বাংলাদেশ একাত্তর.কম-শেখ রাজু।
যৌতুকের দায়ে স্ত্রীরা স্বামীর হতে বা স্বামীর পরিবারের হাতে নির্যাতন অহরহ হচ্ছে। যৌতুক একটা মরণ ব্যাধী রোগ হয়ে আমাদের মধ্যবিত্ত পরিবারে মিশে আছে। বেশির ভাগ নারীরা স্বামীর যৌতুকের চাহিদা মত অর্থ তার বাবা বাড়ী থেকে না এনে দিতে পারলে চলে দিনের পর দিন অমানিক নির্যাতন। সরকার বার বার বলে আসছে যৌতুক”কে না”বলুন” কিন্তু বাংলাদেশের আনাচে কানাচে দৈনিক শত শত নারী তার স্বামীর যৌতুকের টাকা দেওয়ার কারনে হতে হয় স্বামীর হাতে নির্যাতন পঙ্গুত্ব এমনি কি খুন। টাকা পয়সা খরচ করতে না পারলে পুলিশের সহযোগিতা পাওয়া খুব কঠিন হয়ে পড়ে।
মৌলভীবাজারে যৌতুক লোভী স্বামীর নির্যাতনে ৩ সন্তানের জননী সেলিনা এখন পঙ্গুত্ব বরণ করে চরম মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। অবুঝ সন্তানদেরকে নিয়ে পিত্রালয়ে হুইল চেয়ারে বসে সময় কাটান। এ ঘটনায় মৌলভীবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে সেলিনা বেগম বাদী হয়ে স্বামী মোঃ ইব্রাহিম মিয়া (৩৫), ভাসুর মোহাম্মদ আলী (৪০), শাশুরী জায়েদা বেগম, ননদের স্বামী মোঃ মাহমুদ (৫০), ননদ ছায়া বেগম (৪৫) দেবর মোঃ ইয়াকুব আলী (২৮) ও ননদ সেলি বেগমকে আসামী করে (মামলা নং ৩৯৬/২০১৮ইং) একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলা সুত্রে জানা গেছে- নবীগঞ্জ থানার নোয়াগাঁও গ্রামের মোঃ আবুল কালাম এর ছেলে মোঃ ইব্রাহিম মিয়ার সাথে বিগত ২০০৪ সালে ইসলামী শরিয়ত বিধান মতে শ্রীমঙ্গল উপজেলার শমসেরগঞ্জ বাজার কামাসিদ গ্রামের মোঃ মোস্তফা মিয়ার বড় মেয়ে সেলিনার সাথে বিবাহ হয়। দাম্পত্য জীবনে তাদের সংসার জীবনে ২টি মেয়ে ও ১টি ছেলে সন্তান জন্ম গ্রহন করে। দীর্ঘদিন যাবৎ ব্যবসা পরিচালনা করার জন্য যৌতুক হিসাবে ২ লক্ষ টাকা তার পিত্রালয় থেকে এনে দেয়ার জন্য প্রায় সময় সেলিনাকে শারিরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করেন স্বামী ইব্রাহিমসহ তার পরিবার। বিগত ১ নভেম্বর বিকাল অনুমান-৩ ঘটিকায় স্বামী ও তার বাড়ীর লোকজন একজোটবদ্ধ হয়ে তাকে প্রানে হত্যা করার জন্য ধারালো দা লাঠি সোটা দিয়ে এলোপাথাড়ি মারতে থাকে, এতে সেলিনার পায়ের গোড়ালীর উপর মারান্তক কাটা রক্তাক্ত জখম হয়। লোহার রড়ের উপর্যুপরি আঘাতেন হাঠুর নিচে ২টি স্থানে হাড় ভেঙ্গে যায় এবং বাম পায়ের জোড়া ছুটে যায়। তাকে অমানবিক নির্যাতনের পর হাসপালে না নিয়ে পাষুন্ড স্বামী সেলিনার ভাই বাবুল মিয়াকে মুঠোফোনে দাবীকৃত যৌতুকের টাকা নিয়ে আসতে বলেন, টাকা না আনলে তার বোনকে তালাক দিবে বলে জানান ইব্রাহিম।
পরে দুরত্ব এসে ভাই বাবুল মিয়াসহ আশপাশের লোকজন সেলিনাকে গুরুতর রক্তাক্ত আহত অবস্থায় উদ্ধার করে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল সার্জারী বিভাগে ( ০১/১১/২০১৮ইং হইতে ০৬/১১/ ২০১৮ইং, বেডনং- ৭, রেজি নং- ৭০১৮৭) ভর্তি করেন।
উক্ত বিষয়ে গত ১০ নভেম্বর সেলিনার পিত্রালয়ে এক মীমাংসা বৈঠক অনুষ্টিত হলে সেখানেও তার স্বামী ২-লক্ষ যৌতুকের টাকা দাবীতে অটল থাকায় বিষয়টি চুড়ান্ত মীমাংসা হয়নি। সর্ব শেষ সেলিনার পরিবার মৌলভী বাজার থানা পুলিশের কোন সহযোগিতা না পেয়ে তিনি মৌলভীবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলা দায়ের করেন নেয় বিচার পাওয়ার আশায়।
এখন মামলা করার কারনে প্রতিনিয়ত আসামীরা নানা ভাবে হুমকি ধামকি দিচ্ছেন সেলিনার পরিবারকে। এবিষয়ে সেলিনার ভাই সাদ্দাম হোসেন মুন্না বাংলাদেশ একাত্তর.কম”কে বলেন, যদি দুরত্ব ভাবে আইনের সহযোগিতা না পাই আমরা, তবে হয়তো বা আসামীরা যে কোন সময় বড় ধরনে ক্ষতি করতে পারে সেলিনাসহ পরিবারের।