বৃহস্পতিবার , ৮ অক্টোবর ২০২০ | ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
  1. অপরাধ
  2. অর্থনীতি
  3. আইন ও আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. খেলাধুলা
  6. জাতীয়
  7. তথ্য-প্রযুক্তি
  8. ধর্ম
  9. বিনোদন
  10. বিশেষ সংবাদ
  11. রাজধানী
  12. রাজনীতি
  13. লাইফস্টাইল
  14. শিক্ষা
  15. শিল্প ও সাহিত্য

রাজনৈতিক ক্ষমতার দাপটেই লতিফের যত অপকর্ম

প্রতিবেদক
bangladesh ekattor
অক্টোবর ৮, ২০২০ ৬:৫৩ অপরাহ্ণ

বাংলাদেশ একাত্তর.কম / নিজেস্ব প্রতিবেদক: সাদ্দাম হোসেন মুন্না:

মিরপুর দুয়ারীপাড়া এলাকাজুড়ে গড়ে উঠেছে লতিফ মোল্লার একক লুটপাট সাম্রাজ্য। লতিফ মোল্লা রাজনৈতিক দলীয় ক্ষমতাকে পুজি করে যত অপকর্ম করে অল্পদিনেই অঢেল সম্পত্তির মালিক বনে গেছেন।

সরকারি গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি, ফুটপাত, বাজার, খাসজমি, খাল সবই দখলে রয়েছে ভংয়ঙ্কর এই নব্য আওয়ামীলীগ সদস্য লতিফ মোল্লার দখলে। সারারাত মদের নেশায় বুদ হয়ে প্রতিরাতেই এলাকায় বসবাসরত মানুুষজনকে মারধর করা তার নিত্যদিনের কার্যক্রমের একটা অংশ। তার কথার বাইরে কেউ গেলে তাকে পুলিশি নির্যাতন ও ক্যাডার বাহিনী দ্বারা নির্যাতন নতুন নয়। তার এই নির্যাতনের তালিকায় সাধারণ জনগণ আওলাদ থেকে শুরু করে স্বনামধন্য নেতা শাহজাহান কেউই বাদ পড়েনি।

দুয়ারীপাড়া এলাকায় নতুন রাস্তা নির্মাণের আগের রাতেই তিতাস গ্যাস কোম্পানির কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের রাতভর বসিয়ে রেখে অবৈধ্যভাবে দুই ইঞ্চির মোটা পাইপ দিয়ে গ্যাসের লাইন টেনে প্রায় সাত হাজার ঘরে সংযোগ প্রদান করেন এই ক্ষমতাধর নেতা। সে সময় প্রতিটি ঘর থেকে সংযোগ বাবদ এককালীন ৫০-৯০ হাজার টাকা এবং মাসিক বিল বাবদ এক হাজার টাকা চুক্তি করে সংযোগ দেন এই কথিত আওয়ামী সদস্য। পুরো এলাকায় সেসময় মাইকিং করে জানানো হয় গ্যাস সংযোগ নেবার সাথে বাড়ি বাড়ি যেয়ে হুমকিও প্রাদান করে লতিফ মোল্লার বাহিনী বাধ্য করা হয় সংযোগ নিতে। ওই সাত হাজার অবৈধ্য সংযোগ থেকে লতিফ মোল্লার আয় মাসে প্রায় সত্তর লক্ষ টাকা। বর্তমানে ওই এলাকায় প্রকৃত মালিকদের প্লট বুঝিয়ে দিলে লতিফ মোল্লা নজর দেন খালের দিকে। দুয়ারীপাড়ার পিছনের এলাকাজুড়ে রয়েছে বিশাল খাল সেই খালই প্লট আকারে বিক্রি করে কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য করেছেন তার পুরো বাহিনী নিয়ে। হাই মোল্লা ও ময়লা কামালসহ বেশ কিছু এজেন্ট নিয়োগ করে রাতারাতি খাল দখল করে তা প্লট আকারে বিক্রি শুরু করেন। একেকটি প্লট ১ থেকে তিন লক্ষ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে বলে জানা যায়।

