পল্লবীতে রাজউকের নকশা উপেক্ষা করে বহুতল ভবন নির্মাণ, জি.এ, ফাউন্ডেশনের বিরুদ্ধে তদন্ত দাবি
নিজস্ব প্রতিবেদক | পল্লবী | প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫
রাজধানীর মিরপুর ১২-এর বি-ব্লকে একাধিক বহুতল ভবন রাজউকের অনুমোদিত নকশা লঙ্ঘন করে নির্মাণ করেছে জি.এ, ফাউন্ডেশন ডেভেলপার কোম্পানি। কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কিশোর এই ভবন নির্মাণের পর তড়িঘড়ি করে কিছু কিছু হস্তান্তরও করে দিয়েছেন।
বিশেষভাবে আলোচিত ভবনগুলোর মধ্যে রয়েছে বি-ব্লকের রোড ৪/৪, বাসা ২-৩ নম্বর ভবন। ১০ তলা এই ভবনের মূল ফটক তৈরি হয়েছে সরকারি ফুটপাত ও সড়ক দখল করে। ভবনের চারপাশের গড়ন দেখে সহজেই অনুমান করা যায়—রাজউকের কোনো নিয়মই এখানে মানা হয়নি। নিয়ম ভাঙার কারণে যেকোনো দিন ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা, এমনকি প্রাণহানির আশঙ্কাও রয়েছে।
এই ধরনের অনিয়মের আরেকটি নজির দেখা গেছে রোড ২, বাসা ৩৯ নম্বরের ১০ তলা ভবনেও। ভবনের গেট, দেয়াল এবং গাড়ি চলাচলের পথ—সবই দখল করা হয়েছে সরকারি ফুটপাতের উপর।
স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, “যদি রাজউকের পরিচালক মোহাম্মদ মনির হোসেন এই ভবনগুলো দেখতেন, তাহলে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করে পুরো ভবন ভেঙে দিতেন।”
স্থানীয় বাসিন্দা জিয়াউল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন,
“জি.এ, ফাউন্ডেশনের টাকা আছে, ক্ষমতা আছে—সব টাকা দিয়ে চাপা দেয়।” তাদের এমন বহু ভবন রয়েছে পল্লবীতে।
আরেক বাসিন্দা সুমন বলেন, “এই জি.এ, ফাউন্ডেশনের লাইসেন্স বাতিল করে ৫০ কোটি টাকা জরিমানা করা উচিত।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জি.এ, ফাউন্ডেশনের কর্ণধার কিশোর বলেন, “আপনি কোন ভবনের কথা বলছেন বুঝতেছিনা। অফিসে আইসেন, কথা বলবোনি।”
রাজউকের ইন্সপেক্টর ফয়েজ আখতার বলেন, “আপনি ঠিকানা দেন, আমরা সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত করে নোটিশ করব।”
এ বিষয়ে জানতে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের মিরপুর হাউজিং কর্মকর্তা (এক্সচেঞ্জ) কাইসার শেখ এর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে, তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এছাড়া, স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পল্লবীর পুরাতন থানা সংলগ্ন ৬০ ফিট রোডে—এমডিসি মডেল স্কুল থেকে শুরু করে সিটি করপোরেশনের ডাস্টবিন পর্যন্ত একপাশের ফুটপাত টাইলস করা হলেও, অন্য পাশে অবৈধ দোকান এখনো বহাল। ভবনের মালিকরা ফুটপাত দখল করে দোকান বানিয়ে ভাড়া দিচ্ছেন।
২০২২ সালে সিটি করপোরেশনের ম্যাজিস্ট্রেট উচ্ছেদ অভিযানে নামলেও, স্থানীয় আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লা ও ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাজ্জাদ হোসেনের হস্তক্ষেপে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ না হয়ে দখল আরও পাকাপোক্ত হয়। পরবর্তীতে কাউন্সিলর সাজ্জাদ নিজেই বাছাই করে অন্য রোডের বৈধ ভবনগুলো ভাঙার নির্দেশ দেন।
মিরপুর ১২, বি-ব্লকের সড়ক ও ফুটপাত দখল করে ভবন তৈরির বিষয়ে জানতে ডিএনসিসি অঞ্চল-২ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা (উপসচিব) মোঃ জিয়াউর রহমানের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ফোন লাইনটি কেটে দেন, কথা না বলেই। পরে ডিএনসিসি নির্বাহী প্রকৌশলী অঞ্চল-২ (পুর) আশরাফুল ইসলাম বলেন, “আমি তো একটা মিটিংয়ে আছি, আপনি পরে ফোন করুন।