বৃহস্পতিবার , ১৬ মে ২০১৯ | ১৯শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন ও আদালত
  3. আওয়ামীলীগ
  4. আন্তর্জাতিক
  5. খেলাধুলা
  6. জাতীয়
  7. তথ্য-প্রযুক্তি
  8. ধর্ম
  9. বি এন পি
  10. বিনোদন
  11. বিশেষ সংবাদ
  12. রাজধানী
  13. লাইফস্টাইল
  14. শিক্ষা
  15. শিল্প ও সাহিত্য

পল্লবীতে ঠান্ডা মাথায় দিন-দুপুরে খুন!

প্রতিবেদক
bangladesh ekattor
মে ১৬, ২০১৯ ৭:১১ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশ একাত্তর (মাসুম বিল্লাল সোলায়মান)

মানুষ” দিনে দিনে হিংস্র দানবে পরিনত হচ্ছে দেশের প্রায় স্থানেই খবর পাওয়া যায় ”খুন”ধর্ষণ”হত্যার মত ঘটনা ক্রমেই বেড়েই চলছে এর সমাধান কি?  ঠান্ডা মাথায় দিন দুপুরে খুন করে পালিয়ে যায় খুনি!     

মতিয়ার শোবার ঘরে খুন, রক্তাক্ত অবস্থায় পরে আছে।

রাজধানীর পল্লবী থানাধীন এলাকার বাউনিয়াবাধে ত্রিশউর্ধের বয়সের মতিয়া বেগম নামের এক মহিলার লাশ উদ্ধার করেছে পল্লবীথানা পুলিশ । এলাকা সুত্রেঃ জানা যায় যে, মাতুলের সম্পত্তি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ভাই বোনের মধ্য বিরোধ চলে আসছিলো। জানা যায়,  মঙ্গলবার তার স্বামী হাসান বাসায় আসে রাতে তাদের সাথে কোন এক বিষয় নিয়ে ঝগড়াঝাটি হয়। বুধবার দুপুরে আবার ঝগড়া হয় দুজনের মধ্য। পরে বিকাল পনে ৩টার সময় তাদের (১৩ মাসের শিশু  সন্তান ছেলে) মহন ঘরের বাইরে কান্নাকাটি করতে দেখে, প্রতিবেশিরা মহনকে কোলে করে তাদের বাসায় দিতে গেলে, দেখেন মতিয়া শুয়ে আসে খালি গায়ে রক্তাক্ত অবস্থায়।মতিয়ার মাথার নিচে কপাল ও চোখের কোনে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। ধারনা করা হচ্ছে তাকে ভালোবাসার স্পর্শকাতর সময় তাকে কিছু বোঝে উঠার আগেই দেশীয় ধারালো  অস্ত্র দিয়ে আঘাত করলে সে রক্তক্ষরনে শোবার ঘরেই মারা যায়।খুন করে ঠান্ডা মাথায় পালিয়ে যায় খুনি। এলাকাবাসির দাবী স্বামী হাসান তার স্ত্রী মতিয়াকে খুন করে পালিয়েছে। স্থানীয়রা, মতিয়ার খুনের সুষ্ঠু তদন্ত করে যারা এই খুনের সাথে জড়িত তাদের ফাঁসির দাবী জানান। হাসানের সাথে বিয়ের পর তাদের দাম্পত্য  জীবনে ১৩ মাস বয়সের এক মহন নামের ছেলে সন্তান রয়েছে। হাসান মতিয়া বেগমের দ্বিতীয় স্বামী  হাসানেরও আগের পক্ষের স্ত্রী ও সন্তান রয়েছে। ঘটনার পর থেকে হাসান পলাতক।পরে স্থানীয় বাসিন্দারা, পল্লবী থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে লাশ নিয়ে যায়।

এবিষয়ে  স্থানীয় বাসিন্দা আমির হোসেন মোল্লা  বলেন, মতিয়া ও তার মা, মর্জিনা বেগম এ বাড়ীতে থাকতো কোন দিন এলাকার কারো সাথে ঝগড়া বিবাদ করেনি সে। এই বাড়ীটি মতিয়ার মায়ের নামে কিন্তু মর্জিনা বেগম মারা যাওয়ার পর থেকেই  নয়ন বাড়ীর মালিক দাবী করে আসছে এ সব নিয়েই যত ঝামেলা।

স্বামী- মোঃ হাসান ৩/৪ মাস পরপর  আসতো দুই একদিন থেকে চলে যেত। নারায়ণগজ্ঞে তার আরেকজন  স্ত্রী ও সন্তান রয়েছে সে- সেখানে একটি বেসরকারী তোয়ালে ফ্যাক্টরীতে চাকরী করে।

 ঘটনাটি ঘটে – বাসা-নং-১১, রোড-নং-১২, ব্লক-ডি, বাউনিয়াবাঁধ, মিরপুর-১১, পল্লবী।

জানা যায়, ঢাকা-১৬ আসনের (এমপি) আলহাজ ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লার আওয়ামীলীগের বহু প্রোগ্রামেও মতিয়া বেগম অংশ নিয়েছেন।

অন্যদিকে স্থানীয়দের বরাদ দিয়ে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য- যে উক্ত বাউনিয়াবাধের বাড়ীটি মতিয়ার “মা” মৃত মর্জিনা বেগমের নামে কেনা ওই বাড়ীর মালিকানা একক ভাবে দাবী করে আসছে মতিয়া বেগমের আপন ভাই নয়ন (৪৮)। মা বেঁচে থাকতে দাবী না করলেও মায়ের মৃত্যুর পর এই বাড়ী দখল নিয়েও বহু ধস্তাধস্তির ঘটনাও ঘটেছে। গত মাসেও ভাই নয়ন তার আপন বোনকে বাড়ী থেকে উচ্ছেদ করার জন্যেও থানা হতে পুলিশ নিয়েও বেশ পায়তারা করছে বলে জানান তারা। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, এই বাড়ীর জন্যেই অকালে মরতে হলো মতিয়াকে।

