আইনি প্রক্রিয়া উপেক্ষা করে থানায় লুকিয়ে রাখার অভিযোগ, রাজনৈতিক প্রভাব ও গোপন সমঝোতার গুঞ্জন
রাজু আহমেদ:ঢাকা, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
রাজধানীর পল্লবী থানা পুলিশ ছাত্রজনতা হত্যা মামলার আসামি ও যুবলীগ কর্মী মাহামুদ আলমকে গ্রেপ্তার করেছে। কিন্তু গ্রেপ্তারের পর তাকে আদালতে না পাঠিয়ে থানার হাজতে আটকে রাখায় তীব্র বিতর্ক দেখা দিয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে পল্লবী এলাকা থেকে মাহামুদ আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে হত্যা সহ একাধিক মামলা থাকার পরও ১৯ সেপ্টেম্বর সকাল পর্যন্ত আদালতে প্রেরণ করা হয়নি। বরং তাকে থানার লকাপে রাখা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল বলেন, “মাহামুদ আলমকে আমরা আটক করেছি। তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা রয়েছে। কোর্টে পাঠানো হবে। যেহেতু মামলা মিরপুর মডেল থানায়, তাই সেখানে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।”
কিন্তু মিরপুর মডেল থানার ওসি সাংবাদিকদের জানান, “আমি এ বিষয়ে অবগত নই। যদি পল্লবী থানা বলে থাকে, তাহলে খোঁজ নিয়ে জানাতে পারবো।”
সচেতন নাগরিকদের প্রশ্ন
স্থানীয় সচেতন নাগরিকরা বলছেন, ডিজিটাল যুগে কোনো অপরাধ সনাক্ত বা প্রক্রিয়াকরণে ২৪ ঘণ্টা লাগে না। পল্লবী থানার পাশেই মিরপুর মডেল থানা, সেখানে পাঠাতে বা অবহিত করতে যদি দুই দিন লেগে যায়, তবে প্রশাসন কতটা পিছিয়ে আছে—এ নিয়ে গভীর প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, “এখানে কিছু একটা চলছে যা খালি চোখে দেখা যাচ্ছে না, বুঝতে হলে গোয়েন্দা চোখের দরকার।”
রাজনৈতিক টানাপোড়েনের অভিযোগ
স্থানীয় সূত্রে আরও জানা গেছে, মুসলিমবাজার এলাকায় প্রভাবশালী বিএনপি নেতার প্রভাবও এখানে কাজ করছে বলে গুঞ্জন রয়েছে। কথিত আছে, তিনি আসামিকে ছাড়ানোর জন্য বিপুল অঙ্কের টাকা নিয়ে ছুটোছুটি করছেন। তবে এ বিষয়ে কোনো শক্ত প্রমাণ মেলেনি। তবুও প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে—১৯ সেপ্টেম্বর রাত ১১টা পর্যন্ত কেন মিরপুর মডেল থানা জানতেও পারেনি যে তাদের মামলার আসামি পল্লবী থানার হাজতে আটক রয়েছে?
আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে বিলম্ব না করে আদালতে হাজির করা বাধ্যতামূলক। এ নিয়ম ভঙ্গের ঘটনা প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের জবাবদিহি করতে হবে।