সোমবার , ৯ আগস্ট ২০২১ | ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন ও আদালত
  3. আওয়ামীলীগ
  4. আন্তর্জাতিক
  5. খেলাধুলা
  6. জাতীয়
  7. তথ্য-প্রযুক্তি
  8. ধর্ম
  9. বি এন পি
  10. বিনোদন
  11. বিশেষ সংবাদ
  12. রাজধানী
  13. লাইফস্টাইল
  14. শিক্ষা
  15. শিল্প ও সাহিত্য

কলেজের অধ্যক্ষ নিখোঁজের ২৭ দিন পর মিললো মৃতদেহের খন্ডিত অংশ:গ্রেফতার-৩

প্রতিবেদক
bangladesh ekattor
আগস্ট ৯, ২০২১ ৬:৪৬ অপরাহ্ণ

নিজেস্ব প্রতিবেদকঃ

সাভারের রেসিডেন্সিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মিন্টু চন্দ্র বর্মন নিখোঁজের ২৭ দিন পর মিললো মৃতদেহের খন্ডিত অংশ। মূল হত্যাকারীসহ ৩ জনকে গ্রেফতার করে র‌্যাব-৪।

জানা গেছে গত ১৩ জুলাই ২০২১ তারিখ সাভার রেসিডেন্সিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ, আশুলিয়া এর অধ্যক্ষ মিন্টু চন্দ্র বর্মন (৩৬), পিতাঃ শরত বর্মন, থানাঃ হাতীবান্দা, জেলাঃ লালমনিরহাট নিখোঁজ হন। পরবর্তীতে তদন্ত সংক্রান্ত বিষয়ে ভিকটিমের ভাই দীপক চন্দ্র বর্মন গত ২২ জুলাই ২০২১ তারিখে আশুলিয়া থানায় জিডি করেন নম্বর-২১৩১। বিষয়টি মিডিয়াতে ব্যাপক চাঞ্চলের সৃষ্টি করে। ফলশ্রুতিতে র‌্যাব গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।

গত ০৮ আগস্ট ২০২১ তারিখ মধ্যরাত হতে অদ্য ০৯ আগস্ট ২০২১ তারিখ সকাল পর্যন্ত র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা, র‌্যাব-৪ এবং র‌্যাব-১৩ এর অভিযানিক দল হত্যাকান্ডের পরিকল্পনা ও সংশ্লিষ্টতায় (১) মোঃ রবিউল ইসলাম (৩০), পিতা-জালাল উদ্দিন, গ্রাম+পোষ্ট-চন্ডিপুর,থানা-সুন্দরগঞ্জ, জেলা-গাইবান্ধা, (২) মোঃ আবু মোতালেব (৩০), পিতা-মোঃ মফিজুর রহমান, গ্রাম-গিতালগঞ্জ, পোষ্ট-ভজনপুর, থানা-তেতুলিয়া, জেলা-পঞ্চগড় ও (৩) মোঃ আঃ রহিম বাদশা (২২), পিতা-মোঃ আব্দুল ওহাব, গ্রাম+পোষ্ট-চন্ডিপুর, থানা-সুন্দরগঞ্জ, জেলা-গাইবান্ধা’কে যথাক্রমে ঢাকার আব্দুল্লাহপুর ও আশুলিয়া (সাভার) এবং গাইবান্ধা হতে গ্রেফতার করে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা হত্যাকান্ডের সাথে তাদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তথ্য দেয়। অতঃপর তাদের নিয়ে সাভার রেসিডেন্সিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ ও তৎসংলগ্ন এলাকা এবং আশকোনায় উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করা হয়।

রেসিডেন্সিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ এলাকা হতে উদ্ধার করা হয় ভিকটিমের দেহের ৫টি খন্ডিত অংশ এবং পার্শবর্তী এলাকা হতে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত শাবল ও জামাকাপড় ইত্যাদি।

হত্যাকান্ডটি সম্পূর্ণভাবে পরিকল্পিত একটি হত্যাকান্ড। গ্রেফতারকৃত মোঃ রবিউল ইসলাম এবং মোঃ আবু মোতালেব একই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত এবং ভিকটিম উক্ত কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। প্রতিষ্ঠানটি যৌথ মালিকানা যথাক্রমে- গ্রেফতারকৃত মোঃ রবিউল ইসলাম, গ্রেফতারকৃত মোঃ আবু মোতালেব, ভিকটিমসহ ৪ জন দ্বারা পরিচালিত হত। গ্রেফতারকৃতরা জানায়, কলেজ পরিচালনার লভ্যাংশ বন্টন, প্রাইভেট পড়ানোকে কেন্দ্র করে পেশাগত ঈর্ষা পরায়ণ হয়ে হত্যাকান্ডটি সংগঠিত করে।

