বিনোদন ডেস্ক; প্রকাশ, ১১ এপ্রিল ২০২৫
শাকিব খানের অভিনীত “বরবাদ” সিনেমাটি সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে। সিনেমায় ব্যবহৃত “জিল্লু মাল দে” সংলাপটি তরুণদের মধ্যে ভাইরাল হলেও এর মাধ্যমে যে ভুল শিক্ষা সমাজে প্রচারিত হচ্ছে, তা বিভিন্ন মহলে প্রচন্ড সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
সিনেমাটির মূল চরিত্র জিল্লুর সংকটময় মুহূর্তগুলো অতি নাটকীয়ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, যা দর্শকদের সামনে প্রেমের নামে সহিংসতা ও মানসিক নির্যাতনের অস্বাস্থ্যকর একটি চিত্র তুলেঁ ধরেছে। সমাজের একটি অংশের দাবি, মুভিটিতে প্রেমের নামের আড়ালে নারীর প্রতি অবজ্ঞা এবং সম্পর্কের মধ্যকার অসুস্থ আবেগকে গ্লোরিফাই করা হয়েছে। প্রেম বাস্তবে জীবন নষ্ট করতে পারে না, বরং সঠিকভাবে পরিচালিত হলে তা উন্নতির দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দিতে পারে, এমন শিক্ষা তুলে ধরার প্রয়োজন।
ফেসবুক ব্যবহারকারী সাইফুল ইসলাম সরকারের মন্তব্যে এসেছে, “একজন পুরুষ প্রেমে পড়লে যদি নিজের জীবন নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে, তবে সেটি তার নিজস্ব দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।” তিনি আরো জানিয়েছেন, “তোকে কেউ পাবেনা” জাতীয় ভাবনাগুলো সমাজের মধ্যে একটি ভয়াবহ মানসিকতার প্রতিফলন সৃষ্টি করছে।
এমনকি, সিনেমার নারী চরিত্রগুলোর দুর্বলতা তরুণদের মধ্যে একটি ভুল ধারণা গড়ে তুলতে পারে যে, মেয়েরা নিজস্ব সিদ্ধান্ত নিতে অক্ষম। এছাড়া, “বরবাদ” সিনেমার মাধ্যমে সহিংসতা ও অপরাধকে রোমান্টিক রূপে প্রদর্শন করা হওয়ায়, এটি যুবকদের মাঝে বিপজ্জনক বার্তা প্রেরণ করছে।
আমরা আশা করি, সিনেমার পরিচালক এবং নায়করা সমাজের ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য কল্যাণকর সিনেমা তৈরি করবেন। দেশ এবং সমাজের উন্নয়নের জন্য উপযোগী, কল্পনাশীল, এবং মহৎ উদ্দেশ্যে নির্মিত সিনেমার প্রয়োজন রয়েছে, যেখানে পরিবার এবং সমাজের প্রতি সদাচার ও কর্তব্যগুলি তুলে ধরা হবে। যেমন প্রয়াত সালমান শাহ’র চলচ্চিত্রগুলোতে যেমন সামাজিক শিক্ষার উপস্থাপন ছিল, তেমনিভাবে নতুন প্রজন্মের সিনেমাগুলিও অন্তরে অন্তরে সামাজিক সংহতি, পরিবারকে ভালোবাসা এবং পিতা-মাতার প্রতি সম্মান প্রদর্শনের বার্তা দিতে পারে।
সমাজের সঠিক মূল্যবোধসমৃদ্ধ সিনেমার অভাব রয়েছে, যা যুবসমাজের উন্নয়ন ও ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।