হাইওয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে স্পিডগানের প্রমাণ দেখাতে ব্যর্থতার অভিযোগ, সামাজিক মাধ্যমে ভিডিও ভাইরাল
রাজু আহমেদ| প্রকাশ,১০ এপ্রিল ২০২৫
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক, ঢাকা–মাওয়া–ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক ও ঢাকা-আরিচা মহাসড়কসহ দেশের বিভিন্ন মহাসড়কে দুর্ঘটনা প্রতিরোধের লক্ষ্যে হাইওয়ে পুলিশ নিয়মিতভাবে স্পিডগান ব্যবহার করে গাড়ির গতি পরীক্ষা করছে। তবে এই কার্যক্রমকে ঘিরে সম্প্রতি এক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে, যেখানে দেখা গেছে—এক চালককে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হলেও তার বিরুদ্ধে স্পিডগানের কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি দায়িত্বরত পুলিশ সার্জেন্ট।
ভিডিওতে চালক অভিযোগ করেন, তার গাড়ির গতি সীমার মধ্যেই ছিল। তিনি বারবার অনুরোধ করেন স্পিডগানে কত গতি রেকর্ড হয়েছে তা দেখানোর জন্য। তবে পুলিশ কর্মকর্তা সাফ জানান, “এখন দেখানো সম্ভব না।” চালক পাল্টা জবাবে বলেন, “আপনার হাতে স্পিডগান, যদি আমার গতি বেশি হয়ে থাকে তাহলে গাড়ির নাম্বারসহ স্পিডগানে স্পষ্ট দেখা যাওয়ার কথা। আপনি দেখাতে পারছেন না, অথচ মামলা দিয়েছেন!”
চালকের আরও অভিযোগ, তিনি ঈদের দিন ডিউটি করে বাসায় ফিরছিলেন, অথচ তাকে ভিত্তিহীন মামলায় ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ভিডিওতে তাকে কাঁদার উপক্রমে দেখা যায় এবং তিনি বলেন, “এর বিচার আল্লাহ করবেন।”
আইনের শাসন না কি পুলিশি ক্ষমতার অপব্যবহার?
এই ঘটনার পর সাধারণ মানুষ ও নেটিজেনদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন—পুলিশ যদি গাড়ির গতি মাপতে স্পিডগান ব্যবহার করে, তাহলে সেই তথ্য চালককে দেখাতে ব্যর্থ হয় কেন?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যেকোনো ধরনের আইন প্রয়োগে স্বচ্ছতা এবং তথ্যভিত্তিক প্রমাণ উপস্থাপন অপরিহার্য। অন্যথায় তা হয়রানি বা ক্ষমতার অপব্যবহার হিসেবে গণ্য হতে পারে।
প্রশাসনের প্রতি দাবি
ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই দাবি করছেন, ভবিষ্যতে এ ধরনের হয়রানি বন্ধ করতে স্পিডগানের রিডিং চালককে তাৎক্ষণিকভাবে দেখানোর বাধ্যবাধকতা আরোপ করতে হবে। একইসঙ্গে কোনো প্রমাণ ছাড়াই মামলা দেয়ার প্রবণতা বন্ধ করতে হবে।
আইন হোক তথ্যনির্ভর, শাস্তি হোক ন্যায়ভিত্তিক। অন্যথায়, জনগণের আস্থা যেমন নষ্ট হবে, তেমনি আইন প্রয়োগকারীরাও একদিন গণবিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে বাধ্য হবেন।