রাজু আহমেদ; প্রকাশিত, ১৮ মার্চ ২০২৫
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ক্রমশ এমন এক সংকটের মুখে পড়ছে, যেখানে দলের ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাকর্মীরা উপেক্ষিত হচ্ছেন। দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে আওয়ামী লীগের শাসনামলে যারা বিএনপির পতাকা হাতে রাজপথ কাঁপিয়েছেন, জেল-জুলুম সহ্য করেছেন, তারা আজ দলের মূল নেতৃত্বের ছায়া থেকে হারিয়ে যাচ্ছেন।
দলীয় অভ্যন্তরে স্বজনপ্রীতি, ‘হাইব্রিড’ রাজনীতির প্রসার এবং সঠিক মূল্যায়নের অভাবের কারণে অনেক সিনিয়র নেতা এখন হতাশ। বিশেষ করে ঢাকা মহানগর বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ে, বিশেষত উত্তর ও দক্ষিণ অঞ্চলে, পরীক্ষিত নেতাদের পরিবর্তে সুবিধাবাদী এবং আওয়ামী ঘেঁষা নতুন মুখরা জায়গা করে নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সিনিয়র নেতাদের অভিযোগ, ভাই-বোন, শ্যালক-শ্যালিকা রাজনীতির কারণে প্রকৃত ত্যাগীরা দল থেকে ক্রমেই ছিটকে পড়ছেন।
পল্লবীর সিনিয়র বিএনপি নেতা মোয়াজ্জেম হোসেন ও সাবেক ছাত্রনেতা সাজিদ আহাম্মেদ সুমন-সহ বহু ত্যাগী নেতার ক্ষোভ এখন চরমে। তারা মনে করছেন, যদি বিএনপির বর্তমান নেতৃত্ব দলের প্রকৃত সৈনিকদের খুঁজে বের করে যথাযথ মূল্যায়ন না করে, তাহলে দল তার কৌশলগত শক্তি হারাবে এবং রাজনৈতিক পুনর্জাগরণের সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে পড়বে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উচিত এখনই পুরনো ত্যাগী নেতাদের পুনর্মূল্যায়ন নিশ্চিত করা। বিশেষ করে, যারা আওয়ামী লীগের শাসনামলে আন্দোলন-সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন, কিন্তু দলে অবহেলিত রয়েছেন, তাদের পুনরায় সক্রিয় করা জরুরি। অতিথি পাখিরা রাজনীতিতে আসবে-যাবে, কিন্তু প্রকৃত ত্যাগীদের বাদ দিলে দল শুধু সাংগঠনিকভাবে নয়, আদর্শগতভাবেও দুর্বল হয়ে পড়বে।
দলকে সংগঠিত ও শক্তিশালী করতে হলে বিএনপি হাইকমান্ডকে এখনই উদ্যোগ নিতে হবে। ত্যাগী নেতাদের পাশে বসিয়ে, তাদের কথা শুনে, তাদের অভিজ্ঞতা ও ত্যাগের মূল্যায়ন করেই বিএনপিকে এগিয়ে যেতে হবে। অন্যথায়, দল শুধু নেতৃত্ব সংকটেই নয়, সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণে ভবিষ্যতেও রাজনৈতিকভাবে কঠিন সময়ের মুখোমুখি হতে পারে।