খালি বিক্রিই নয় নিজেই প্রায় শ’দুয়েক রুম বানিয়ে ভাড়া দিয়ে রেখেছেন। প্লটে বাড়ি-ঘর উঠলেই সেখানে লতিফ মোল্লার এজেন্টদের কাছ থেকে অবৈধ্য গ্যাস, বিদুৎ, পানির সংযোগ নিতে বাধ্য করা হয়। দুয়ারীপাড়ার বিশাল মূল সড়ক দখল করে তিনি পনেরশো দোকান বসিয়ে এলাকাবাসীকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন। সে সময় অসহায় হতদরিদ্র ও বেকার যুবকদের জন্য বেশখানিকটা ছাড়ও দিয়েছিলেন ওই ফুটপাথ বাজারে। সাধারণ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ফুটপাথে দোকান বসানোর অগ্রিম টাকা হিসেবে ৩০-৫০ হাজার টাকা নিলেও অসহায় বেকার যুবকেরা ব্যবসা করতে চাইলে তাদের জন্য দোকান বসানোর অগ্রিম চাঁদা মাত্র বিশ হাজার টাকা ধার্য করেছিলেন তিনি। আর প্রতিদিনের চাঁদা হিসেবে প্রতিটি দোকান থেকে চাঁদা তোলা হতো ৭০-১০০ টাকা করে। সেখান থেকেও লতিফ মোল্লার মাসিক আয় হতো ছত্রিশ লক্ষ টাকা। ফুটপাথের দোকানদারদের কষ্টের কথা বিবেচনা করে তিনি ডেসকো এর কিছু ঘুষখোর কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে অবৈধ্যভাবে বিদ্যুৎ সংযোগও নিয়ে দিয়েছিলেন দোকানে বাসা বাড়িতে সেখান থেকেও তার মাসিক আয় প্রায় কয়েক লক্ষ টাকা। লতিফ মোল্লার ফুটপাথ বাণিজ্য প্রসাশনের উপর মহলের নজরে এলে ভেঙ্গে দেওয়া হয় লতিফ মোল্লার স্বঘোষিত বাজার। বাজারটি আবার নতুন করে বসাতে স্থানীয় কাউন্সিলরসহ বিভিন্ন জায়গায় তদবির বাণিজ্য চালাচ্ছেন বলেও জানা গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসীরা বলেন, শুধুমাত্র স্থানীয় এমপির নাম বিক্রি ও থানায় মোটা অংকের মাসোহারা দিয়েই তিনি এসব অর্পকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন। লতিফ মোল্লার গ্যাসের টাকা তোলার কাজে নিয়জিত আছে বেশ কয়েকজন তাদেও মাঝে বাদশা আর ফাহিমকে প্রধান করে নিজে আড়ালে থাকেন। আনবিক ১ নং গেটের সামনে লতিফ নিজে আওয়ামীলীগের কার্যালয়ে খুলে তার পিছনে ঝিল ভরাট করে রুম বানিয়ে ভাড়া শতশত অবৈধ অটোরিকশা চার্জ দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে এখান থেকেও মাসে লাখ লাখ টাকা অবৈধভাবে আয় করছেন। আনবিক এলাকার গ্যাসের টাকা তোলেন রিয়াজের মাধ্যমে। তার দেওয়া বিদুৎ সংযোগের টাকা তোলার কাজে আছে সজীব নামের একজন। লতিফ মোল্লা ও তার ছেলের মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রকও সেই সজীব।

