সেই সুইটি মেরে রক্তাক্ত করলো অন্তঃসত্ত্বা এক নারীকে। ঘটনার ৫দিন হলেও থানায় মামলা হয়নি!
বাংলাদেশ একাত্তর.কম (সোহেল রানা) অভিযোগ উঠে, গত ২১ তারিখ সন্ধ্যা ৬টার দিকে রাজধানীর মিরপুর রুপনগর থানাধীন- আবাসিক এলাকার ৩০ নং রোডের ০৫ নং বাসায়। সুইটি আক্তার শিনু বার বার ত্রানের আস্বাস দিয়ে গর্ভবতী এক নারী মুন্নী বেগম (৩০) এর নিকট থেকে ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি নিলেও ত্রান দেননি। সুইটি তার দলবল নিয়ে পুনরায় আবার ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি চাইলে অনাহারে থাকা গর্ভবতী নারী মুন্নী বলেন, বার বার ভোটার আইডি নেন কিন্ত ত্রান তো দেননা আপা। একথা বলার সাথে সাথে ক্ষিপ্ত হয়ে গর্ভবতী নারীকে সবার সম্মুখে মারধর করে সুইটি সহ তার লোকজন। (তার মুখের এক পাশে ক্ষত চিহ্ন ফুটে উঠে) প্রানে বাঁচার জন্য দৌড়ে ঘরে লুকাতে গেলে সুইটির বাহিনী আলামিন, ছোট সুইটি, শিল্পী, মালা তাকে ঘড় থেকে টেনে হেঁচড়ে বের করে আবারও মারতে থাকে। শরীরে বিভিন্ন স্থানে নিলাফুলা জখম হয়। তার ডাক চিৎকারে আসেপাশের লোকজন এগিয়ে আসলেও সুইটির ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পায়নি।
এবিষয়ে রুপনগর থানায় মামলা করতে গেলে এস আই শফিক বিষয়টি আমলে না নিয়ে সুইটির সাথে আপোষ মিমাংসা করার প্রস্তাব দেন, মুন্নী আইনের মাধ্যমে বিচার চাইলে এস আই শফিক বলেন মামলা করতে হলে সরকারি হাসপাতালের সার্টিফিকেট লাগবে। পরে অসুস্থ শরীর নিয়ে মুন্নী বেগম ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা করে কিছুটা সুস্থ হয়ে থানায় মামলা করতে পুনরায় এলে (সেই গল্পের মত শুভংকরের ফাঁকি) পুলিশ মামলা না করার জন্য পরামর্শ দেন ও সুইটির সাথে মিমাংসা করার প্রস্তাব দেন। মুন্নী রাজি না হওয়ায় একটি সাধারণ ডায়রি নেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
ভুক্তভোগি মুন্নী থানায় সাধারণ ডায়রি করেও সুইটির ভয়ে বাসায় থাকতে পারছেননা। থানায় জিডি করার কারনে মুন্নী সহ তার স্বামীকে প্রানে মারবে ও হাত পা কেটে ফেলবে বলেও হুমকি দিয়ে আসছে সুইটি সহ তার লোকজন!
এমতাবস্থায় মুন্নীসহ তার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। বার বার এস আই শফিককে বিষয়টি অবগত করলেও কোনো আইনি সহযোগিতা পাচ্ছেনা বলেও এই প্রতিবেদককে কান্না জনিত কন্ঠে মুন্নী জানান।
এবিষয়ে রুপনগর থানার অফিসার ইনচার্জ এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঘটনা আমি শুনেছি ভুক্তভোগি আমার কাছে এসেছিলো, আমি নির্দেশ দিয়েছি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।
গর্ভবতী নারী কে মারধর হাসপাতালে ভর্তি তারপরও মামলা হলোনা না জিডি হলো। এমন প্রশ্নেঃ ওসি বলেন, এই ঘটনায় জিডিই হবে। ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে মামলা হবে সমস্যা কি। ওসি আরো বলেন, আমি তাকে দেখেছি, এটা জিডি হয়, ঐ এলাকায় দুজন মহিলা আছে একজন হলো নাজু আরেকজন হলো সুইটি এরা দুজনই খারাপ!
