রবিবার , ১২ জুন ২০২২ | ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন ও আদালত
  3. আওয়ামীলীগ
  4. আন্তর্জাতিক
  5. খেলাধুলা
  6. জাতীয়
  7. তথ্য-প্রযুক্তি
  8. ধর্ম
  9. বি এন পি
  10. বিনোদন
  11. বিশেষ সংবাদ
  12. রাজধানী
  13. লাইফস্টাইল
  14. শিক্ষা
  15. শিল্প ও সাহিত্য

রূপনগরে ভাসছে মাদক- প্রকাশ্যে চলে চাঁদাবাজি, ফোন কলে ইয়াবা ডেলিভারি

প্রতিবেদক
bangladesh ekattor
জুন ১২, ২০২২ ৪:০১ অপরাহ্ণ

কথিত মুক্তিযোদ্ধার পুত্র ও পুত্রবধূ মাদক ব্যবসায় জড়িত, সরকারি খাস জমি মালিকানা দাবি করে মামলা করার রয়েছে অভিযোগ রয়েছে ।

বাংলাদেশ একাত্তর.কম/নিজেস্ব প্রতিবেদক;

রূপনগর এলাকা ঘনবসতি ও নিম্ম-আয়ের মানুষের বসবাস হওয়ায় অপরাধ প্রবণতা বেড়েছে আগের তুলায় বহুগুন। অপরাধীরা রাজনৈতিক ক্ষমতার দাপট ও প্রশাসনের চোখে টিনের চশমা পড়িয়ে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি, মাদক বানিজ্য, রাষ্ট্রের সম্পদ গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানির অবৈধ সংযোগ দিয়ে মাসে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।

রূপনগর থানা পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে অপরাধ কর্মকাণ্ড করলেও ‌র‌্যাব-৪, সদস্যরা ঠিকই মাঝে মধ্যে অভিযান করে তাদের গ্রেফতার করে। এসব কথা বলছে, সাধারণ মানুষ।

পল্লবী থানায় বোমা বিস্ফোরণের আগে মিরপুর জোনে সকল অপরাধ কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে ছিলো পুলিশের। তবে বর্তমানে ডিএমপির রুপনগর থানাধীন এলাকায় মাদক ব্যবসায়ীরা নির্বিঘ্নে মাদক বানিজ্য করে চলেছে। এ মাদক সেবনে শতশত তরুণ-তরুণীর জীবন ধ্বংস হলেও দেখার কেউ। সড়কে চাঁদাবাজি দেখে মনে হবে রাষ্ট্রের বৈধতা পেয়ে জোরালো ভাবেই চাঁদাবাজি চলছে। দায়ীত্ব সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অপরাধ দমনকরা যাদের দায়ীত্ব তারাই যদি অপরাধীদের আশ্রয় প্রশ্রয় দেয় তবে অপরাধীরা অপরাধ কর্মকাণ্ড  নির্বিঘ্নে করবে এটাই স্বাভাবিক।

অভিযোগ রয়েছে, রুপনগর থানার কিছু অসৎ পুলিশ অফিসারের যোগসাজশে সোর্স আলামিন ও কাদের লাখ লাখ টাকার মাদক পাইকারি ও খুচরা বিক্রি করে আসছে। আলামিন ও কাদির মাদকের ডিলার হিসেবে পরিচিত । এই দু’জনের মাধ্যমে রূপনগর এলাকাসহ মিরপুরের বিভিন্ন স্থানে মাদকের গোপন বাজারে ইন্টারনেট ও মোবাইল ফোনের মাধ্যমে কার কত পিচ লাগবে ক্যাশ অন-ডেলিভারীতে মাদক পৌছে দিচ্ছে তারা। অভিযোগ রয়েছে স্কুটার যোগে মাদক বহন ও প্রতিদিন সড়কের দোকান থেকে চাঁদা তুলে কাদের। অবৈধ আয়ে কাদের বর্তমানে অঢেল সম্পত্তির মালিক ও নিজ এলাকায় শিল্পপতি হিসেবে পরিচিত।

সোর্স কাম মাদক ব্যবসায়ী আলামিনের বাবা তোফাজ্জল হোসেন কথিত মুক্তিযোদ্ধা। ছেলে পুলিশের সোর্স হওয়ার সুবাদে ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন জমি দখল অপরাধ কর্মকাণ্ডে মেতেছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। এলাকায় তাদের অপকর্মের বিরুদ্ধে কথা বলার কেউ নেই।

স্থানীয়দের অভিযোগ রয়েছে, সরকারী গেজেট ভুক্ত না হয়েও মুক্তিযোদ্ধা পরিচয়ে তোফাজ্জল হোসেন ধারণ মানুষকে বোকা বানিয়ে বিভিন্ন ফয়দা লুফে নেয়। আইনের মারপেঁচে ফেলে মুক্তিযোদ্ধার নাম ব্যবহার করে সরকারি বেসরকারি জমি দখল ও ভিন্ন জমির কাগজপত্র ব্যবহার করে জমি নিজ কব্জায় রাখে।  স্থানীয়রা বলেন তোফাজ্জল হোসেন যদি মুক্তিযোদ্ধা হয় তবে তাকে ঢাকা মহানগর উত্তর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ থেকে বহিষ্কার করলো কেন? তারা আরো বলেন, তোফাজ্জল হোসেন মুক্তিযোদ্ধার সঠিক মুল সদন দেখাতে ব্যর্থ হওয়ায়  সংসদ কমিটির পদ থেকেও বহিষ্কার হয়। এ প্রতিবেদকের কাছে এসেছে তোফাজ্জল হোসেনের সেই বহিষ্কারের একটি চিঠি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে তোফাজ্জল হোসেন বলেন, আমি ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা ‘না” আমি অরিজিনাল মুক্তিযোদ্ধা, আমি মুক্তিযোদ্ধার সকল সনদ ঠিকঠাক করতেছি। আমাকে কেউ ভুয়া বললে আমি মামলা করে দিবো।,  

