ড. ইউনূস-তারেক বৈঠক ইতিবাচক, তবে বিচার-সংস্কার উপেক্ষিত-জাতীয় স্বার্থে ‘জুলাই সনদ’ চাই এখনই
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২০ জুন ২০২৫
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে সাম্প্রতিক বৈঠক নিয়ে রাজনৈতিক মহলে আলোচনা যখন তুঙ্গে, ঠিক তখনই ছাত্রজনতার অন্যতম সংগঠক ও গণ-আন্দোলনের পরিচিত মুখ হাসানাত আব্দুল্লাহ ফেসবুকে দিয়েছেন একটি তীক্ষ্ণ বার্তা।
ফেসবুক পোস্টে তিনি এই বৈঠককে ‘জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার এক ইতিবাচক প্রয়াস’ বলে স্বাগত জানালেও, একই সঙ্গে নির্বাচনকেন্দ্রিক আলোচনায় বিচার ও কাঠামোগত সংস্কার উপেক্ষিত থাকায় গভীর হতাশা ও সতর্কতা প্রকাশ করেছেন।
হাসানাত লিখেছেন,
“এই সরকার কেবল নির্বাচন দেওয়ার জন্য গঠিত কোনো ‘তত্ত্বাবধায়ক’ কাঠামো নয়, এটি একটি অভ্যুত্থান-পরবর্তী সরকার, দেশের মানুষ ও শহীদের রক্তের বিনিময়ে আসা কাঠামো। ফলে এ সরকার জনগণের আকাঙ্ক্ষার কাছে দায়বদ্ধ।”
তিনি বলেন, নির্বাচনের তারিখ বা মাস নিয়ে আলোচনা যথেষ্ট গুরুত্ব পেলেও বিচার, জবাবদিহিতা, এবং কাঠামোগত সংস্কার, যা অভ্যুত্থানের নৈতিক ভিত্তি—তা অগ্রাধিকার পায়নি।
‘জুলাই সনদ’ ছাড়া নয় কোনো নির্বাচন আলোচনা
হাসানাতের মতে, “নির্বাচনের আগে ‘জুলাই ঘোষণা’ ও ‘জুলাই সনদ’—এই দুইটি হলো জাতির কাছে সরকারের দায়বদ্ধতার লিখিত দলিল।”
তিনি স্পষ্ট করেন, নির্বাচন হোক ফেব্রুয়ারিতে বা এপ্রিলে, তাতে কিছু যায় আসে না-“প্রধান শর্ত হলো দৃশ্যমান বিচার ও মৌলিক সংস্কার হচ্ছে কি না।”
তিনি আরও বলেন,
“জুলাই সনদের আগে নির্বাচন নিয়ে তারিখ-চক্রে কথা বলা অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ববোধ ভুলে যাওয়ার নামান্তর।”
চাঁদাবাজি-প্রশাসনিক পক্ষপাত-নির্বাচনের পথে বাধা
পোস্টে স্থানীয় পর্যায়ে অব্যাহত চাঁদাবাজি, প্রশাসনের ওপর দলীয় প্রভাব, পেশিশক্তির প্রকাশ্য দাপটের কথাও উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন-“এই অবস্থায় নির্বাচনের পূর্বশর্ত হিসেবে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো একটি ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নিশ্চিত করা।”
‘আমি কথা বলছি কারণ আমরা লড়েছি’
গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী ছাত্রসংগঠনের একজন হিসাবে হাসানাত মনে করেন, “এই সরকার মানুষের আত্মত্যাগ ও রক্তের প্রতীক। সুতরাং তারা যদি বিচার, সংস্কার ও দায়বদ্ধতার প্রশ্নে নিরব থাকে, তাহলে আমরা যারা রাজপথে ছিলাম, তাদের দায়িত্ব হয়ে দাঁড়ায় স্মরণ করিয়ে দেওয়া।”
ফেসবুকে দেওয়া এই পোস্টটি গত ৬ দিন আগে প্রকাশের পর থেকে রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা তৈরি করেছে।