অন্যদিকে দেশের প্রধানমন্ত্রী করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সবাইকে ঘরে থাকার আহবান জানিয়ে অনাহারে থাকা মানুষের ঘরে ত্রান সামগ্রী পৌছে দেওয়া ব্যবস্থা করছেন। এমনো অভিযোগ পাওয়া গেছে ত্রান চুরি নিয়ে ইতিমধ্যে ব্যপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে সারাদেশে। সেই ত্রানের জন্য আজ ৬মাসের অন্তঃসত্ত্বা ক্ষুধার্থ অনাহারী নারী মুন্নী বেগম হয়েছেন রক্তাক্ত অপমানিত লাঞ্চিত ন্যায্য বিচারের আশায় থানা পুলিশের দাড়ে দাড়ে ঘুরছেন।
আজ ঘটনার ৫দিন হয়ে হলেও মামলা নেয়নি পুলিশ, জিডির কোনো কার্যক্রম নেই। সুইটির বিরুদ্ধে মামলা না নেয়ায় সুইটি সহ তার লোকজন আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে ভুক্তভোগীদের এলাকার ছাড়া করবে বলেও রিতিমত হুমকি দিয়ে আসছে।
গত মঙ্গলবার (১১ ডিসেম্বর) ২০১৮ সড়কে জনসম্মুখেই রিকশাচালককে সুইটি আক্তার থাপ্পড় মারার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।
সেসময় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের মহিলা-সম্পাদিকার গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে তাকে বহিস্কার করা হয়। সুইটি আক্তার শিনু আওয়ামিলীগের পদ হারিয়েও নিজের ক্ষমতা জাহির করে এলাকায় বেশ দাপটের সাথে চলেন। ধনবান ব্যক্তি ও রাজনৈতিক নেতাদের সাথেই তার বেশি সখ্যতা তাই তার বিরুদ্ধে কথা বলার মত কেউ সাহস পায়না ঐ এলাকায়।
এবিষয়ে সুইটি বলেন, এটা ঘটনা সত্য না তবে ঐ মহিলা আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছে। আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা তাকে দিয়ে আমার বিরুদ্ধে এগুলো অপপ্রচার করছে।
জানা যায়, সুইটি বর্তমানে ৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর তোফাজ্জল হোসেন টেনুর সহকর্মী হিসেবে পরিচয় দিলেও কাউন্সিলর তা অস্বীকার করে বলেন, সুইটি আমার লোক না। এক প্রশ্নের জবাবে কাউন্সিলর বলেন, আমি নবনির্বাচিত এলাকার কাউন্সিলর আমার কাছে অনেকেই আসে ‘ছবি তুলে’ তার মানে সেকি আমার লোক।
তিনি আরো বলেন, ভুক্তভোগী যদি আমার কাছে আসে তাহলে আমি তাকে আইনের মাধ্যমে সকল সহযোগিতা করবো। ত্রানের জন্য সুইটি কেন তাকে মারবে? এ খবর শুনে কাউন্সিলর নিজেও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
ভুক্তভোগী মুন্নী বলেন, আমি ন্যায় বিচারের আশায় কাউন্সিলর তোফাজ্জল হোসেন টেনুর দারপ্রান্তে গেলে টেনু ভাই সাফ সাফ বলেন মহিলাদের বিষয়ে আমি কিছু করতে পারবোনা”তোমরা মহিলা মহিলা বোঝ!
এবিষয়ে স্থানীয় একাধিক বাসিন্দারা বলেন,
সুইটি একবার নয়, বার বার এমন যঘন্যতম কাজ করেছে তাই তার শাস্তি কামনা করি। সে স্কুলের বাচ্চাদের পিটায়, রিকশাওয়ালাদের পিটায়, এলাকার মুরুব্বিদের অসন্মান করে, ত্রানের জন্য গর্ভবতী নারীকে পিটায়, তার সাজা হওয়া উচিৎ।
সুইটির এমন কর্মকাণ্ডে দুঃখ প্রকাশ করেছেন ঢাকা উত্তর ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মোঃ মকবুল হোসেন তালুকদারসহ রাজনৈতিক অঙ্গনের নেতাকর্মীরা।