছাড়াই নির্মাণকাজ চলছিল, যা জননিরাপত্তার জন্য হুমকি স্বরূপ ছিল।
জিএম ডেভলপারস লিমিটেডের ১০ তলা ভবনে ভাঙচুর ও ১ লক্ষ টাকা জরিমানা
পরবর্তী অভিযানে, পল্লবীর বি-ব্লকে অবস্থিত জিএম ডেভলপারস লিমিটেডের নির্মাণাধীন ১০ তলা ভবনে রাজউকের মোবাইল কোর্ট হানা দেয়। নকশা লঙ্ঘন করে অতিরিক্ত নির্মাণ করায় ভবনের দ্বিতীয় তলার সামনের বড় একটি অংশ ভেঙে ফেলা হয়, এবং এক লক্ষ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
রাজউকের নেতৃত্ব ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা
অভিযান পরিচালনায় নেতৃত্ব দেন রাজউকের পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ মনির হোসেন হাওলাদার, এবং অথরাইজড অফিসার (জোন ৩/১) গোলাম রাব্বানী রনি। সঙ্গে ছিলেন সিটি করপোরেশন ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা, যারা নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা রক্ষায় সহায়তা করেন।
জনমনে স্বস্তি, দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা
রাজউকের এই অভিযান এলাকাবাসীর মাঝে ব্যাপক স্বস্তি ও সন্তোষের জন্ম দিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের দখল, চাঁদাবাজি, ও নকশা লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছিল। এবার সেই প্রেক্ষাপটে সাংবাদিকতা ও প্রশাসনের যৌথ পদক্ষেপে কিছুটা হলেও সুবিচার দেখেছে জনগণ।
স্থানীয়রা মনে করছেন, রাজউক যদি এভাবে নিয়মিত অভিযান চালায়, তবে ভবিষ্যতে আর কেউ অবৈধভাবে ফুটপাত দখল করে জনসাধারণের চলাচলের পথে বাধা দিতে সাহস পাবে না।


















