বিয়ের সময় ঝর্ণার পরিবার নগত একলাখ টাকা দেয় বর নোমানের পরিবারকে। কয়েক মাস পরে মোটর সাইকেল কিনে দিতে ফের দেড় লখ টাকা যৌতুক দাবী, যৌতুক না দেওয়ায় নোমানের পরিবার পাশবিক নির্যাতন চালায় স্ত্রী ঝর্ণার উপর।
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি-আজিজুল ইসলামঃ
সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার পলাশ ইউনিয়নের কুটিপাড়া গ্রামে যৌতুকলোভী স্বামী, শ্বশুর, শ্বাশুড়ি ও দেবরের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন সইতে না পেরে তাদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত বিশ^ম্ভরপুর জোনে একটি মামলা করেছেন ভুক্তভোগী স্ত্রী সাবিকুন্নাহার ঝর্ণা।
গত ১৪ জুন ২০২১ইং তারিখে সাবিকুন্নাহার ঝর্ণা নিজে বাদী হয়ে কুটিপাড়া গ্রামের নোমান আহমদ, শ্বাশুড়ি নুর জাহান, শ্বশুর আব্দুল হালিম ও দেবর রেজুয়ানসহ চারজনকে আসামী করে মামলাটি দায়ের করে। অভিযোগসূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের ৯ ডিসেম্বর কুটিপাড়া গ্রামের নোমান আহমদের সাথে বাদী সাবিকুন্নাহার ঝর্ণার চারলাখ টাকা দেনমোহর ধার্য করে ইসলামি শরিয়া মোতাবেক বিয়ে সম্পন্ন হয়। এছাড়াও বিয়ের সময় ঝর্ণার সুখের কথা চিন্তা করে তার পরিবার ফার্নিচারসহ আসবাবপত্র ক্রয়ের জন্য আরো একলাখ টাকা নোমানের পরিবারকে দেয়া হয়। বিয়ের কয়েক মাস দাম্পত্যজীবন ভাল চললেও এরপরেই নোমান ও তার পিতামাতা মোটর সাইকেল বাবদ যৌতুক হিসেবে দেড়লাখটাকা বাদীর বাবার বাড়ি হতে এনে দিতে চাপ প্রয়োগ করেন। বাদী এই টাকা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করলে তার উপর স্বামী, শ্বশুর, শ্বাশুড়ি ও দেবর কর্তৃক চলে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। এই নির্যাতন শেষ পর্যন্ত বাদিনীকে পিঠিয়ে গুরুতর আহত করে তার পিত্রালয়ে রেখে আসেন এবং মোটর সাইকেল বাবদ দেড়লাখ টাকা যৌতুক হিসেবে নিয়ে আসতে পারলে যেন স্বামীর বাড়িতে আসা হয়। কিছুদিন পর বাদিনী সাবিকুন্নাহার ঝর্না স্বামীর বাড়িতে আসলে স্বামী নোমান আহমদ প্রথমে জানতে চায় মোটর সাইকেলের দেড়লাখ টাকা নিয়ে এসেছে কিনা। সাবিকুন্নাহার টাকা আনেননি বলে জানালে নোমান তার ন্ত্রীকে কিল ঘুষি মেরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে নিলা ফুলা যখম করে। পরে আহত অবস্থায় মাঠিতে ফেলে শশুর শাশুড়ী মিলে চুলের মুঠি ধরে টানাহেচড়া করে আরো বেদম পিটায়। পরে দেবর এসে লাথি মেরে ঘর থেকে বের করে দেয়।
বাদিনী সাবিকুন্নাহার ঝর্ণা জানান, বিয়ের পর থেকে উল্লেখিত ব্যক্তিরা তাকে যৌতুকের টাকার জন্য চাপ প্রয়োগ করত এবং মাঝে মাঝে শারীরিক নির্যাতন করত। তিনি আসামীদ্বয়ের দৃষ্টান্তুমূলক শাস্তি প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দাবী জানান। এ ব্যাপারে প্রধান আসামী স্বামী নোমান আহমদের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন সাংবাদিকরা যা লিখতে পারেন লিখেন তার নাকি কিছুই করতে পারবে না কেউ।
নোমানের বাবা মোঃ আব্দুল হালিমের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য জানা যায়নি।
ঘটনার বিষয়ে বিশ্বম্ভরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ সুরঞ্জিত তালুকদার জানান, বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করে দেখছে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বস্ত করেন।