বুধবার , ৮ মে ২০১৯ | ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন ও আদালত
  3. আওয়ামীলীগ
  4. আন্তর্জাতিক
  5. খেলাধুলা
  6. জাতীয়
  7. তথ্য-প্রযুক্তি
  8. ধর্ম
  9. বি এন পি
  10. বিনোদন
  11. বিশেষ সংবাদ
  12. রাজধানী
  13. লাইফস্টাইল
  14. শিক্ষা
  15. শিল্প ও সাহিত্য

ইরাকে লেবার কাউন্সিলর রেজাউলের চক্রান্তে জীবন সংকটে ড. লিটনসহ চার বাংলাদেশী

প্রতিবেদক
bangladesh ekattor
মে ৮, ২০১৯ ১২:৩৮ পূর্বাহ্ণ

ইরাক প্রতিনিধি : ইরাক বাংলাদেশের দূতাবাসের কাউন্সিলর (লেবার) মোহাম্মদ রেজাউল কবির যুদ্ধবিধ্বস্ত ইরাকে ব্যাপক উন্নয়ন কার্যক্রম শুরু হওয়ায় বিগত বছর বাইরের দেশ থেকে কর্মী নিয়োগের জন্য ইরাকের অধিনস্থ বিভিন্ন কোম্পানী ভিসা দেওয়া শুরু করে।

বলা যায় এশিয়ার বিভিন্ন দেশের সাথে বাংলাদেশেও জনশক্তি রপ্তানির এক সম্ভাবনার দুয়ার খুলে যায় এবং এতে করে বাংলাদেশের রেমিট্যান্স বৃদ্ধির জন্য অন্যতম সহায়ক হচ্ছে।

বাংলাদেশের বিভিন্ন ট্রাভেলস এবং রিক্রুটিং এজেন্সি ইরাকে জনশক্তি রপ্তানি করতে সেখানকার কোম্পানীর সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে কর্মী প্রেরণ করে। তবে এত কিছুর মধ্যেও ঘটে যায় বিপত্তি।
সম্প্রতি মিডিয়ার প্রবাসীদের এক আলোচিত সংবাদ ছিল ইরাকের লিটনের জিম্মিদশা থেকে মুক্তি পাওয়া ৪৫ জন বাংলাদেশি শ্রমিক সংক্রাস্ত তথ্য। যেখানে উঠে আসে আকামার জন্য ডাক্তার লিটন প্রায় ৪৫ জন বাংলাদেশীকে একটি ঘরে আবদ্ধ করে জিম্মি রেখে মুক্তিপণ আদায়ের জন্য চাপ দেয়।
তবে প্রকৃত বিষয়টি আলোকপাত করলে দেখা যায়, ডাক্তার লিটন হলেন ইরাকের একটি কোম্পানীর বাংলাদেশি এজেন্ট।
বামে আইসিএস কর্পোরেশনের লিমিটেডে মালিক মো. আল মামুন, শহিদুল আলম এবং রিক্রুটিং অ্যাজেন্সি ফেমাক্স টেড এসোসিয়েট লিমিটেডের মালিক আজাদ রহমান।

ইরাকী কোম্পানীর নিকট হতে শ্রমিক নিয়োগে ডাক্তার লিটনের মাধ্যমে বাংলাদেশের রিক্রুটিং অ্যাজেন্সি ফেমাক্স টেড এসোসিয়েট লিমিটেড এবং আইসিএস কর্পোরেশনের লিমিটেডে ৩৩৯ জন কর্মীর ভিসা গ্রহন করে। সেই রিক্রুটিং অ্যাজেন্সির মালিকরা হলেন মো. আল মামুন, শহিদুল আলম এবং আজাদ রহমান।
এই ৩৩৯ জন লোকের ভিসা ইমিগ্রেশনে ম্যান পাওয়ার ক্লিয়ার করে ২৪৪ জনকে ইরাকে প্রেরন করেন এবং রিক্রুটিং এজেন্সি কিছু টাকা ইরাকী কোম্পানী প্রদান করেন। পরবর্তীতে ইরাকী কোম্পানী ২০০ জন লোকের আকামা সম্পন্ন করে কাজে প্রেরণ করেন। বাকী ৪৫ জন ইরাকে আকামার জন্য অপেক্ষমান থাকে। কিন্তু চুক্তি অনুযায়ী রিক্রুটিং অ্যাজেন্সির মালিকদের কাছ থেকে আরো ১ কোটি ৮৭ লক্ষ টাকা পাওনা থাকায় বাকী ৪৫ জনের কর্মীর আকামা দেওয়া যাচ্ছিল না। যার ফলে কর্মীরা ইরাকে আটকে যায় এবং কোম্পানীর বাংলাদেশের এজেন্ট ড. লিটনের তত্ত্বাবধানে একটি ফ্ল্যাটে অবস্থান করে। কিন্তু ড. লিটনের ভাষ্যমতে, কর্মীদের উপর কোনরুপ অত্যাচার করা হয়নি এবং তাদের বন্দি রাখা হয়েছে বলা যাবে না। এছাড়া তাদের কাছে থেকে মুক্তিপণ চাওয়া তো প্রশ্নই আসে না।
ডাক্তার লিটন ইরাকি কোম্পানীর অধীনে চুক্তি অনুযায়ী পাওনা টাকা রিক্রুটিং অ্যাজেন্সির মালিকদের কাছে চাইলে তাঁরা এটি দেওয়ার অপারগতা প্রকাশ করে এবং সব লেনদেন সম্পন্ন বলে কোম্পানী এবং লিটনের নামে মিথ্যা অপবাদ দেয়। এমনকি গত এপ্রিলের ৬ তারিখে লিটনকে ফাঁসাতে বাংলাদেশের একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকা নয়া দিগন্তে একটি বানোয়াট ও মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করায়।

