নাজমুল নিরব খান, ফরিদপুর চরভদ্রাসন থেকেঃ
ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলায় দীর্ঘ ২৮ বছর ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় ধ্বংশের মুখে একমাত্র জেলখানা ভবনটি। অবহেলা ও অযত্নে দিন দিন ধ্বংশ হয়ে যাচ্ছে পুরাতন এই জেলখানাটি।অব্যাবহার আর কার্যক্রমহীন হওয়ায় আজ জেল খানাটি নস্ট হয়ে যাচ্ছে।সাথে সাথে অপব্যাবহার ও হচ্ছে।
দেখা যায়, উপজেলা সদরের পাশে অবস্থিত জেলখানা ভবনটি ১৯৮৮ সালে নির্মাণ করার পর তখনকার মাননীয় পাট মন্ত্রী জনাব শেখ শহীদুল ইসলাম ১৬/০৮/১৯৯০ সালে কারাগারটির শুভ উদ্বোধন করেন। প্রথম দিকে কারাগারটিতে মাত্র ২ বছর র্কাক্রম চালু থাকলেও পরবর্তিতে ১৯৯০ সালে সরকার পরিবর্তনের পর থেকে উক্ত কারাগারটিতে সব ধরনের চলমান কার্যক্রম অনিদিষ্ট্য কালের জন্য বন্ধ হয়ে যায়।
জানা যায়, ১৯৮৭-৮৮ অর্থবছরে উপজেলা সমাজ সেবা অধিদপ্তরের অধীনে উক্ত কারাগারটি নির্মান করা হয়। আর ১ একর ১৫ শতাংশ জমির উপড় ১৯৮৮ সালে নির্মিত উক্ত জেলাখানা ভবনটিতে মূল কারাগার ১টি, মহিলা কারাগার ১টি, স্টাফ কোয়ার্টার ১টি ও ১টি ব্যারাক হাউস ও ৩ টি বিশাল বিশাল ভবনসহ কারাগারটির ১ একর ভিটা জমির চতুর্দিকে রয়েছে শক্ত ইটের বাউন্ডারি। অপরদিকে, কারাগারটি উপজেলা সদরের সন্নিকটে অবস্থিত হওয়ায় উপজেলার যে কোন স্থান হতে উক্ত কারাগারটিতে যাতায়াতেরও রয়েছে সু-ব্যবস্থা। আর তাই বহুদিনের উক্ত পরিত্যক্ত কারাগারটিতে দীর্ঘদিন ধরে উপজেলায় একটি ফায়ার সার্ভিস স্থাপনের দাবিও করে চলেছেন বলে জানা যায় স্থানীয়রা। এছাড়া ধ্বংশ অবশেষ সরকারি সম্পদ রক্ষা করার জন্য তৎপর স্থানীয় লোকজন।
গত মঙ্গলবার সরেজমিনে গেলে এলাকাবাসি বলেন, সরকার চাইলে এখানে একটি মানসম্মত ফায়ার সার্ভিস স্থাপন করতে পারে ।যা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ভাবে অগ্নিকান্ডের ক্ষতির হাত থেকে এলাকাবাসীকে রক্ষা করতে পারে। অপরদিকে, দীর্ঘদিন ধরে কারাগারটি অযতেœ অবহেলায় জঙ্গল জর্জরিত হয়ে পরিত্যক্ত ভাবে পড়ে থাকায় এর ইট গুলি খুলে নেওয়ার পাশাপাশি মূল্যবান ও দামি দামি জিনিস পত্র গুলো আশেপাশ থেকে আসা কিছু নেশাখোর ও মাদকসেবী বখাটেরা চুরি করে নিয়ে যাওয়ায় সরকার লাখ লাখ টাকার ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে।
মঙ্গলবার উক্ত পরিত্যক্ত কারাগারটির বিষয়ে উপজেলার সাবেক সমাজ সেবা কর্মকর্তা মোঃ ওমর ফারুক এর কাছে মুঠোফোনে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, সরকারের উক্ত পরিত্যক্ত কারাগারটি নিয়ে একটি প্লান সরকারের আছে এবং সরকার কারাগারটিতে একটি প্রতিবন্ধি প্রতিষ্ঠান করতে চেয়েছিল ও কারাগারটির সংস্কারের জন্য একটি প্রস্তাবও হেড অফিসে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখনও কোন বরাদ্ধ আমরা পাইনাই। তবে আমাদের কাছে প্রতিবছর কারাগারটির খাজনা পরষিদ বাবদ বরাদ্ধ পাই, আর তাই দিয়ে আমার কারাগারটির প্রতিবছর খাজনা পরিষদ করে যাচ্ছি। তিনি আরো জানান, উপজেলা প্রশাসন বা ভূমি মন্ত্রনালয় সমাজ সেবা অধিদপ্তরকে কারাগারটি লিখিত ভাবে দেওয়ার কথা এবং এটি সমাজ সেবা অধিদপ্তরকে লিখিত ভাবে দেওয়ার কাজটি শেষ হয়েছে কিনা এটি আমি এখনও জানিনা।
তবে গতবার ২০১৬ সালে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) পারভেজ চৌধুরী যখন দায়িত্বে ছিলেন তখন তিনি এটিকে সমাজ সেবা অধিদপ্তরের কাছে লিখিত ভাবে দেওয়ার একটি প্রস্তাব পাঠান। উপজেলা প্রশাসন আপাতত উক্ত কারাগারটিকে মৌখিক ভাবে এটিকে সমাজ সেবা অধিদপ্তরকে দেখভাল করার দায়িত্ব দিয়েছেন বলে জানান তিনি।কিন্তু তারা ওই পরিত্যাক্ত কারাগাওে আজ পর্যন্ত কোন কার্যক্রম বা সংস্কার করেনি ।