জানা যায়, আওয়ামীলীগে যোগদানের পূর্বে তিনি ও তার ছেলে রানা বিএনপি এর সক্রিয় সদস্য ছিলেন। এলাকায় রিক্সা চোর লতিফ ভাওয়াল নামেও তিনি বেশ পরিচিত। সাবেক যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাই মোল্লা গত বছর লতিফ মোল্লাকে বেশ মোটা টাকা দিয়ে যোগ দেন আওয়ামীলীগে বলেও জানান এলাকাবাসী। শুধু হাই মোল্লাই নয় বিএনপি এর অনেক সদস্যই আওয়ামীলীগের ছায়ায় আসতে পেরেছে লতিফ মোল্লার হাত ধরে। এখন সেই হাই মোল্লাই লতিফ মোল্লার ডান হাত খ্যাত হিসাবে এলাকায় পরিচিতি লাভ করেছেন।

জানা যায়, সারাদিন লতিফ মোল্লার পাশে থেকে হাই মোল্লা এলাকায় ব্যাপক তােসের সৃষ্টি করছেন, বিচার শালিস করেও মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেন বলেও এলাকাবাসী অভিযোগ করেন। জানা যায়, লতিফ মোল্লার মাদক ব্যবসায়ী ছেলে রানাও এক সময় ছাত্রদলের প্রভাবশালী ক্যাডার ছিল। যদিও এখন সেই রানা বঙ্গবন্ধুর আর্দশের সৈনিক তার বাবার সুবাধে। রানা এলাকার মাদকের গড ফাদার হিসেবে পরিচিত থাকলেও বাবার ক্ষমতার প্রভাবে তার বাসায় কোন পুলিশ সদস্য প্রবেশ করেনা। গত সংসদ নির্বাচনে স্থানীয় মোল্লাহ এমপির মিছিল মিটিং করেই লতিফ মোল্লা পেয়ে যান আওয়ামীলীগের সদস্য পদ। আর সদস্য পদ পেয়েই তিনি হয়ে উঠেন আরো বেপরোয়া। তার আঙ্গুলের ইশারায় নাচাতে থাকেন স্থানীয় থানা ও এমপিকে। এসব অভিযোগের বিষয়ে লতিফ মোল্লার কাছে জানার জন্য তার কাছে গেলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

এলাকাবাসী ও প্রবীন রাজনৈতিক ব্যক্তিরা বলেন যদি অচিরেই লতিফ মোল্লার লাগাম টেনে ধরা না যায় তবে আওয়মীলীগের সুনাম ভীষনভাবে ক্ষুন্ন হবে। মাত্র একযুগ আগের একজন চোরাই রিক্সা ব্যবসায়ী হঠাৎ কোটিপতি হওয়ায় এলাকায় অনেকেই তার মতো হবার চেষ্টারত রয়েছে ফলে প্রতিনিয়ত সেখানে বিভিন্ন গ্রুপে ছোটখাটো সংঘর্ষ বেধেই চলেছে। উঠতি বয়সী কিশোর এলাকায় ময়লা কামাল নামে সর্বাধিক পরিচিত অসহায় কামালও নিজের ভবিষ্যৎ গড়ে নিয়েছেন লতিফ মোল্লার সাথে থাকার সুবাধে। লতিফ মোল্লার সান্নিধ্য পেতে কামালের মতো উঠতি কিশোর গ্যাং এর বড় একটা গ্রুপ এখন নিয়মিত লতিফ মোল্লার ডানে বাঁয়ে চলাফেরা করছে।

এবিষয়ে লতিফ মোল্লা বলেন, আমি কোনো ধরনের দখল বানিজ্য ও চাঁদাবাজির সাথে জড়িত নয়, আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দেয়। এই এলাকায় যারা থাকে তারা বেশির ভাগ গরিব অসহায় তাদের ভালোমন্দ দেখি তাই অনেকের গা জ্বলে। আমি বহু বছর আগে  বিদেশ করেছি মাসে ১০ হাজার টাকা বেতন পেতাম সেই টাকা জমিয়ে এই থাকার জন্য বাড়ী করেছি।

সর্বশেষ - রাজনীতি

আপনার জন্য নির্বাচিত