তারা আরও বলে,ভা্ই নয়নের স্ত্রীর সাথে মতিয়ার স্বামী হাসান (৩৩) এর গোপন সম্পর্ক  রয়েছে এবং তারা মোবা্ইলে যোগাযোগ করিত।মতিয়া ও তার মা এই বাড়ীতেই বসবাস করত। মা অসুস্থ হলে সেবা যন্ত চিকিৎসা, রাত দিন যাপন করে  হাসপাতালের বারান্দায়  মতিয়া  থাকত। হঠাৎ একদিন ”মা না”ফেরার দেশে পাড়ি জমান। মৃত্যুর পর শোনা যায় মায়ের কেনা বাড়ীটি ভাই নয়নের নামে, সেই থেকেই  বিরোধ চলছিলো।সে কারণে আজ মতিয়া বেগমকে বিস্বাসী ঘাগকদের হাতে নির্মম ভাবে মরতে হলো।তারা আরও বলেন, স্বামী থাকতেও মতিয়া ছিলো অসহায় শিশু সন্তানের মুখে খাবারটাও ঠিক মত দিতে পারতোনা, কোন কোন সময় অনাহারে থাকতো সে। প্রতিবেশিরা মাঝে মধ্যেই খাবার দিত তাকে। প্রতিবেশি মামুনের মা বলেন, মতিয়া খুব কষ্ট করে জীবন যাপন করতো, শিশু ছেলের জন্য কোথাও কাজে যেতে পারতো না। কোন দিন দেখেনি তার ভাই গুলা একটু খোজ খবর নিতে,, যে সময় ভাই নয়ন আসতো শুধু সম্পত্তির জন্য গালমন্দ করতো। একবার তো পুলিশ নিয়ে এসে তাকে বাড়ী থেকে বের করেই দিবে। নয়ন শুধু বলে আমার বাড়ী বাড়ী, দলিল আমার নামে, নেমে যা আমার বাড়ী থেকে। এমন করে ঝগড়াঝাটি করতো। মতিয়ার মা’ বেঁচে থাকতে কোন দিন দেখেনি ভাই গুলোদের, যখন মতিয়ার মা মারা গেছে তারপর থেকে শুনি নয়নের নামে এই বাড়ী। এই বাড়ীই হলো একমাত্র কাল। তারা আরও বলেন এখন তো ভালো হয়েছে বাড়ী নয়নের দখলে থাকবে আর কোন ওয়ারিশ নাই, ১৩ মাসের যে বাচ্চা আছে তারে তো মারতে আর সময় লাগবেনা।

এবিষয়ে মিরপুর ৫নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক- খলিলুর রহমান (খলিল) বলেন, সে খুব ভালো ছিলো আওয়ামীলীগের বহু মিটিং মিছিলে তাকে আমরা দেখেছি প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তি হোক প্রশাসনের কাছে এটাই প্রত্যাশা। আশ্চর্যের বিষয়ে হলো একদিকে বোন মৃত অবস্থায় ঘরে পরে আছে, অন্যদিকে সেই ঘরে বাড়ীর দদিল খুজতে ব্যস্ত ভাই নয়ন, এলাকাবাসি  সবাই হতভম্ব হয়ে পড়ে এই দৃশ্য দেখে।  তবে এলাকায় গুনজন উঠে, ভাই নয়ন জাল দলিল করে এই সম্পত্তি নিজের নামে করে নিয়েছে। তবে স্বামীকে দিয়েই  মৃত্যু ঘটিয়েছে ভাই নয়ন কি’না তাও স্পষ্ট নয়।

এবিষয়ে সাংবাদিকদের  সাথে কোন কথা বলতে রাজি হননি নয়ন। জানা যায়, তিন ভাই বোনের মধ্য মতিয়া ছোট’ বড় দুই ভাই বাবু (৫২) ও নয়ন।বাবু ইন্ডিয়া বেড়াতে গেছে, আজ- বৃস্হপ্রতিবার হয়তো বা ফিরবে বোনকে দাফনের জন্য। দুই ভাই যে যার মত অন্য অন্য স্থানে সংসার জীবন করছে। মতিয়া বেগম (৩৮)  ১৩ মাসের শিশু সন্তান নিয়ে মায়ের রেখে যাওয়া বাড়ীতেই থাকতো।

পল্লবী থানায় বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের চেষ্টা করছেন ভাই নয়ন।

এবিষয়ে পল্লবী থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এস,আই) মোঃ শফিক আলম (শফিক)বলেন, ঘটনাস্থলে যেয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকার শহিদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলেই খুনের রহস্য উন্মোচন হবে। অপরাধীকে ধরতে আমরা সব সময় তৎপর।

মতিয়ার এই মৃত্যু যেন কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছেনা তার মামাতো ’ফুফাতো ’চাচাতো বোন সহ তার শুভাকাঙ্ক্ষীরা, পুরো বাউনিয়াবাধ এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। আজ ময়নাতদন্তের পর কলাসী কবর স্থানে মৃত মতিয়াকে দাফনের সম্ভাবনা রয়েছে।

সর্বশেষ - সর্বশেষ সংবাদ