(বাংলাদেশ একাত্তর.কম) রাজধানীর মিরপুরে অবস্থিত বিভিন্ন হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের নিজস্ব পার্কিং ব্যবস্থা নেই। এসব প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন যানবাহন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত যত্রতত্র ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকে। এতে পাশের সড়কগুলোতে প্রতিনিয়ত যানজট লেগেই থাকে।
মিরপুর ১০, ১১ ও ১২ নম্বর ঘুরে দেখা যায়, পার্কিংয়ের জায়গায় বিভিন্ন কক্ষ বানিয়ে ওই হাসপাতালের কার্যক্রম চলছে। আলোক হাসপাতাল, হেলাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার, মিরপুর জেনারেল হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ডিজিল্যাব ডায়াগনস্টিক সেন্টার, আল শাফী হাসপাতাল ও রিজেন্টসহ বিভিন্ন হাসপাতালের নিজস্ব পার্কিং ব্যবস্থা নেই।
মিরপুর ১০ নম্বরে অবস্থিত আলোক হাসপাতালের নিচ তলায় পার্কিংয়ের জায়গা দখল করে বিভিন্ন কক্ষ করা হয়েছে। আলোক হেলথকেয়ার নামে পরিচিত এ প্রতিষ্ঠানের দুটি ভবনে চলছে ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও হাসপাতাল।
প্রতিষ্ঠানটি শুরুতে মিরপুর ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামে পরিচিত ছিল। মালিকানা দ্বন্দ্বের কারণে নাম পরিবর্তন করে আলোক ডায়াগনস্টিক সেন্টার করা হয়। বছর দুয়েক আগে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পাশাপাশি হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি।
সরেজমিন দেখা যায়, হাসপাতাল গুলোর প্রবেশ পথে দীর্ঘ যানজট। নিজস্ব পার্কিং ব্যবস্থা না থাকায় হাসপাতালে আসা রোগীদের যানবাহন পুরো রাস্তায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। এতে প্রতিনিয়ত রাস্তা ব্লক হয়ে থাকে। মূল সড়ক পর্যন্ত যানজট ছড়িয়ে পড়ে।সেসময় তাড়াহুড়া করে রাস্তা হতে গেলে পথচারিরাও চরম বিপাকে।
স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, হাসপাতালের কারণে আবাসিক এলাকার লোকজন খুব অশান্তিতে রয়েছেন। হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স ও রোগীদের গাড়ি রাস্তায় থাকে। আর এতে প্রতিনিয়ত যানজট লেগে থাকে।
এসব হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা কয়েকজন রোগী জানান, এখানে চিকিৎসা ব্যয় আকাশচুম্বী। হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত নিচু মানের। সরকারি কোনো নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা করছে না প্রতিষ্ঠানগুলো। নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি মূল্যে বিভিন্ন টেস্ট করানো হয়।
গত মাসের ৩ তারিখ জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর ডেঙ্গু রোগের রি এজেন্ট সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে বিক্রয়ের অভিযোগে আলোক হাসপাতালকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আবদল জব্বার মণ্ডল বলেন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশনা অনুযায়ী ডেঙ্গু টেস্টের রি এজেন্ট সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি মূল্য রাখায় জনস্বার্থে আলোক হেলথকেয়ারকে জরিমানা করা হয়েছে।
অভিযানের পরও প্রতিষ্ঠানটি বেশ কিছুদিন অতিরিক্ত মূল্যে ডেঙ্গু রোগের রি এজেন্ট বিক্রয় করেছে বলে জানিয়েছেন কয়েকজন ভুক্তভোগী। জেনারেল কেবিনে ভর্তি হওয়া এক রোগী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এখানে চিকিৎসা ব্যয় অনেক বেশি।
ভর্তির আগে হাসপাতালের লোকজন বলেছে ডাক্তার নিয়মিত থাকে। খরচ কম। অথচ ডাক্তার থাকে না। বাইরে থেকে ডাক্তার আসে।
যতবারই আসে ততবার ১০০০ টাকা করে দিতে হয়ে। ভর্তির সময় ৫০০ টাকা আবার জেনারেল চার্জ বাবদ দিতে হয় অতিরিক্ত ৫০০ টাকা। সার্ভিস চার্জ রয়েছে ১০ পারসেন্ট। স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, এখানে অনেক ডাক্তার আসেন না। অথচ দেয়ালজুড়ে সাইন বোর্ডে তাদের নাম লেখা রয়েছে।
রাজউক অঞ্চল ৩-এর অথরাইজ অফিসার মাকিদ এহসান বলেন, পার্কিং এরিয়া ছাড়া কীভাবে হাসপাতাল হয়। এটি সম্পূর্ণ অবৈধ। অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।
আলোক হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক লোকমান হোসেন বলেন, পার্কিং এরিয়া একটু দূরে রয়েছে। তিনি বলেন, তথ্য নিচ্ছেন কি ব্যাপারে? রিপোর্ট করবেন, করেন। বাংলাদেশের কোনো হাসপাতালের পার্কিং এরিয়া নেই। তার হাসপাতালের বিরুদ্ধে আনা অন্য অভিযোগও তিনি অস্বীকার করেন।
ডিজিল্যাব ডায়াগনস্টিকের এক পরিচালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, নিচ তলায় পার্কিংয়ের জায়গায় আমাদের বিভিন্ন কক্ষ বানানো হয়েছে। এতে কোম্পানির টাকা বেঁচে যায়। পার্কিংয়ের জন্য কেউ আলাদা খরচ করতে চায় না।
কালশী রোডে অবস্থিত মিরপুর জেনারেল হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিকের মালিক আবু হানিফ বলেন, পার্কিং না থাকলেও সমস্যা হচ্ছে না। লোকজন রাস্তায় গাড়ি রাখছে। মিরপুর ১২ নম্বরে অবস্থিত রিজেন্ট হাসপাতালের পার্কিংয়ের কোন জায়গা নেই । রিজেন্ট হাসপাতাল প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে রয়েছে সাধারন মানুষের গাদা গাদা অভিযােগ, উঠা নামার লিফ্ট বেশির সময়ে নষ্ঠ থাকে স্টাফদের আচার-ব্যবহার সুবিদা জনক নয় সেবার মান ভালো নয় নিচ্ছে অতিরিক্ত টাকাও। এবিষয়ে রিজেন্ট হাসপাতালের স্টাফ এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কিছু বলতে পারবোনা মালিকের সাথে কথা বলেন, মালিকের ফোন নম্বর চাইলে সে দিতে রাজি হয়নি।