নিজস্ব প্রতিবেদক|প্রকাশ, ১৭ এপ্রিল ২০২৫
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান ফু-ওয়াং ফুডসের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ আহমেদ চৌধুরী এবং তার দুই কন্যার বিরুদ্ধে ৭০ কোটি ৮৪ লাখ ৭৭ হাজার ৪৩৮ টাকার হিসাব গড়মিলের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলাটি দায়ের করেছেন জাপানি বিনিয়োগকারী ও ফু-ওয়াং ফুডসের বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিয়া মামুন। গত ১৬ এপ্রিল ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে এ মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।
মামলার এজহারে অভিযোগ করা হয়েছে, ২০২২ সালের জানুয়ারী মাসে জাপান-বাংলাদেশ জয়েন্ট ভেঞ্চার প্রতিষ্ঠান মিনোরি বাংলাদেশ বিএসইসির মধ্যস্থতায় একটি পারচেজ এগ্রিমেন্টের মাধ্যমে ফু-ওয়াং ফুডসের ৮৪ লাখ ৪২ হাজার ৭২৬ স্পন্সর শেয়ার আরিফ আহমেদ চৌধুরী এবং তার দুই কন্যার কাছ থেকে ক্রয় করে। এর পর মিনোরি বাংলাদেশের পক্ষে ফু-ওয়াং ফুডসের পরিচালনা পর্ষদে তিনজন নতুন পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয়।
শেয়ার ক্রয়ের চুক্তির ৪ এর দুই ধারা অনুযায়ী, সাবেক তিন পরিচালককে সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিষ্ঠানের দায়দেনার হিসাব ও তা পরিশোধ করতে বলা হয়েছিল। চুক্তির ৪ এর ৩ ধারা অনুযায়ী, এ দায়দেনা কোনোভাবেই মিনোরি বাংলাদেশের উপর বর্তাবে না। অথচ দুই বছর অতিক্রান্ত হলেও তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও তার দুই মেয়ে চুক্তির শর্ত মেনে চলেননি।
এ বিষয়ে ব্যাখ্যা জানতে ২৫ সালের ৯ জানুয়ারি তাদের নামে একটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়, কিন্তু সেই নোটিশের কোনো আইনি জবাব তারা দেননি। এর পর ১৬ এপ্রিল আদালতে মামলা দায়ের করা হয়। মামলাটির নং ১৬৩/২০২৫।
মামলায় মিনোরির পক্ষে বলা হয়েছে, শেয়ার বিক্রির চুক্তি অনুযায়ী আরিফ আহমেদ চৌধুরী ও তার দুই মেয়ে ফু-ওয়াং ফুডস কোম্পানির ৭০ কোটি টাকার ভ্যাট ও ট্যাক্সের হিসাব গোপন করেছেন এবং শর্ত অনুযায়ী সকল পক্ষকে এর হিসাব দেননি। মিনোরি বাংলাদেশের আইনজীবী মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন জানান, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালকের আমলে কোম্পানির প্রায় ৭০ কোটি টাকার ভ্যাট ও ট্যাক্স তথ্য গোপন রাখা হয়েছে, এবং শেয়ার বিক্রির পর খরচের হিসাবও জানানো হয়নি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ফু-ওয়াং ফুডসের বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিয়া মামুন বলেন, “শেয়ার ক্রয়ের চুক্তির অনুযায়ী আরিফ আহমেদ চৌধুরী কোম্পানির ৭০ কোটি টাকার হিসাব আমাদের কাছে গোপন করেছেন। লিগ্যাল নোটিশ পাঠানোর পরও তিনি কোনো জবাব দেননি, তাই বাধ্য হয়ে আদালতের আশ্রয় নিয়েছি। এত বিপুল পরিমাণ অর্থের গড়মিলের কারণে বর্তমানে কোম্পানির উৎপাদন চালাতেও ব্যাপক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি।”
জানা গেছে, আরিফ আহমেদ চৌধুরী ও তার দুই কন্যা বর্তমানে কানাডায় অবস্থান করছেন। তিনি ঢাকা ১৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রার্থী ছিলেন। এ বিষয়ে জানতে বারবার ফোন করা হলেও তিনি কোনো প্রকার উত্তর দেননি।
