সুমন আহমেদঃ
রাজধানীর মিরপুরে রাতে আঁধারেই ফুটপাত দখল করে দোকান নির্মান করেছে স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় থাকা ব্যক্তিরা। সম্প্রতি মিরপুর ১১ ভাষানী মোড় হয়ে নাভানা টাওয়ার পর্যন্ত দুই পাশের সড়ক সহ ওই ফুটপাতটি দখল মুক্ত করেছিলো ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম। সেই সড়কের ফুটপাতটি দখল করে ফের পাকা দোকান স্থাপন হওয়ায় হতভম্ব এলাকাবাসী।,
সরেজমিন সোমবার মিরপুর ১১, নান্নু মার্কেট সংলগ্ন। ব্লক-এ, এভিনিউ ৩, রোড ৪ জল্লা ক্যাম্প এলাকায় গিয়ে দেখা যায়

ফুটপাত দখল করে দোকান-ছবি বাংলাদেশ একাত্তর.কম।
২ দিন আগে ৫ ফিটের ওই ফুটপাত-টি দখল করে ২২ টি দোকান নির্মান করা হয়।, নির্মাণধীন দোকানে নতুন ইটের দেওয়াল পানি দিয়ে ভিজানোর কাজে ব্যস্ত দুই ব্যক্তির নিকট জানতে চাইলে তারা বলেন, আমাগো নেতা জুম্মন গুড্ডু ও ইরফান ইমরানের কাছে যান।
জানা গেছে তৈরির আগেই অগ্রিম দোকানগুলো বিক্রি বাবদ লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রভাবশালী এ একটি চক্র।
স্থানীয়রা জানান, ক্যাম্প সংলগ্ন গুরুত্বপুর্ন এ সড়কটি আগে ৫ ফিট ছিলো। প্রতিনিয়ত গলির এ সড়কটিতে যানজট লেগেই থাকতো। কিছুদিন আগে ঢাকা উত্তরের মেয়র নিজে দাঁড়িয়ে থেকে সড়কটি দখল মুক্ত করেন। এতে ফুটপাত সহ সড়কটি দখলমুক্ত হয়ে ১৫ ফিট হয়। আর সড়কটি ব্যস্ত সড়কে পরিনত হয়। ১৫ ফিটের ওই সড়কটিতে ৫ ফিটের ফুটপাত করা হয়। ৫ ফিটের পুরো ফুটপাত দখল করেই স্থায়ীভাবে দোকান বানানো হয়েছে। হাঁটা চলার জন্য কোন বিকল্প জায়গা নেই। দুটি গাড়ী যাতায়াত করতে পারে এখন। তবে দোকানের কারণে বর্তমান আবার সেই আগের মতোই যানজট হচ্ছে। দোকান গুলো চালু হলে মানুষ ছাড়া কোনো যানবাহন চলতেই পারবেনা এই সড়ক দিয়ে।,

ইটের দেওয়ালে পানি খাওয়াতে ব্যস্তঃ ছবি-বাংলাদেশ একাত্তর.কম।
এই রাস্তায় প্রতিদিন শতশত গাড়ী চলাচল করে। পাশেই রয়েছে নান্নু মার্কেট। ১১ নম্বর বাজার, মার্কেট। মসজিদ মাদ্রাসা, হাসপাতাল, ব্যাংক সহ বিভিন্ন করপোরেট অফিস ইত্যাদি।,
স্থানীয় বাসিন্দা (ছদ্মনাম) জামাল বলেন, ২ দিন আগে রাতের বেলায় ফুটপাতের উপর দোকান নির্মান করেছে। কারা বানিয়েছে প্রথমে কেউ স্বীকার না করলেও পরে জানতে পারি , জুম্মান গুড্ডু ও ইরফান দোকান গুলো বানিয়ে মোটা অঙ্কের টাকায় বিক্রি করেছে।,
ক্যাম্পের বাসিন্দা (ছদ্মনাম) ফরিদ বলেন, মেয়র সাহেব দাড়িয়ে থেকে রাস্তাটি দখল মুক্ত করেছে। অথচ এখন সেই রাস্তায় দোকান বানিয়ে তা বিক্রি করছে। মানুষ হাঁটবে কোন দিক দিয়ে। আর দখল মুক্ত করে কী লাভ হলো? জুম্মান, গুড্ডু ও ইরফান সিন্ডিকেট দোকান বিক্রি করে নিরীহ মানুষকে ফাঁসিয়েছে। মেয়র মহোদয়কে জানানো দরকার।,
ডিএনসিসি’র অঞ্চল (২) এর নির্বাহী কর্মকর্তা (উপসচিব) জিয়াউর রহমান বলেন, নান্নু মার্কেটের ওখানে রাস্তায় ২২ টি দোকান বানানোর বিষয়ে আমার জানা নেই। তবে আপনি ঠিকানা দেন আমি এখনই লোক পাঠাবো।,
ঢাকা ১৬ আসনের এমপি আলহাজ্ব ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লাহ বলেন, সিটি করপোরেশনের রাস্তায় কেউ অবৈধ ভাবে দোকান বানাতে পারবেনা সে যেই হোক না কেন। তিনি আরো বলেন আমি সিটি কর্পোরেশনকে প্রয়োজনে বলবো অবৈধ স্থাপনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে। রাস্তায় পাকা তো দুরের কথা কাঁচা দোকানও করা হবেনা।,
শুধু এই দোকান নয়, ৫নং ওয়ার্ডের বিভিন্ন স্থানে দখল বানিজ্যের বিষয়ে আমাদের অনুসন্ধানী টিম সজাগ রয়েছে। পরবর্তীতে আড়ালে থাকা সব রাঘববোয়ালদের নাম ও রাজনৈতিক পদ থাকলে তা প্রকাশ করবে।,