জমির বিষয়ে বলেন, এই জমি দখল করিনি, আমি ক্রয় করেছি। আপনার নামে কাগজ আছে-কি?, এ প্রশ্নে তিনি বলেন, স্ট্যাম্পে লিখিত আছে এই জমি আমি ভোগ-দখলসহ চাইলে বিক্রি ও করতে পারবো। সেই স্ট্যাম্প আছে? জানতে চাইলে বলেন, হ্যাঁ-আছে, আমার ঘরে আসেন দেখাবো” ঘরে গেলে তিনি স্ট্যাম্প আর দেখাতে না পেরে মুক্তিযোদ্ধার বিভিন্ন কাগজপত্র দেখানো শুরু করেন। 

এ-প্রতিবেদকের কাছে কিছু অডিও এসেছে। অডিও-তে, আলামিন বলছে, মামা? ফোনের ওপাশ থেকে বলছে, এখন তো খাওন দরকার চার’টে-লাগবে। আলামিন বলছে, মামা আপনি যান-একা যান, আমি চাঁদনীরে ফোন দিয়ে কইয়া দিতাছি। ফোনের ওপাশ থেকে বলা হচ্ছে “শোন- ভালো-ডি দিতে কইছস, এক হাজার টাকার নোট দিতাছি, দুইশো টাকা ফেরত দিতে কইছস। আলামিন বলছে; ওর কাছে দুইশো টাকা আছে কিনা, আপনি দিইয়েন আমি আপনাকে দিবনি, আর আমি ওইখানে আইছি যেখানে ওই যে এগারো হাজার টাকার মারা খাইছি। ওপাশ থেকে বলছে, আচ্ছা ঠিক আছে কর তুই চাঁদনীরে কইয়া দে আমি যাইতাছি। এমন একটি অডিও রেকর্ড এ প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।

অন্যদিকে প্রকাশ্যে এক সাংবাদিক’কে হুমকি দিয়ে সোর্স কাদের বলে; আমি কাদির রুপনগর থানার চাঁদাবাজ, আপনি যত পারেন ভিডিও করেন, যত পত্রপত্রিকা আছে আমার বিরুদ্ধে লিখেন” আমি কাদির রুপনগর থানার সীল মারা চাঁদাবাজ। এমন একটি ভিডিও নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হলেও পুলিশ তার বিরুদ্ধে কোনো আইনি পদক্ষেপ এখন পর্যন্ত নেয়নি। কোন খুটির জোরে কাদির প্রশাসনকেও তোয়াক্কা করেনা। সেটা আপনারাই ভালো বলতে পারবেন।

অভিযোগ আছে, সোর্স কাদের রূপনগর আাবসিক এলাকা, দুয়ারিপাড়া বাজার, শিয়ালবাড়ী, ইস্টার্ন হাউজিং, ঝিলপাড় বস্তি এলাকাসহ ও থানা এলাকার সড়কের ফুটপাতের দোকান থেকে দৈনিক চাঁদা নেয়।ওই দোকান গুলোতে সাপ্তাহিক চাঁদা নির্ধারণ করা আছে। প্রায়ই দশ হাজার দোকান থেকে পুলিশের নামে কয়েক লাখ টাকা চাঁদাবাজি করে কাদির।

সুত্র-বলছে, পুলিশের সাথে কাদিরের অর্থ লেনদেন ও গভির সু-সম্পর্ক থাকার কারনে কাদের দিনে দিনে বেপরোয়া হয়ে উঠছে। চাঁদাবাজি ছাড়াও সব ধরনের অবৈধ ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে কাদের। এলাকায় নতুন যে-কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুললেই কাদিরকে চাঁদা দিতে হয় না সে দোকান করতে পারেনা।

ঢাকা মহানগর উত্তর ৭নং আওয়ামিলীগের সভাপতি আব্দুল হাই হারুন বলেন, এলাকায় সব ধরনের অপকর্ম বেড়ে গেছে। একজন মুক্তিযোদ্ধার বয়স দেশ স্বাধীনের আগে সতেরো-আঠারো হলেই সে মুক্তিযোদ্ধা’য় অংশ নিতো শুনেছি, কিন্ত বর্তমানে যার বয়স পঞ্চাশ বা বায়ান্ন সে কিভাবে মুক্তিযোদ্ধার পরিচয় দেয়-বুঝিনা!

তিনি আরও বলেন, রূপনগর আবাসিক এলাকার ২৬ নম্বর রোডের তোফাজ্জল হোসেন যদি মুক্তিযোদ্ধা হয় তাহলে তার বয়স কত। আমার বয়স তার চেয়েও বেশি আমি কি এখন মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দিবো? মুক্তিযোদ্ধার নামে সরকারী বেসরকারি জমি দখল করে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জমি নিয়েও ঝামেলা করে। তার বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছে স্থানীয় বাসিন্দা।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিরপুর বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) আ স ম মাহাতাব উদ্দিন বলেন, মাদক কারবারিদের সাথে পুলিশের কেউ জড়িত থাকার প্রমাণ পেলে সাথে সাথে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শুধু কাদের নয়, যারা চাঁদাবাজি করে তাদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেন, থানা ব্যবস্থা না নিলে এসি বরাবর অভিযোগ করেন, না হলে আমার কাছে অভিযোগ করেন। যদি আমি ব্যবস্থা না নেই তখন বলতে পারেন পুলিশ অপরাধীর সাথে জড়িত।

সর্বশেষ - সর্বশেষ সংবাদ