এমপি ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লার ডানহাত, সাবেক কাউন্সিলর রজ্জব হোসেনের জামাই, কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েও অক্ষত
রাজু আহমেদ │ ঢাকা │১৫|২০২৫|
“গুলি করে সব কয়টারে আজ শেষ করে দিমু!”—এভাবেই আওয়ামী লীগের নেতার মেয়ের জামাই মো. সোহেল প্রকাশ্যে অস্ত্র হাতে ছাত্রজনতার উপর হামলা চালান। ২০২৫ সালের ৪ আগস্ট মিরপুর অরজিলান ১০ নম্বর সিএনজি পাম্পের উল্টো পাশে, চাইনিজ রেস্টুরেন্ট জিনজিয়ানের সামনে ঘটে এ ঘটনা।
স্থানীয়রা জানান, ওইদিন সোহেল সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে হামলায় অংশ নেন এবং গুলিবিদ্ধ হন অন্তত ১০ জন ছাত্রজনতা কর্মী।
রূপনগর থেকে কোটি টাকার মালিক, রূপনগর থানার সামনে ঝিলপাড় বস্তি, অটোরিকশা ও গ্যারেজ, মাদক ব্যবসা ও ভুমি দখল—সবই দীর্ঘদিন ধরে নিয়ন্ত্রণ করতেন জামাই সোহেল। অল্প বয়সে ও অল্প সময়ে তিনি প্রায় দেড়শো কোটি টাকার মালিক বনে যান। তার শ্বশুর হাজি রজ্জব হোসেন ছিলেন একসময় কুখ্যাত ছিনতাইকারী। পরে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুক্ত হয়ে তিনি শত শত কোটি টাকার মালিক হয়ে ওঠেন।
৬ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর এবং রূপনগর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি রজ্জব হোসেনের মেয়ের জামাই সোহেল দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা-১৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লার ডানহাত হিসেবে কাজ করেছেন। ফলে রাজনৈতিক ছত্রছায়া তার দাপটকে আরও শক্তিশালী করেছে।
হত্যার দায় থেকেও অক্ষত। ছাত্রজনতা হত্যার মতো ভয়াবহ অভিযুক্ত হয়েও সোহেল ও তার শ্বশুর হাজি রজ্জব এখনো বহাল তবিয়তে আছেন। আশ্চর্যের বিষয় হলো—শেখ হাসিনা পতনের পর সারাদেশে ছাত্রজনতা হত্যাকারী, অগ্নিসংযোগকারী ও নির্যাতনকারীদের বাসা-বাড়িতে ভাঙচুর হলেও রজ্জব হোসেন ও এমপি ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লার বিলাসবহুল বাড়ি বা গাড়িতে কোনো আঘাত আসেনি।
খুনি জামাই সোহেলকেও আটক করা হয়নি। এখনো পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযান বা গ্রেপ্তারের খবর মেলেনি।
এলাকায় অটল দাপট
এলাকাবাসীর ভাষ্য, হত্যা করেও সোহেল ও রজ্জবের বাহিনী দাপটের সঙ্গে টিকে আছে। সোহেলের নামে থাকা অর্থনৈতিক সাম্রাজ্য, রূপনগরের ঝিলপাড় বস্তি থেকে শুরু করে বিভিন্ন ব্যবসা-বাণিজ্যে বিস্তার লাভ করেছে।
তাদের সরল প্রশ্ন—
“খুনি জামাই সোহেলকে কেন এখনো গ্রেপ্তার করা হলো না? হত্যার পরও রজ্জব বাহিনী ও জামাই বাহিনী দাপটের সঙ্গে চলাফেরা করছে কেন?”