ফের সক্রিয় কুখ্যাত গ্রুপ ও সন্ত্রাসী বাহিনী; পুরনো টেন্ডারবাজ, খুনি, দখলদার ও মাদক সিন্ডিকেটের পুনরুত্থানে আতঙ্কিত নগরবাসী
অনুসন্ধানী প্রতিবেদন; প্রকাশ ১০ নভেম্বর ২০২৫
রাজধানী আবারও কি ফিরছে সেই অন্ধকার সময়ের দিকে — যখন প্রতিটি এলাকায় ছিলো আলাদা বাহিনী, আলাদা সন্ত্রাসী গ্রুপ? সম্প্রতি নিহত মামুন ও তার ঘনিষ্ঠ ইমনকে ঘিরে ফের আলোচনায় এসেছে পুরনো আন্ডারওয়ার্ল্ডের নামগুলো। তাদের পদধ্বনি যেন শোনা যাচ্ছে শহরের অলি-গলিতে।
ইমন–মামুন গ্রুপ:
হাজারীবাগ, মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, তেজগাঁও ও পান্থপথ এলাকায় বহু বছর ধরে টেন্ডারবাজি, দখলবাজি ও খুনের সাথে জড়িত ছিলো “ইমন-মামুন গ্রুপ”। ৯০ ও ২০০০ দশকে এই চক্রের দৌরাত্ম্য এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে এলাকার সাধারণ মানুষ আতঙ্কে নাম নিতে ভয় পেতো।
চান বাহিনী – পল্লবীর আতঙ্ক:
পল্লবী ও রূপনগর এলাকায় “ ছোট বড় বিভিন্ন বাহিনী” আবারও মাথাচাড়া দিচ্ছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। এই বাহিনীর সঙ্গে চাঁদাবাজি, মাদক কারবার, অস্ত্র ব্যবসা ও রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোর একাধিক তথ্য প্রশাসনের কাছে পৌঁছেছে। সম্প্রতি একাধিক হামলা ও মৃত্যুচেষ্টার ঘটনায় এই বাহিনীর নাম উঠে এসেছে।
কাঞ্চন–রাজীব গ্রুপ:
মুগদা থেকে খিলগাঁও পর্যন্ত এলাকাজুড়ে সক্রিয় “কাঞ্চন–রাজীব গ্রুপ”। এরা পুরনো অপরাধী হলেও বর্তমানে রিয়েল এস্টেটের আড়ালে চলছে চাঁদাবাজির সিন্ডিকেট। বেশ কয়েকটি স্কুল-কলেজের টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করে তারা।
রানা বাহিনী – যাত্রাবাড়ী ও শনিরআখড়া:
মাদক, চুরি, ছিনতাই ও স্থানীয় ব্যবসায়ী নিয়ন্ত্রণে “রানা বাহিনী”র দৌরাত্ম্য দিন দিন বেড়ে চলেছে। থানা পর্যায়ে বহু অভিযোগ থাকলেও প্রভাবশালী রাজনৈতিক আশ্রয়ে
পুরনো ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডের শিকড় এখনো কেটে ফেলা যায়নি। “বংশাল–চকবাজার সিন্ডিকেট” নামে পরিচিত এই গোষ্ঠী সোনার দোকান, গুদাম ব্যবসা ও পুরনো যানবাহন ব্যবসার আড়ালে চলে অবৈধ অর্থ ও অস্ত্র বাণিজ্য।
তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল – নতুন প্রজন্মের দৌরাত্ম্য:
এলাকার কিছু নতুন মুখ—‘রাফি’, ‘শাওন’, ‘বাপ্পী’ নামে পরিচিত একদল তরুণ বর্তমানে টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ ও রাজনৈতিক পোস্টার লাগানোর নামে চাঁদা আদায়ে ব্যস্ত। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মাসোহারা না পেলে হুমকি ও হামলার ঘটনাও ঘটছে নিয়মিত।
নাগরিকদের প্রশ্ন:
কেন বারবার এই পুরনো বাহিনী ও নতুন মুখগুলো সক্রিয় হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে? প্রশাসন জানে, তবুও পদক্ষেপ নেয় না কেন?
রাজধানীর নাগরিকরা বলছেন, “ঢাকা এখন আবার সেই পুরনো ভয়াবহ সময়ের দিকে যাচ্ছে, যখন রাত মানে ছিলো গুলির শব্দ আর সকালে ছিলো মৃতদেহের খবর।”
ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ড যেন ফের জেগে উঠছে— পুরনো মুখ, নতুন কৌশল, আর একই ভয়ংকর পরিণতি নিয়ে। এখনই কঠোর পদক্ষেপ না নিলে আবারও নগরজীবন বন্দুকের নলের নিচে চলে যেতে পারে।


