গত ৭ জুলাই ২০২১ তারিখ গ্রেফতারকৃত মোঃ রবিউল ইসলাম, তার ভাগ্নে গ্রেফতারকৃত মোঃ আঃ রহিম বাদশা ও গ্রেফতারকৃত মোঃ আবু মোতালেব মিলে হত্যাকান্ডের চূড়ান্ত পরিকল্পনা করে। এ লক্ষে গ্রেফতারকৃত মোঃ রবিউল ইসলাম হত্যাকান্ডের জন্য ব্যবহৃত দা, হাতুড়ি, শাবল স্থানীয় ও পার্শবর্তী এলাকা হতে তৈরী/ক্রয় করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সিঁড়ির নিচে গোপনে রেখে দেয়। এছাড়াও গ্রেফতারকৃত মোঃ রবিউল ইসলাম স্কুলে প্রবেশের জন্য কৌশলে একটি ডুপ্লিকেট চাবি তৈরী করে। গত ১৩ জুলাই ২০২১ তারিখ আনুমানিক সাড়ে ১১ টা হতে ভোররাত ৪টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত গ্রেফতারকৃত মোঃ রবিউল ইসলাম ও গ্রেফতারকৃত মোঃ আঃ রহিম বাদশা সাভার রেসিডেন্সিয়াল স্কুল এন্ড কলেজে ভিকটিমকে হত্যা করে ভিকটিমের দেহকে ৬টি অংশে বিভক্ত করে।

গত ১৩ জুলাই ২০২১ তারিখে সন্ধ্যার দিকে গ্রেফতারকৃত মোঃ রবিউল ইসলাম ও তার ভাগ্নে গ্রেফতারকৃত মোঃ আঃ রহিম বাদশা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আগমন করে। অতঃপর তারা সুযোগের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। উক্ত প্রতিষ্ঠানে প্রায় প্রতিদিনই রাতে অফিস খোলা হত ও ছাত্র ছাত্রীরা প্রাইভেট পড়ার জন্য আগমন করত। সকলে চলে গেলে আনুমানিক সাড়ে ১১টার দিকে গ্রেফতারকৃত মোঃ রবিউল ইসলাম অধ্যক্ষকে কৌশলে একটি শ্রেণী কক্ষে নিয়ে যায়। ঐখানে ওৎ পেতে থাকা তার ভাগ্নে গ্রেফতারকৃত মোঃ আঃ রহিম বাদশা প্রথমে অধ্যক্ষকে হাতুড়ি দিয়ে মাথায় আঘাত করে। অধ্যক্ষ প্রতিহত করার চেষ্টা করলে গ্রেফতারকৃত মোঃ রবিউল তাকে পেছন থেকে জাপটিয়ে ধরে। অতঃপর গ্রেফতারকৃত মোঃ আঃ রহিম বাদশা হাতুড়ি দিয়ে কয়েকটি আঘাত করলে অধ্যক্ষ মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। অতঃপর মোঃ রবিউল দা দিয়ে তার মাথা বিচ্ছেদ করে এবং উভয়ে ভিকটিমের দেহ ৬টি অংশে বিচ্ছেদ করে। শরীরের অংশগুলো স্কুলের বাউন্ডারীর ভিতরে মাটি চাপা দেয়। হত্যাকারীরা তাদের ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্র (দা) নিকটবর্তী একটি স্থানে বালুর নিচে ও পার্শবর্তী এলাকায় শাবল ফেলে দেয়। পরবর্তীতে জামাকাপড় ও মাথা প্যাকেট করে একটি ব্যাগে নিয়ে ঢাকার আশকোনায় একটি ডোবায় পুতে ফেলে এবং পথিমধ্যে আশকোনায় একটি রাস্তার পাশে ব্যাগ হাতুড়ি ফেলে দেয়। এছাড়া এয়ারপোর্ট রেল ষ্টেশনের নিকটবর্তী ভিকটিমের মোবাইলটি ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করে ফেলে দেয়। এরপর তারা আত্মগোপনে চলে যায়।

গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

 

সর্বশেষ - সর্বশেষ সংবাদ