শরীয়তপুর প্রতিনিধি:
লিবিয়া থেকে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি যাওয়ার পথে নৌকাডুবিতে মৃত্যুবরণ করা উত্তম দাসের মরদেহ শরীয়তপুরে তার পরিবারের কাছে পৌঁছেছে। মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার দক্ষিণ চাকধে আনা হয় মরদেহটি। এসময় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
লাশ পৌঁছানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নড়িয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম মঞ্জুরুল হক আকন্দ।
উত্তম দাস (২৫) উপজেলার ভূমখাড়া ইউনিয়নের দক্ষিণ চাকধ গ্রামের গৌতম দাসের ছেলে। দুই ভাইর মধ্যে উত্তমই বড়। তিনি স্থানীয় একটি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়ে গত বছর স্থানীয় আক্কাছ দালালের মাধ্যমে লিবিয়া যায়। সেখান থেকে ইতালি যাওয়ার পথে নৌকাডুবিতে তার মৃত্যু হয়।
নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত বছর (২০১৮ সালের) রমজান মাসে উত্তম দাসসহ নড়িয়ায় আরও ১০-১২ জন যুবক ওই দালালের হাত ধরে লিবিয়া যান। সেখান থেকে নৌকায় করে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি রওনা হন। গত ১১ মে রাতে অভিবাসীবাহী নৌকাটি তিউনিসিয়ার উপকূলে ডুবে যায়। নিখোঁজ হন উত্তম দাসসহ নড়িয়ার যুবকরা। দুই মাস নিখোঁজ থাকার পর গত বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) পরিবার সরকারিভাবে জানতে পারে উত্তম দাসের লাশ পাওয়া গেছে। পরে মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) সকালে তিউনিসিয়া থেকে উত্তম দাসের মরদেহ শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে পৌঁছে। পরে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে শরীয়তপুরের গ্রামের বাড়িতে উত্তমের মরদেহ নিয়ে আসে স্বজনরা। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বাড়ির পাশের শশ্মানে উত্তমের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
এসময় উত্তমের মা কল্পনা রানী দাস ছেলের শোকে বিলাপ করতে করতে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। উত্তমের বাবা গৌতম দাস বলেন, ছেলের লাশ পাওয়া গেছে এমন খবর প্রশাসন থেকে আমাদের জানানো হয়েছিল। আমরা প্রথমে বিশ্বাস করিনি। শেষবারের মতো ছেলের মুখটা দেখতে পেলাম। যারা আমার ছেলেকে প্রলোভন দেখিয়ে ইতালি পাঠানোর নাম করে নৌকায় তুলেছে, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক কাজী আবু তাহের বলেন, তিউনিসিয়ার উপকূলে অভিবাসীবাহী নৌকা ডুবিতে মৃত্যুবরণ করে উত্তম দাস। তার মৃত্যুর বিষয়ে পরিবারকে জানানো হয়েছিল। ঘটনাটি খুবই বেদনাদায়ক। জেলা প্রশাসন নিহতের পরিবারকে সব ধরনের সহায়তা দেবে।