নাজমুল হাসান নিরব,ফরিদপুর চরভদ্রাসন থেকেঃ ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা গাজীরটেক ইউনিয়নরে চরঅযোধ্যা ঢালার পাড় গ্রামের শেখ সালামের ছেলে শেখ সিদ্দিক (৩০) এর দ্বিতীয় বিয়ের জন্য বাড়ীতে অনুষ্ঠান চলাকালে রবিবার দুপুর ২ টায় স্ত্রী তানজিলা আক্তার (২২)কে বেধড়ক পিটিয়ে গুরুতর জখম অবস্থায় শ্বশুর বাড়ী থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আহত গৃহবধু চরভদ্রাসন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ের অনুষ্ঠান চলাকালে রান্না-বান্না ও বরের সাজগোজ শুরু হলে গৃহবধু তানজিলা বিয়ে বন্ধ করার জন্য শ্বশুরালয়ের অভিভাবকদের হাতে পায় ধরতে শুরু করেন। এ সময় গৃহবধু তানজিলার স্বামী শেখ সিদ্দিক (৩০), দেবর শেখ রুবেল (২৫) ও শ্বাশুরী সামেলা বেগম (৫০) মিলে কোলের কন্যা শিশু সন্তান সামিয়া আক্তার (২)কে ছিনিয়ে নিয়ে গোপন করার পর গৃহবধুকে কিল ঘুষি ও লাথি মারতে মারতে বাড়ী থেকে বের করে দিয়েছে। এ খবর শুনে উপজেলা সদর ইউনিয়নের আঃ গফুর মৃধা ডাঙ্গী গ্রামের গৃহবধুর পিতা আনোয়ার আলী মোল্যা ও মাতা ফিরোজা বেগম ছুটে গিয়ে আহত অবস্থায় মেয়েকে উদ্দার করে চরভদ্রাসন হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছেন। রবিবার দুপুরে হাসপাতাল বেডে শুয়ে গৃহবধু তানজিলা আক্তার আর্তনাদ করেন “ আমি কিছুই চাই না, আমার মেয়েটিকে কোলে ফিরিয়ে দিন ভাই”।
একই সময় হাসপাতালে বসে স্বামী শেখ সিদ্দিককে ফোন দিলে সে এ প্রতিবেককে জানায়, “ তানজিলাকে আমার ভালো লাগে না, তাই আমি দ্বিতীয় বিয়ে করতেছি। মারধরের কথা স্বিকার সে আরও বলে, প্রায় সাড়ে তিন মাস আগে আমি তানজিলাকে তালাক দিয়েছি, তালাম প্রাপ্ত স্ত্রী আমার বাড়ীতে থাকার কোনো অধিকার নাই বিধায় তাকে বাড়ী থেকে বেড় করে দিয়েছি”।
হাসপাতালে শুয়ে নির্যাতিত গৃহবধু জানান, প্রায় ছয় বছর আগে উপজেলা সদরে রোকন উদ্দিন উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে দশম শ্রেনীতে অধ্যায়নরত অবস্থায় তানজিলা আক্তারের সৌদী প্রবাসী ওই ছেলের সাথে বিয়ে হয়। তানজিলা গরিব কৃষকের মেয়ে বলে বিয়ের পর থেকেই শ্বশুরালয়ের বিভিন্ন নির্যাতন সহ্য করে আসছিল। গত দু’বছর আগে তার একটি কন্যা সন্তান হয়। স্বামী বিদেশ থেকে বাড়ী ফিরে আসার পর পার্শ্ববতী ছিটাডাঙ্গী গ্রামের এক মেয়ের সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে এবং স্ত্রী তানজিলাকে সন্তান সহ তার পিতৃালয়ে বসবাস করতে বাধ্য করেন। রবিবার সকালে স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করতে চলেছে থবর শুনে তানজিলা শিশু সন্তানকে নিয়ে শ্বশুরালয়ে ওঠেন এবং বিয়ের অনুষ্ঠান বন্ধের জন্য অভিভাবকদের হাতে পায়ে ধরতে শুরু করেন। এ সময় স্বামী, দেবর ও শ্বাশুরী মিলে তাকে বেধড়ক পিটিয়ে বাড়ী থেকে বের দেয়। এ ব্যপারে চরভদ্রাসন থানায় একটি মামলার প্রস্তুতী চলছে বলে আহত গৃহবধু জানান।