রাজু আহমেদ| প্রকাশ, ২৭ এপ্রিল ২০২৫
ঢাকা, ২৭ এপ্রিল ২০২৫: রাজধানীর পল্লবী এলাকায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) অভিযান চালিয়ে বিদেশি পিস্তল ও গুলি উদ্ধারসহ চিহ্নিত দুই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতরা হলো- হুদা মামুন (৪০) এবং অরিন (৩৫)।
রবিবার (২৬ এপ্রিল ২০২৫) রাতে পল্লবী থানাধীন নিউ টাউন বাজারের একটি মৎস্য আড়তের গোপন কক্ষ থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারী ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে।
ডিবি সূত্রে জানা যায়, মিরপুরের শীর্ষ সন্ত্রাসী দুবাই প্রবাসী মশিউর রহমান মশী গ্রুপের অন্যতম প্রধান সদস্য হুদা মামুন, অরিন এবং সোহেলের নেতৃত্বে একটি গ্রুপ দীর্ঘদিন ধরে পল্লবী এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে চাঁদা আদায় এবং মাদক ব্যবসা চালিয়ে আসছিল। গত ১১ এপ্রিল ২০২৫ থেকে ১৩ এপ্রিল ২০২৫ পর্যন্ত মিল্লাত বিহারী ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তার, মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ এবং চাঁদাবাজীর ঘটনায় পরপর তিনদিন গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। এতে মিল্লাত বিহারী ক্যাম্পসহ আশেপাশের বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে এবং নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে থাকে। ভয়ে তারা তথ্য প্রকাশ করতে কিংবা অভিযোগ দিতে অনিচ্ছুক ছিল।
ডিবি সূত্রে জানা যায় যে, ওই তিন দিনের গুলিবর্ষণের ঘটনায় ডিবি-মিরপুর বিভাগ পুলিশের সহযোগিতায় ছায়া তদন্ত শুরু করে। ২৬ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গভীর রাতে পল্লবী নিউ টাউন বাজারের মৎস্য আড়তে অভিযান পরিচালনা করে ডিবি-মিরপুর বিভাগের একটি প্রশিক্ষিত টিম। অভিযানে অরিন ও হুদা মামুনকে গ্রেফতার করা হয়।
তাদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের পর তারা গুলিবর্ষণের ঘটনায় ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র তাদের কাছে থাকার কথা স্বীকার করে। এরপর তাদের দেখানো মতে ডিবির টিম গোপন কক্ষে অভিযান চালিয়ে একটি বিদেশি রিভলভার ও দুই রাউন্ড গুলি উদ্ধার করে। সেইসাথে, হুদা মামুনের দেখানো গোপন স্থানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর পুলিশের খোয়া যাওয়া এসএমজির ২০ রাউন্ড তাজা গুলি উদ্ধার করা হয়। আরও অস্ত্র ও গুলির সন্ধান পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে, গ্রেফতারকৃত অরিন ডিএমপির বিভিন্ন থানায় রুজুকৃত ছিনতাই, ডাকাতির প্রস্তুতি, চুরি ও মাদকের আটটি মামলার এজাহারভুক্ত এবং চার্জশিটভুক্ত আসামি। অপরদিকে, হুদা মামুনের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইন ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একাধিক মামলা চলমান রয়েছে।
এ গ্রুপের অপর সদস্য সোহেল ২৫ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে মাদকসহ পল্লবী থানা পুলিশ কর্তৃক গ্রেফতার হয়ে বর্তমানে জেল হাজতে রয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
সমগ্র ঘটনায় পল্লবী এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্কের পাশাপাশি ডিবির এই অভিযান সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে এক শক্তিশালী পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি অভিযোগকৃত ধরন এবং গ্রেফতারকৃত সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে চলমান পদক্ষেপ সকলের জন্য এক শক্তিশালী বার্তা প্রদান করবে।