আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়ে মিছিল, তদবির, চাঁদাবাজি-সবই চালাচ্ছে রূপনগরের অদৃশ্য সিন্ডিকেট
নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রকাশ, ২২ এপ্রিল ২০২৫
রাজধানীর পল্লবীতে মিরপুর জেনারেল হাসপাতালের মালিক হানিফ গ্রেফতার।
অভিযোগ, ছাত্র হত্যা মামলার আসামি কৃষক লীগ নেতা হানিফ, যুবলীগের বিতর্কিত নেতা জাকির এবং পলাতক তাইজুল ইসলাম চৌধুরী বাপ্পির পক্ষে মিছিল-প্রচার চালানো হয়েছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে।
ছাত্র হত্যা মামলায় কৃষক লীগ নেতা গ্রেপ্তার, তদবিরে ব্যস্ত রূপনগরের ‘সোর্স সাংবাদিক।
২১ এপ্রিল রাতে পল্লবীর কালশী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হন কৃষক লীগ মহানগর উত্তরের সহ-সভাপতি হানিফ।
তিনি ভাষানটেক থানার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র হত্যা মামলায় (মামলা নম্বর: ০২/১১-০৯-২০২৪) আসামি।
ডিবির মিরপুর বিভাগের একটি দল গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারের খবর প্রকাশ না করতে রূপনগর থানার কথিত ‘সোর্স সাংবাদিক’ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে তদবির চালান, এমনকি ডিবি কর্মকর্তাদের ওপরও চাপ প্রয়োগের চেষ্টা করেন। ‘সাংবাদিক’ পরিচয়ে মূলত জুয়াড়ি, সম্পত্তি জালিয়াত ও রাজনৈতিক দালাল
এই কথিত সাংবাদিক সম্পর্কে একাধিক সূত্র জানায়
চাঁদপুরে নিজের মায়ের ও ভাইয়ের সম্পত্তি জাল কাগজে নিজের নামে লিখে নিয়েছেন। নিজ এলাকায় ভিটেমাটি দখল করে মামলা দিয়ে পরিবারকে ঘরছাড়া করেছেন।
রূপনগরে জুয়া ক্লাব পরিচালনার সময় র্যাবের অভিযানে ময়লার ডোবায় লুকিয়ে পালিয়েছেন। পরে ‘সোর্স’ পরিচয়ে থানায় নিয়মিত যাতায়াত শুরু করেন।
বর্তমানে দুয়ারীপাড়ায় অবৈধ সুদের ব্যবসা, বাড়ি ও গ্যারেজ দখল, মাদক পরিবহনসহ বিভিন্ন অপরাধে তার নাম উঠে আসছে।
আওয়ামী ব্যানারে গ্যাং পুনর্বাসন: ‘মিরপুর জেনারেল হাসপাতাল’-এর ছায়া ভূমিকায় জাকির ও হানিফ
আনন্দ টিভির বুম হাতে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে এক আবাসিক হোটেলে গণপিটুনির শিকার হন এই কথিত সাংবাদিক, যা মিরপুর-১, পল্লবী, রূপনগর ও ইস্টার্ন হাউজিং এলাকার বাসিন্দারা জানেন।
যুবলীগের বিতর্কিত নেতা তাইজুল ইসলাম চৌধুরী বাপ্পি দেশের বাইরে থাকলেও তার ব্যানারে একটি রাজনৈতিক মিছিল সংগঠিত করা হয় পল্লবীতে। মিছিলের নেতৃত্ব দেন জাকির, যিনি বর্তমানে ‘মিরপুর জেনারেল হাসপাতাল’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের পরিচালক।
এই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান হানিফই ছিলেন মূল পরিকল্পক ও অর্থদাতা—যিনি বর্তমানে ছাত্র হত্যা মামলায় কারাগারে।
এক কথিত সাংবাদিক, জাকির ও হানিফ-এই ত্রিমুখী চক্র এখন নিজেদের ‘আওয়ামী পুনর্বাসন’ প্রক্রিয়ায় ব্যস্ত।
এলাকায় প্রতিটি মিছিল, ব্যানার লাগানো, লোক জড়ো করা, এমনকি অনলাইন কনটেন্ট ছড়ানো পর্যন্ত সব কিছুই পরিকল্পিতভাবে পরিচালিত হচ্ছে এই গ্যাংয়ের পক্ষ থেকে।
রূপনগর-কালশী চক্র শুধু রাজনীতির নয়, পুরো প্রশাসন ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। থানায় দিনে-রাতে যাতায়াত, মামলার আসামিদের পক্ষে তদবির, এলাকাবাসীকে হুমকি—সব কিছুই চলছে প্রকাশ্যে। তবু রূপনগর থানা এখনও তার বিরুদ্ধে কোনো দৃশ্যমান ব্যবস্থা নেয়নি। কেন?—এই প্রশ্ন এখন এলাকাবাসীর মুখে মুখে।
ডিবির অভিযানে সন্ত্রাসী গ্রেফতার, এলাকায় স্বস্তি
ডিবির মিরপুর বিভাগের এমন সফল অভিযানে চিহ্নিত সন্ত্রাসী গ্রেফতারের ফলে এলাকায় স্বস্তি ও শান্তি ফিরে এসেছে বলে দাবি করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
দীর্ঘদিন ধরে যারা রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় অপরাধ করে আসছিল, তাদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এলাকাবাসীর প্রত্যাশা—এ ধরণের অভিযান আরও জোরদার হবে, এবং যারা ‘সোর্স’ পরিচয়ে পুলিশের ছত্রছায়ায় থেকে অপরাধ করে চলেছে, তাদের বিরুদ্ধেও দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।