শুক্রবার , ১৪ জুলাই ২০২৩ | ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন ও আদালত
  3. আওয়ামীলীগ
  4. আন্তর্জাতিক
  5. খেলাধুলা
  6. জাতীয়
  7. তথ্য-প্রযুক্তি
  8. ধর্ম
  9. বি এন পি
  10. বিনোদন
  11. বিশেষ সংবাদ
  12. রাজধানী
  13. লাইফস্টাইল
  14. শিক্ষা
  15. শিল্প ও সাহিত্য

থানায় অভিযোগ করায় ভুক্তভোগীদের মারধর করলেন বিহারি মোস্তাক বাহিনী

প্রতিবেদক
bangladesh ekattor
জুলাই ১৪, ২০২৩ ৮:০৮ অপরাহ্ণ

বাংলাদেশ একাত্তর.কম/নিজেস্ব প্রতিবেদক:

মোস্তাক নাম শুনলেই গা শিউরে উঠে ১৮ কোটি বাঙ্গালীর। জাতীর শত্রু, বঙ্গবন্ধুর খুনি। সেই মোস্তাক-ই আবার বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর মাটিতে লুটোপুটি করে গড়িয়ে গড়িয়ে কান্নাকাটি করেছে বিশ্বকে দেখায় ছিলো বিশ্বাস ঘাতক মোস্তাক।

এবার নতুন এক মোস্তাকের গল্প জানাবো: যদিও তার কৌশল ভিন্ন। মিরপুর ১১ বিহারি ক্যাম্পের মাদক সম্রাট পরিবার হিসেবে চিহ্নিত তারা। মোস্তাক পরিবারদের পাশে থেকে সব সময়ই দোয়া আশীর্বাদ করেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। এ মোস্তাক মাঝেমধ্যে অলিভওয়েল তেল দিয়ে কোয়েলপাখির ডিম ভাজাও খাওয়ান কাউন্সিলর সহ স্থানীয় আওয়ামিলীগের নেতাদের। ঈদ কোরবানিসহ বিভিন্ন প্রোগ্রামের দিনে মোটা অংকের অর্থ অনুদান দেয় মোস্তাক। যার কারণে এ মোস্তাক পরিবারের সদস্যরা দিনে দিনে দুর্ধর্ষ ক্ষমতাসিন হয়ে উঠছেন।খুন, যখম দখল বানিজ্য, মাদক বানিজ্য নির্বিঘ্নে চালিয়ে যাচ্ছে। ক্যাম্পের নিরীহ বহু পরিবার প্রতিনিয়ত মোস্তাক  পরিবারের হাতে জুলুম নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন  কিন্তু ভয়ে কেউ মুখ খোলেনা।

থানায় লিখিত অভিযোগ ও এলাকা সুত্রে জানাগেছে, অভিযোগ করায় বিচার প্রার্থীর বাবাকে জোর করে বিচার করতে বসেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা। বিচার না মানায় সালিশের মধ্যেই বিচারপ্রার্থীর বাবাকে ও ভাইকে মারধর করে বিহারি নেতা মোস্তাক ও তার পুত্র রাজু সহ তাদের বাহিনীর সদস্যরা।

রাজধানীর পল্লবীর ১১ নম্বর সেকশনের সি ব্লক (ক্যাম্প) এলাকায় বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী ইরফান বলেন, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তারা মেডিকেল সংলগ্ন নিজ বাড়ির সামনে শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয় আমার ভাইয়ের। তখন আমার ভাইয়ের স্ত্রীও সেখানে উপস্থিত ছিল। এসময় শীর্ষ সন্ত্রাসী কালা চানের অন্যতম সহযোগী মাসুম ও তাদের সঙ্গপাঙ্গ এসে আমার ভাইয়ের ওপর হামলা চালায়।

ঘটনা শুনে আমার মা বোন এগিয়ে আসলে তাদের ওপরও হামলা চালায় মাসুম ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্য। তিনি বলেন, এ বিষয়ে পল্লবী থানায় অভিযোগ করার পর আমাকে বাসা থেকে ফোন করে জানানো হয় যে, আমার বাবাকে স্থানীয় বিহারি নেতা মোস্তাক, তার ছেলে রাজুসহ প্রায় এক দেড়’শ লোকজন মিলে আমার বাবাকে আটকে বিচার মানতে বাধ্য করাচ্ছে।

আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে জানাই এই বিচার আমি মানব না থানায় অভিযোগ করেছি আইনের মাধ্যমে যা হবার তাই হবে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বিহারি নেতা মোস্তাক আমার গাল চেপে ধরে আমাকে গালাগালি করে ও তার ছেলে রাজু ও শীর্ষ সন্ত্রাসী কালো চানের অন্যতম সহযোগী মাসুমসহ প্রায় ১০ থেকে ১২ জন আমাকে সবার সামনেই মারধর করে। আমাকে বলে বিচার না মানলে আমার মাথার বেন্ডেজ খুলে আবারও পিটিয়ে মাথা ফাটিয়ে দেবে।

