আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়ায় সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ নেই—জনগণের অভিমত
রাজু আহমেদ | প্রকাশ: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
দেশের বিভিন্ন জেলায় পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালনে যেতে পারলেও রাজনৈতিক নেতাদের আশীর্বাদ ছাড়া তারা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বশীল চেয়ারে বসতে পারছেন না।
মন্ত্রণালয় থেকে আদেশ জারির পরেও যদি কোনো কর্মকর্তা স্থানীয় পাতি নেতাদের পছন্দসই না হন, তাহলে তাকে ঘিরে শুরু হয় ট্যাগ লাগানো, মানববন্ধন, মিছিল-মিটিংসহ নানা প্রতিবাদ কর্মসূচি।
সাধারণ মানুষ বলছেন, দেশের আইনশৃঙ্খলার এই বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন সম্ভব নয়। যদি রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ কমানো না যায় এবং আইনশৃঙ্খলা শক্ত হাতে পরিচালিত না হয়, তাহলে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে জনগণের আস্থা ফেরানো যাবে না।
প্রশাসনিক চেইন অব কমান্ড ভেঙে পড়েছে
জেলা ও থানা পর্যায়ে সরকারি কর্মকর্তাদের অদলবদলে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে প্রশাসনিক চেইন অব কমান্ড কার্যত ভেঙে পড়েছে। এর ফলে সারা দেশে অস্থিতিশীলতা দেখা দিয়েছে, প্রশাসনের ভেতর নেই কোনো স্বস্তি।
জেলা, উপজেলা, থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের রাজনৈতিক নেতাদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে স্থানীয় থানা পুলিশ কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারছে না। সামান্য ঘটনা ঘটলেই রাজনৈতিক নেতারা দলবাজি করে মব তৈরি করছে। ফলে বিভিন্ন ইউনিয়ন, পৌরসভা ও ওয়ার্ডে সেবাদানকারী কর্মকর্তাদের কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। নাগরিকরা মৌলিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে অসুবিধায় জড়াচ্ছেন।
এ সুযোগে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, দখল, গুলিবর্ষণ ও খুনের মতো অপরাধ বেড়ে গেছে।
চুয়াডাঙ্গায় নতুন পুলিশ সুপারকে ঘিরে মিথ্যা প্রচারণা
ইতিমধ্যে সদ্য যোগদানকৃত চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক মহলের অসৎ উদ্দেশ্য সফল না হওয়ায় বিভিন্ন মিথ্যা প্রপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে। মিথ্যা অভিযোগ তুলে মব তৈরি করে ওই পুলিশ সুপারকে ঘিরে বিভ্রান্তি তৈরির চেষ্টা চলছে।
সাধারণ মানুষ বলছেন, “যেসব পুলিশ কর্মকর্তা দায়িত্বশীলভাবে কাজ করেন, তারা যদি রাজনৈতিক দলের ব্যানার ব্যবহারকারী অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগ করেন, তখনই তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু হয়।”
ক্ষমতা পেয়ে পাতি নেতাদের দৌরাত্ম্য
আওয়ামী লীগ আমলে যারা পাতি নেতা ও অপরাধী হয়ে লুকিয়ে ছিল, ৫ আগস্টের পর সুযোগ পেয়ে তারা প্রকাশ্যে সক্রিয় হয়েছে। এখন যার-তার বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রপাগান্ডা ছড়িয়ে অনৈতিক সুবিধা গ্রহণ করছে।
জনগণের মতে, দেশে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন কেবল তখনই সম্ভব, যখন আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হবে এবং প্রশাসনকে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ থেকে মুক্ত রাখা যাবে। অন্যথায় এ দেশে মানুষ কখনোই নিরাপত্তা পাবে না।