রাজু আহমেদ:
সাম্প্রতিক সময়ে দেশে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের ঘটনায় উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে শিশু ও কিশোরীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। একের পর এক ধর্ষণের ঘটনা সমাজকে নাড়া দিচ্ছে, যা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সর্বশেষ ঘটনা মাগুরার আছিয়া হত্যার রেশ না কাটতেই নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে আরেকটি শিশুকে ধর্ষণের ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। এসব ঘটনায় জনমনে ক্ষোভ বিরাজ করছে এবং দ্রুত বিচার ও কঠোর শাস্তির দাবি উঠেছে।
বিশিষ্ট আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতন রোধে বিদ্যমান আইনের কঠোর প্রয়োগ জরুরি। একই সঙ্গে অপরাধীদের দ্রুততম সময়ে বিচার নিশ্চিত করতে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
এ বিষয়ে সংবিধান বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আসিফ নজরুল গণমাধ্যমকে জানান, “নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের কার্যকারিতা আরও জোরদার করতে হবে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করলে অপরাধীরা ভয় পাবে এবং অপরাধ কমবে।”
ধর্ষণের মূল কারণ নিয়ে সমাজে ভিন্নমত রয়েছে। কেউ কেউ দাবি করছেন, অশ্লীল কনটেন্ট, পর্নোগ্রাফি এবং সামাজিক অবক্ষয়ের কারণে তরুণরা বিপথগামী হচ্ছে। আবার অনেকে মনে করেন, নারীর প্রতি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ও আইন বাস্তবায়নের দুর্বলতাই এসব অপরাধ বৃদ্ধির মূল কারণ।
নারী অধিকার সংগঠনগুলোর মতে, ধর্ষণ প্রতিরোধে কেবলমাত্র কঠোর আইনই যথেষ্ট নয়, বরং পারিবারিক শিক্ষার মাধ্যমে নৈতিকতা বৃদ্ধি করা, পুরুষদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন এবং নারীদের জন্য নিরাপদ সমাজ গড়ে তোলা জরুরি।
সংশ্লিষ্টদের মতে, ধর্ষণের সাজা আরও কঠোর করে, দ্রুত বিচার নিশ্চিত করা এবং সামাজিক সচেতনতা বাড়ানো গেলে এসব অপরাধ শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনা সম্ভব।
রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকরা এখন কী পদক্ষেপ নেন, সেটিই দেখার বিষয়। তবে দেশের সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে নারীরা আর কোনো নিরপরাধ শিশুর নির্মম পরিণতি দেখতে চান না।