রাজু আহমেদ; প্রকাশিত, ১৯ মার্চ ২০২৫
রাজধানীর পল্লবীর বাউনিয়াবাদ এলাকায় মূল সড়ক দখল করে বসানো হয়েছিল অবৈধ মেলা। ব্যস্ততম রাস্তায় মেলার কারণে এলাকাবাসী চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছিল। এর আড়ালে চলছিল মাদকের রমরমা ব্যবসা, কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য ও নারীদের হয়রানি। স্থানীয় বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের অভিযোগের পর গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হতেই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পুলিশের অভিযান!
বিএনপি নেতাদের ছত্রচ্ছায়ায় জমজমাট মাদক ও চাঁদাবাজি!
স্থানীয়দের অভিযোগ, বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের কিছু নেতা-নেত্রীর প্রশ্রয়ে এই অবৈধ মেলা বসানো হয়। পল্লবীর লালমাটিয়া মোড়ে মেলার চারপাশে বিএনপি নেতা আমিনুল হকের বিশাল ব্যানার ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল। মেলার নাম করে রাস্তায় বসানো হয় বিভিন্ন দোকান ও রাইড। কিন্তু এর আড়ালে চলত চাঁদাবাজি, লুটপাট ও মাদক ব্যবসা।
কিশোর গ্যাংয়ের দখলদারি, নারীদের হয়রানি—অসহায় এলাকাবাসী
এলাকাবাসীরা জানান, সন্ধ্যার পর কিশোর গ্যাংয়ের দলবদ্ধ আড্ডা শুরু হয়। প্রকাশ্যে মাদক সেবন, ছিনতাই, চুরি ও নারীদের হয়রানি নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়ায়। ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পান না। এক বাসিন্দা বলেন, “আমরা প্রতিবাদ করলে আমাদের হুমকি দেওয়া হয়! প্রশাসনও নিশ্চুপ ছিল।”
বিদ্যুৎ চুরি করে আলোকসজ্জা—কারা দিচ্ছে সাপোর্ট?
অনুসন্ধানে জানা গেছে, অবৈধভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে মেলায় শত শত বাতি ও রাইড চালানো হচ্ছিল। বিদ্যুৎ অফিসের কিছু অসাধু কর্মীর সহায়তায় এই সংযোগ নেওয়া হয়, যা মারাত্মক অগ্নিঝুঁকির কারণ হতে পারত।
শেষমেশ পুলিশের হস্তক্ষেপ—মেলা উচ্ছেদ!
অবৈধ মেলা বন্ধের দাবিতে এলাকাবাসীর তীব্র প্রতিবাদের পর বুধবার রাত ৯টার দিকে পল্লবী থানার ওসির নির্দেশে দুই গাড়ি পুলিশ সদস্য অভিযান চালিয়ে মেলা উচ্ছেদ করেন। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসে। তারা ধন্যবাদ জানান পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি নজরুল ইসলামসহ পুলিশ সদস্যদের।
এলাকাবাসীর দাবি—স্থায়ী ব্যবস্থা নিন!
স্থানীয়রা চান, শুধু উচ্ছেদ নয়, ভবিষ্যতে যেন আর কোনো অবৈধ মেলা বসতে না পারে, কিশোর গ্যাং ও মাদক ব্যবসা বন্ধ হয়। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
সড়ক দখল করে মেলার নামে অপরাধ—আর নয়!
এলাকাবাসীর একটাই দাবি: নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন, সড়ক মুক্ত করুন!