লেবার কাউন্সিলর রেজাউল কবিরের এজেন্ট হয়ে কাজ করছে সাব্বির, টিটন, জাফর ও জিয়া মোল্যা যদিও তাদের বিরুদ্ধে গত ২৪ এপ্রিল দৈনিক ইত্তেফাকে ড. লিটন একটি প্রতিবাদ বিজ্ঞপ্তি দেন।
এক দিকে লিটনের নিকট ইরাকি কোম্পানীর দায় এবং তার অধীনে আটককৃত ৪৫ জন শ্রমিক জিম্মি আছে বলে অভিযোগে বেকায়দায় পড়েছেন বলে জানান।

ইরাক দূতাবাসের লেবার কাউন্সিলরের অনিয়ম সম্পর্কে ইরাকী কোম্পানীর এজেন্ট ডাক্তার লিটন জানান, ” ৩৩৯ জনের ভিসার জন্য লেবার কাউন্সিলর রেজাউল কবির ৫০,৮৫০ ইউএস ডলার ( যা বাংলাদেশি টাকায় ৪৩ লাখ ২২ হাজার ৫০টাকা) সত্যায়ন করতে তিনি গ্রহন করেন। যেটা আমি নিজ হাতেই তাকে পরিশোধ করি। যেখানে জন প্রতি তার ১০ ডলার নেওয়ার কথা সেখানে সে জনপ্রতি ১৩০ ডলার গ্রহন করেন। দেখুন তার অনিয়ম ও দূর্নীতি কত চরম পর্যায়ে পৌছে গেছে।

তাছাড়া মো. আল মামুন, শহিদুল আলম এবং আজাদ রহমান এই তিন রিক্রুটিং অ্যাজেন্সির মালিকের কাছ থেকে কোম্পানী ৩৩৯ জনের ভিসা বাবদ বাকী টাকা চাইলে রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক আজাদ,মামুন ও শহীদ টালবাহান শুরু করে দেয়। মিথ্যা অপবাদ দিয়ে ইরাকী কোম্পানী এবং আমাকে ফাঁসিয়েছে এবং আমাকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এমনকি রিক্রুটিং অ্যাজেন্সির মালিকরা ইরাকের বাংলাদেশের দূতাবাসের কাউন্সিলর (লেবার) মোহাম্মদ রেজাউল কবিরের সাথে বনিবনা ও চক্রান্ত করে ব্যাপারটি কঠিনভাবে ধামাচাপা দেওয়া হয়। যার ফলে আমিসহ চার বাংলাদেশি জীবন আজ সংকটাপন্ন। আমি ইরাকের বাংলাদেশি দূতাবাসে এই নিয়ে কোন সহযোগিতা পাচ্ছি না।

উল্লেখ্য এজেন্সির মালিক ও লেবার কাউন্সিলরের মধ্যে টাকার লেনদেনের খবর পাওয়া গেছে এবং টাকাগুলো দূতাবাসের কর্মচারী আব্দুল জব্বারের মাধ্যমে এজেন্সির মালিক আজাদ, মামুন, শহীদ, সাব্বির, টিটন, জাফর, জিয়া মোল্যা ও কমিউনিটির সদস্য গোলজার হোসেন সাব্বিরের মাধ্যমে হয়েছে।

এছাড়া লেবার কাউন্সিলর রেজাউল কবিরের দূর্নীতি ও অনিয়মের ঘটনা ইতপূর্বে অনেক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে বলে তিনি জানান।
তিনি আরো বলেন,” ইতোমধ্যে ইরাকি কোম্পানী এবং আমি বিষয়টি ইরাকের বাংলাদেশের দূতাবাসের কাউন্সিলর এবং ইরাকে বাংলাদেশের কিমিউনিটি’র সভাপতি ইয়াসিন (ফেনী)’কে অবগত করলে তাঁরা কোম্পানী পরিদর্শন করেন। এমনকি কমিউনিটির পক্ষ থেকে সভাপতি ইয়াসিন (ফেনী) নিয়মিত ফেমাক্স টেড এসোসিয়েট লিমিটেডের আর এল নং ৩৭৮ মালিক আজাদ রহমান এবং মো. আল মামুনের সাথে যোগাযোগ করলে সে সত্যতা পাওয়া যায় এবং তাঁরা অকপটে স্বীকার করে। যেটি ইরাকের বাংলাদেশের দূতাবাস অবগত রয়েছে।

তবে এখন পর্যন্ত ড. লিটন ইরাকের বাংলাদেশ দূতাবাসের লেবার কাউন্সিলর মোহাম্মদ রেজাউল কবিরের সাথে যোগাযোগ করেও এই নিয়ে কোন সদউপায় পাওয়া যাচ্ছে না এবং যতটুকু ধারনা করা যাচ্ছে তার সাথে রিক্রুটিং অ্যাজেন্সির মালিকদের একটি চক্রান্ত ও অনিয়মের যোগসাযোগ রয়েছে।

সর্বশেষ গত ৫ মে রবিবার ড. লিটন দূতাবাসের সচিব ইমরান সাহেবের সাথে যোগাযোগ করেও কোন সহযোগিতা পাননি।
তিনি দেশের সরকার ও রাষ্ট্রের কাছ থেকে তাকে এবং ইরাকি কোম্পানীকে নিয়ে মিথ্যা অপবাদ এবং এই চক্রান্ত থেকে পরিত্রান চান বলে জানান।

(সুত্রঃ খবর বাংলাদেশ)

সর্বশেষ - সর্বশেষ সংবাদ