রবিবার , ১৩ জুলাই ২০২৫ | ৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন ও আদালত
  3. আওয়ামীলীগ
  4. আন্তর্জাতিক
  5. খেলাধুলা
  6. জাতীয়
  7. তথ্য-প্রযুক্তি
  8. ধর্ম
  9. বি এন পি
  10. বিনোদন
  11. বিশেষ সংবাদ
  12. রাজধানী
  13. রাজনীতি
  14. লাইফস্টাইল
  15. শিক্ষা

পল্লবীতে দুই মাসে একাধিক খুন, এলাকাবাসীর দাবি:‘সন্ত্রাসীদের গুলি করুন, তবেই শান্তি ফিরবে’

প্রতিবেদক
বাংলাদেশ একাত্তর
জুলাই ১৩, ২০২৫ ৮:০৮ অপরাহ্ণ

যুবদল কর্মী, কেউ এনজিওকর্মী, কেউ গৃহবধূ: অপরাধীদের রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় প্রশাসনও নীরব

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা | ১২ জুলাই ২০২৫:

রাজধানীর পল্লবী থানা এলাকা পরিণত হয়েছে খুন-চাঁদাবাজি আর দখলের ভয়ঙ্কর সংঘর্ষস্থলে। গত দুই মাসে এই এলাকায় সংঘটিত হয়েছে ৮টি হত্যাকাণ্ড। স্থানীয়দের দাবি, এসব খুনের পেছনে আছে একটি সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী চক্র, যাদের রাজনৈতিক পরিচয় ও প্রভাব এতটাই শক্তিশালী যে থানার পুলিশও তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে পারে না।

নিহতদের পরিচয় ও প্রেক্ষাপট:

সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ী, গত দুই মাসে নিহতদের মধ্যে রয়েছেন:

যুবদল কর্মী সেলিম – রাজনৈতিক দ্বন্দ্বে খুন

এনজিওকর্মী ফারজানা – চাঁদা না দেওয়ায় হত্যার শিকার

গৃহবধূ আয়শা – স্বামীর জমি দখলের জেরে হত্যা

সানি – সন্ত্রাসীদের বাধা দিতে গিয়ে খুন

শ্রমিকদল নেতা বিল্লাল গাজী – স্থানীয় কোন্দলে ছুরিকাহত হয়ে নিহত

রহিম (পুলিশ সোর্স) – সন্ত্রাসীদের রোষানলে পড়েন

‘ব্লেড বাবু’ নামে পরিচিত  (সড়ক চাদাবাজি নিয়ন্ত্রণ) প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত

দোলনা আক্তার দোলা – প্রতিবাদী নারী, প্রাণ গেল ‘ভুল সময়ে সত্য বলা’র কারণে

প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসীর ভাষ্যমতে, প্রতিটি খুনের ঘটনার পরপরই প্রভাবশালী মহল থানায় গিয়ে মামলা রুখে দেয়, অথবা আসামিদের কয়েক দিনের মধ্যে জামিন করিয়ে নেয়। এতে সাধারণ মানুষের মাঝে চরম নিরাপত্তাহীনতা তৈরি হয়েছে।

মিটফোর্ডে সোহাগ হত্যাকাণ্ড: জাতীয় আতঙ্ক

শুধু পল্লবী নয়, গত ১০ জুলাই রাজধানীর মিটফোর্ড এলাকায় সোহাগ নামের এক তরুণকে ইট দিয়ে মাথা থেঁতলে হত্যা করা হয়। শত শত মানুষের সামনে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হলেও এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি। ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হলেও প্রশাসনের ভূমিকা নিষ্ক্রিয়।

রাজনীতির ছত্রছায়া ও প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা

স্থানীয়দের অভিযোগ, পল্লবীর একাধিক শীর্ষ সন্ত্রাসী বর্তমানে রাজনৈতিক দলের ইউনিট কমিটির পদে রয়েছেন। কারও পদবি আছে থানা পর্যায়ে, কারও আছে মহানগর ইউনিটে। তারা একদিকে খুন, চাঁদাবাজি, দখল, আবার অন্যদিকে এলাকায় “সামাজিক নেতা” সেজে অনুষ্ঠান করে।

একজন প্রবীণ শিক্ষক বলেন,
“পুলিশ সব জানে, কিছুই করে না। কারণ যারা খুন করছে, তাদের পেছনে নেতারা আছে। থানার চেয়েও বড় তাদের ফোন।”

জনগণের মুখে মুখে এক বাক্য: ‘গুলিই সমাধান’

অসহায় মানুষ আজ আর আদালত চায় না। চায় বাঁচতে।
একজন দিনমজুর বলেন,“আমার ছেলের নাম লেখে দিছিল, ২ হাজার টাকা না দিলে মারবে। আমরা গরিব, মামলা করতে গেলে আসামি থানায় আগেই বসে থাকে। এইবার শুধু গুলি করলেই শান্তি আসবে।”

রাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান: সিদ্ধান্ত নিন—খুন করবেন, নাকি দেশ বাঁচাবেন?

জনগণ ও বিশ্লেষকরা বলছেন, এই মুহূর্তে প্রয়োজন—

প্রতিটি থানায় শীর্ষ সন্ত্রাসীদের তালিকা প্রকাশ

৩টির বেশি মামলায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ক্রসফায়ার বা জঙ্গি-মতো অভিযান

রাজনৈতিক পরিচয় দেখলেই ছাড় নয়—অপরাধে জড়িত নেতাদেরও আইনের আওতায় আনা

সংশ্লিষ্ট থানার ওসিদের দায়িত্ব অবহেলায় বদলি/শাস্তি

মিডিয়া ও জনগণকে সাথে নিয়ে অভিযানের লাইভ পর্যবেক্ষণ

আজকের পল্লবী শুধুই একটি থানা নয়—এটি বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতার প্রতিচ্ছবি। খুনের রাজনীতি, রাজনৈতিক আশ্রয়ে অপরাধ, পুলিশের নিস্ক্রিয়তা—সব মিলিয়ে আজ দেশের মানুষ বলছে:

> “সন্ত্রাসীদের সঙ্গে আর কথা নয়—একটাই চিকিৎসা, গুলি করুন।”

সর্বশেষ - আইন ও আদালত