রাজু আহমেদ: শুক্রবার।
ঢাকায় ১৫ লাখেরও বেশি অবৈধ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলছে, যে কারনে সড়কে চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। তিব্র যানজটে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পরে। অটোরিকশা চলাচলে ভালোর চেয়ে খারাপের দিক বেশি।
সম্প্রতি এসব অবৈধ বিদ্যুৎ চালিত অটোরিকশার চলাচল বন্ধে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা এসেছে। আদালতের এমন সিদ্ধান্তে খুশি সাধারণ মানুষ। এই অবৈধ অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণ করে আসছিলো বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা। পাশাপাশি কিছু পুলিশ সদস্য ও হলুদ সাংবাদিকেরাও জড়িত ছিলো। ফলে আদালতের সিদ্ধান্ত বন্ধের ঘোষণার বিরুদ্ধে অটোরিকশা চালক সেজে বিভিন্ন ভাবে দলবল নিয়ে মিটিং মিছিল ও সমাবেশ করে। কিন্তু আদালতের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন দেশের সাধারণ মানুষ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন— দেশের অপরাধ কর্মকাণ্ড ঠেকাতে এবং রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ বিদ্যুৎ বাঁচাতে, সড়কের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে। দুর্ঘটনা ও যানজট নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে অটোরিকশা বন্ধের কোনো বিকল্প নেই।
তারা বলেছেন, অটোরিকশার অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগে দেশে প্রতিদিন কোথাও কোথাও মানুুষ মারা যাচ্ছে। অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সংঘর্ষ বাঁধছে। আওয়ামিলীগ আমলেও যেমন এখনো তেমনই।
মিরপুরে বিএনপির এক ত্যাগী নেতা বলেন, যারা প্রতিবাদ করছে ওরা কারা? খোজ নিয়ে দেখা যাবে আওয়ামিলীগের দোসরা অটোরিকশা চালক হয়ে ফিরে আসছে সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য। এর আগে আনসার, ডাক্তার এখন অটোরিকশা হয়ে ফিরার চেষ্টা করছে। ওরা যতই লাফালাফি করুক, কৌশল নিয়ে আসুক কোনো কাজেই আসবেনা। এদেশের সাধারণ মানুষ বুঝে গেছে। অটোরিকশা বন্ধে তিনি শতভাগ খুশি।
মিরপুর পল্লবীর বাসিন্দা, সুমন, আলাউদ্দিন, মাসুম ,কবির বলেন, আজ ভয়হীন শান্তিতে সড়কে চলাচল করেছি। অটোরিকশা যে গতিতে ছুটে চলতো মনে হত গায়ের উপর তুলে দিচ্ছে। আদালতের সিদ্ধান্ত শুনে এখন আর ভয় লাগেনা সড়কে চলাচল করতে। ফলে রাষ্ট্রের সম্পদ বিদ্যুৎ রক্ষা হবে। লোডশেডিং হবেনা। সাধারণ মানুষকে মাসে মাসে বিদ্যুৎের দাম বাড়িয়ে ভোগান্তিতে ফেলবেনা বর্তমান সরকার।
পল্লবী ও রূপনগর এলাকার অটোরিকশা চালক রুবেল, দেলোয়ার, সেলিম ও মুন্নার সাথে কথা হলে তারা বলেন, অটোরিকশা বন্ধ হইছে সাময়িক অসুবিধা। তবে অন্য কাজ খুজে নিবো। তারা আরও বলেন,
প্রয়োজনে পায়ের রিকশা চালাবো তাতে শরীর মন সবই সুস্থ থাকবে। বিদ্যুৎ চুরি করে ঝুঁকিতে চার্জ দেওয়া লাগবেনা। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মানুষের গায়ে উঠবেনা। কাউকে আর মাসে মাসে চাঁদা দিতে হবেনা। আদালত যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা যেনো বহাল থাকে।
এক অটোরিকশা চালক নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বলেন, আমরা তো মিছিল মিটিয়ে যেতে চাইনা। না গেলে নেতাকর্মীরা গালমন্দ করে মারতে আসে। ভয়ে আমরা মিছিলে যাই। অটোরিকশা বন্ধ হলে আমাদের তেমন সমস্যা নাই। সমস্যা হলো যারা মাসে লাখ লাখ টাকা অটোরিকশা ভাড়া ও বিদ্যুৎতের টাকা নেয়।
সুত্র বলছে, রিকশা প্রতি ভাড়া দৈনিক তিনশ পঞ্চাশ টাকা, ২৪ ভোল্টের চারটি ব্যাটারী চার্জ বাবদ পঞ্চাশ বা আশি টাকা, গ্যারেজ ভাড়া ২০ টাকা। মাসে কার্ড বাবদ দুই হাজার টাকা। তবে বর্তমান কার্ড বন্ধ, কিছু দিন পর আবার চালু হবে। গ্যারেজ মালিকরা দিনে মেটার দেখায় রাত হলে সরাসরি বিদ্যুৎতের খুটি থেকে অবৈধ সংযোগ দিয়ে অটোরিকশার ব্যাটারী চার্জ দেয়।
পল্লবী ও রূপনগর থানা প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলেন, আদালতের সিদ্ধান্ত, এখানে কারো কিছু করার নেই।