রাজু আহমেদঃ প্রকাশিত, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ইং
ঢাকা: রাজধানীর রূপনগরে একটি গার্মেন্টসের সামনে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সাবেক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ও চিহ্নিত শীর্ষ সন্ত্রাসী রাসেদ আলী রাজু ওরফ রাজু মাতবর জনতার হাতে আটক হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন গার্মেন্টসের এক স্টোরকিপার।
ঘটনার বিবরণ
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২ জানুয়ারি ২০২৫, সকাল ৯:৪২ মিনিটে রূপনগরের মিল্কভিটা মোড়ের রিও ফ্যাশন ওয়্যার লিঃ ও রিও ডিজাইন লিঃ গার্মেন্টসের সামনে মোটরসাইকেলে এসে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটান রাসেদ আলী রাজু ও তার সহযোগীরা। গ্রেপ্তারকৃত রাজু (৪০) গার্মেন্টসের প্রবেশদ্বারে ককটেল নিক্ষেপ করেন, যা স্টোরকিপারের পায়ের কাছে বিস্ফোরিত হয়। এতে স্টোরকিপারের ডান পায়ের গোড়ালি ঝলসে যায়।
বিস্ফোরণের বিকট শব্দে স্থানীয়রা ছুটে এলে দুর্বৃত্তরা পালানোর চেষ্টা করে। তবে উপস্থিত জনতা রাজুকে ধরে ফেলে এবং পুলিশে সোপর্দ করে।
রাজু মাতবরের পরিচয় ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড
স্থানীয়রা জানান, রাজু মাতবর রূপনগর থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক, স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোবাশ্বের চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ সহযোগী। এছাড়াও ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর তোফাজ্জল হোসেন টেনুর ডান হাত।

৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর তোফাজ্জল হোসেন টেনুর পাশে: শীর্ষ সন্ত্রাসী রাজু মাতবর:
তিনি চাঁদাবাজি, দখলদারি, সড়ক ও ফুটপাত নিয়ন্ত্রণ, মাদক সিন্ডিকেট পরিচালনাসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, রাজু মাতবর ও তার ভাই সাজু মাতবরের নেতৃত্বে প্রায় ২০০ সদস্যের সন্ত্রাসী ও কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণ করা হতো। তারা রূপনগরের শিয়ালবাড়ী এলাকাকে আতঙ্কের কেন্দ্রে পরিণত করেন। রাজু মাতবর ঢাকা-১৬ আসনের সংসদ সদস্য ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লা এবং ঢাকা-১৪ আসনের সংসদ সদস্য মাঈনুল ইসলাম খান নিখিলের ঘনিষ্ঠ অনুসারী।
পুলিশি তদন্ত ও পরবর্তী পদক্ষেপ
রূপনগর থানার তদন্ত কর্মকর্তারা জানান, এই হামলার পেছনে আরও কয়েকজন পলাতক আসামির সংশ্লিষ্টতার তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে।
পুলিশ জানায়, রাজুকে জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে, যা সন্ত্রাসী চক্র নির্মূলে সহায়ক হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, যেকোনো সন্দেহজনক কার্যকলাপ বা ব্যক্তির গতিবিধি দ্রুত প্রশাসনকে জানাতে হবে।
মামলা ও আইনি প্রক্রিয়া
এ ঘটনায় রূপনগর থানায় Explosive Substances Act, 1908-এর ৩/৪ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ ইতোমধ্যে আদালতে গ্রেপ্তার প্রতিবেদন দাখিল করেছে এবং মামলার তদন্ত চলমান রয়েছে।
সতর্কবার্তা
রাজু মাতবরের গ্রেপ্তারের পর এলাকাবাসী স্বস্তি প্রকাশ করলেও, তারা দ্রুত বিচার ও কিশোর গ্যাং নির্মূলের দাবি জানিয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সাধারণ জনগণকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেছে, অপরাধীদের সম্পর্কে তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহায়তা করুন, অপরাধ নির্মূল হোক।


