অভিযোগকারী সাকিব বলেন, আমার স্ত্রীকে নিয়ে বেড়াতে যেতে চেয়েছিলাম। আমার শশুর-শাশুড়ির সাথে এ বিষয়ে অনুমতি নিতে গেলে তর্কাতর্কি হয়। এসময় মাসুম, জাহিদ ও পাপ্পুসহ প্রায় অর্ধশতাধিক যুবক-কিশোররা আমাদের ওপর হামলা চালায়। এ বিষয়ে আমি থানায় অভিযোগ করেছিলাম। এখন তারা বলছে আমি নাকি যৌতুক চেয়ে আমার স্ত্রীকে নির্যাতন করেছি। অথচ আমার স্ত্রী আমার সাথেই আছে।

সাকিবের স্ত্রী দিয়া বলেন, আমার স্বামী কারও কাছে যৌতুক চায়নি। আমাকে কখনো নির্যাতনও করেনি। আমার প্রয়োজনে বাবার কাছে জিনিসপত্র চেয়েছিলাম। সেটাও বিয়ের সময়ের ঘটনা। আজ শুধু শুধু আমার পরিবারের ওপর হামলা করা হয়েছে। আমার স্বামীর সাথে আমি অনেক ভালো আছি। শুধুশুধু তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিহারি নেতা মোস্তাক আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। কিন্তু ওই ছেলেকে আমি বা আমার ছেলে মারধর করেছে এই অভিযোগ সত্য নয়। তারা যদি আমার সামনে বলতে পারে তাহলে আমি অপরাধ মাথা নেব।

তবে এ ঘটনার মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করেন এক স্থানীয় বাসিন্দা। ভিডিওতে দেখা গেছে, বৃহস্পতিবার রাতে ভুক্তভোগীর বাসার সামনে প্রায় এক থেকে দেড়’শ মানুষ জটলা ছিল। ভুক্তভোগীর বাবা দেলহিকে আঙ্গুল দেখিয়ে হুমকি দিতে দেখা যায় বিহারি নেতা মোস্তাক ও তার ছেলেদের। এক পর্যায়ে আহত ইরফানকে ধাক্কাধাক্কি ও মারধর করতেও ভিডিওতে দেখা গেছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ বিহারি নেতা মোস্তাক ও ছেলেরা মাদক কারবারির সাথে জড়িত। বিহারি নেতা মোস্তাক বাহিনীদের বিরুদ্ধে সব সময় পুলিশ র‌্যাব ডিবি প্রশাসনের একাধিক বাহিনী তাদের উপর কড়া নজর রাখা শুরু করে। এর আগে মাদক বানিজ্যের জেরে এক তেল ব্যবসায়ীকে হত্যা করে মোস্তাকের ছেলে মাদক সম্রাট ইমতিয়াজ। পরে স্থানীয় কাউন্সিলরের পরামর্শে এমপির মাধ্যমে  মোস্তাককে প্রধান করে একটি ১৫০ জনের কমিটি করে। নাম দেয় “মাদক নির্মুল কমিটি”। কমিটির পর থেকে তাদের মাদক বানিজ্য এখন চাঙ্গা। ওই এলাকায় পুলিশ গেলে মাদক কারবারিরা-ই বলে আমরা আছি মাদক নির্মুল কমিটির সদস্যরা। সন্দেহ কাউকে পেলে আপনাদের জানাবো। শুধু বিহারি মোস্তফা বাহিনী নয় বিভিন্ন থানা এলাকায় বেশির ভাগ মাদক কারবারিরা এখন মাদক নির্মুল কমিটি করে নির্বিঘ্নে মাদক বিক্রি করছে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে। বিহারি নেতা মোস্তাকের পুত্ররা মিস্টার, ইমতিয়াজ ও রাজুর অপরাধের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলার সাহস রাখেনা। কথা বললেই মারধর যখম হত্যাও করে ফেলে।

সরকারি সকল সুযোগ সুবিধা পেয়ে ক্যাম্প দখল করে থাকলেও বিহারি নেতা মোস্তাকের মিরপুর বিভিন্ন এলাকায় নামে-বেনামে ফ্ল্যাট প্লট বাড়ী রয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের আশীর্বাদে মোস্তাকরা আজও শাসন শোষণ নিপীড়ন করেই যাচ্ছে বাঙালিদের।

থানায় অভিযোগের পর মারধরের বিষয়ে জানতে চাইলে পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহা. মাহফুজুর রহমান মিয়া বলেন, বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সর্বশেষ - সর্বশেষ সংবাদ