মিরপুরের রাস্তায় গড়ে উঠেছে অবৈধ বাস ডিপো, গাড়ি প্রতি চাঁদা ১০০ টাকা, বাসের আড়ালে চলে মাদক কারবার–প্রশাসনের রহস্যজনক নীরবতা।
ঢাকা | বাংলাদেশ একাত্তর প্রতিনিধি:
রাজধানীর মিরপুর-১২ এখন মিশ্র অপরাধের নতুন অভয়ারণ্য। ময়লার ডাস্টবিনসংলগ্ন এ-ব্লক রোড থেকে শুরু করে কালশী, সিরামিক রোড, মিরপুর মেইন রোড, পুরবি হলের সামনে পর্যন্ত দখলে নিয়েছে চাঁদাবাজ চক্র। দিনরাত বাস পার্কিং করে একদিকে তোলা হচ্ছে গাড়িপ্রতি ১০০ টাকা চাঁদা, অন্যদিকে বাসের ফাঁকে-চিপায় গড়ে উঠেছে সক্রিয় মাদক কারবার।
পরিবহনের আড়ালে চলছে গাঁজা, ইয়াবা ও ফেনসিডিলের বেচাকেনা। রাতে অন্ধকারে লেনদেন হয় বাসের তলা বা পাশ ঘেঁষে রাখা সড়কের অংশে। এলাকাবাসীর অভিযোগ—চাঁদাবাজ ও মাদক চক্র একসূত্রে গাঁথা, এবং তাদের ছত্রচ্ছায়া দিচ্ছে একটি বড় রাজনৈতিক দলের অঙ্গসংগঠনের নামধারী কিছু লোক।
এই সড়কে দখল থাকে স্বাধীন, প্রজাপতি, পরিস্থান, মিরপুর লিংক, রাজধানী, সেফটি, বিকল্প অটো সার্ভিসসহ বিভিন্ন পরিবহন সংস্থার। শুধু এ-ব্লক নয়, পুরো মিরপুর জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে এই দখলচক্র।
৫ আগস্টের পর স্বৈরাচার বিদায় নেওয়ার কথা বলা হলেও, বাস্তবে রাস্তায় নেমে এসেছে নতুন ‘স্বৈরতন্ত্র’—চাঁদাবাজি, দখল ও মাদক বাণিজ্যের অশুভ ত্রিভুজ।
অভিযোগ রয়েছে, এই চক্রে নেতৃত্ব দিচ্ছে ছাত্রজনতা হত্যা মামলার একাধিক আসামি, যারা বর্তমানে ‘যুবদল নেতা’ পরিচয়ে পরিবহন নিয়ন্ত্রণে রেখেছে। চাঁদা তোলার পাশাপাশি বাসস্ট্যান্ড বানিয়ে ফেলা সড়কেই চালিয়ে যাচ্ছে গোপন মাদক কারবার।
সবচেয়ে ভয়াবহ বিষয় হলো—থানা, ফাঁড়ি, ট্রাফিক বিভাগসহ প্রশাসনের সব স্তর নির্বিকার। কেউ দেখছে না, কেউ দেখেও দেখছে না। প্রশ্ন উঠেছে—প্রশাসনের নীরবতা কি ইচ্ছাকৃত, না তারা এ চক্রের অংশীদার?
স্থানীয়দের দাবি, অবিলম্বে দখলদার ও মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা না নিলে পুরো এলাকা অপরাধের ঘাঁটিতে পরিণত হবে।