বুধবার , ২৪ এপ্রিল ২০১৯ | ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
  1. অপরাধ
  2. অর্থনীতি
  3. আইন ও আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. খেলাধুলা
  6. জাতীয়
  7. তথ্য-প্রযুক্তি
  8. ধর্ম
  9. বিনোদন
  10. বিশেষ সংবাদ
  11. রাজধানী
  12. রাজনীতি
  13. লাইফস্টাইল
  14. শিক্ষা
  15. শিল্প ও সাহিত্য

বিহারী মালিকের লাথিতে দাঁত পড়ে যায় মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের

প্রতিবেদক
bangladesh ekattor
এপ্রিল ২৪, ২০১৯ ৪:৫৮ পূর্বাহ্ণ

বিহারী মালিকের লাথিতে দাত পড়ে যায় মুক্তিযোদ্ধার সন্তানেরঃ

বাংলাদেশ একাত্তরঃ রাজধানীর ব্যস্ত সড়কে চলতে গিয়ে হঠাৎ  কাভার্ডভ্যানের সঙ্গে ধাক্কা লেগে দাগ পড়ে যায় দামী জীপ গাড়ীর। গাড়ি থেকে নেমে ক্ষতির পরিমাণ দেখতে সড়কের পাশে সাইড করে বসে পড়েন চালক (মুক্তিযোদ্ধার সন্তান) জামাল মোল্লা। একই সময় বিহারী (নন বাঙ্গালী) গাড়ির মালিক ঈগল গুল কোম্পানির চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন জনি গাড়ি থেকে নেমে বাইরে বের হয়ে এসে সজোরে চালকের মুখ ও মাথা বরাবর লাথি মারেন।দুপুরে অনাহারে থাকা চালকের সঙ্গে সঙ্গেই চারটি দাঁত পড়ে যায়, নড়বড়ে হয়ে যায় আরো ১৪টি দাঁত! ফ্যাকচার হয় মাড়ির নিচে হাড়েও।জামাল পরে কিছুটা সুস্থ হয়ে বিচার না পেয়ে প্রভাবশালী (নন বাঙ্গালী) বিহারীর আত্তীয় স্বজনের কাছে। পরে পল্লবী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

এ ঘটনায় মোজাম্মেল হোসেন জনির বিরুদ্ধে পল্লবী থানায় মামলা করেছেন আহত ও ক্ষতিগুরুস্থ গাড়ী চালক জামাল। তবে ঘটনা এখানেই থেমে যায়নি। মামলা করায় রিতিমত প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন চালক জামাল মোল্লা। এ বিষয়ে পল্লবী থানায়  আরও একটি সাধারন ডায়রী করেন, তাতে ২জন হুমকি দাতার মোবাইল নাম্বার ও নাম রয়েছে।

ভুক্তভোগী জামাল বলেন, গত ২৫শে মার্চ দিনে কক্সবাজার থেকে ফেরার পথে রাজধানীর কালশী লোহার ব্রিজ এলাকায় পৌঁছালে রাত আনুমানিক ৯টার দিকে একটি কাভার্ডভ্যানের সঙ্গে হালকা চাপা খায় আমাদের জীপ গাড়ী। এতে গাড়িতে সামান্য দাগ পড়ে।গাড়ির ক্ষতির অবস্থা দেখতে আমি গাড়ি থেকে নেমে রাস্তার পাশে বসে পড়ি। এ সময় গাড়ি থেকে নেমে  আমার মুখে লাত্থি মারেন মোজাম্মেল হোসেন জনি।
গাড়ি চালক জামাল আরো বলেন, মুখে লাথি মারলে আমার ৪টি দাঁত পড়ে যায়, মুখ থেকে রক্ত বের হতে থাকে। আহত অবস্থায় আমাকে টেনে-হিঁচড়ে গাড়িতে তুলে মিরপুরের প্যারিস রোডে তার (জনির) শ্বশুরবাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে আমাকে এলোপাতাড়ি ভাবে মারধর করে ও বুকে পিস্তল ঠেকিয়ে হুমকি দেওয়া হয়। স্যার বলে, তোর মত ছোটলোক কে জানে মারলে মাত্র ১লাখ খরচ করলে সব শেষ। তুই আমার কোটি টাকার গাড়ী নষ্ট করছিস।

একপর্যায়ে  (জনি) আমার বুকে লাথি মারলে আমি অজ্ঞান হয়ে পড়ি। মৃত ভেবে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যান তিনি। রাত ১১টার দিকে জ্ঞান ফিরলে দেখি, আমি রক্তাক্ত অবস্থায় প্যারিস রোডের পাশে পড়ে আছি। পরে এক রিক্সা চালকের সাহায্য নিয়ে পূরবী সিনেমা হলের সামনে আসি। আমি বাসায় যোগাযোগ করি ও হাসপাতালে ভর্তি হই। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান, অথছো যারা ১৯১৭ সনে পাকিস্তানের হয়ে দালালী করেছিলো তারাই আবার এদেশের কিছু রাজাকারের সাথে সম্পর্ক করে এদেশে থেকে যায়। কিন্তু ভাগ্যের কি পরিহাস, এখনো আমরা তাদের কাছে মার খেয়ে যাচিছ। তারা দামী দামী গাড়ি বাড়ীতে থেকে আমাদের কে ভাঙ্গালীর বাঁচ্চা সুকরের বাঁচ্চা বলে গালিগালাজ করে।
জামাল আরো বলেন, প্রায় ১মাস যাবৎ আমি ঢাকা ডেন্টাল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলাম। কিছুটা সুস্থ হয়ে গত ২১শে এপ্রিল বিহারী  মোজাম্মেল হোসেন জনির বিরুদ্ধে পল্লবী থানার মামলা নং- ৪৮/২৩৮ দায়ের করি।

আহত গাড়ী চালক বলেন, মামলা করায়  বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মাধ্যমে আমাকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য ভয়ভীতি ও হুমকি ধামকি দেয়। মামলা তুলে না নিলে আমাকে মেরে বট গাছের সাথে ঝুলিয়ে রাখিবে বলে হুমকি দেয়। কখনো ডিবি, কখনো পুলিশ, কখনো রাজনৈতিক দলের ব্যক্তি পরিচয় দিয়ে। আমি বিচার চাই। আমি ক্ষতিপূরণ চাই। আমি আর জীবনে গাড়ী চালিয়ে কাজ করে খেতে পারবোনা। জামাল বলেন, আঘাতের কারনে আমি শক্ত কোন খাবার খেতে পারিনা তরল খাবার খেয়ে বাকি জীবনটা পার করতে হবে। প্রায় ১লাখ খরচ হয়ে গেছে এখন টাকার অভাবে চিকিৎসাও করতে পারছিনা।খোজ খবর নিয়ে জানা যায়, গাড়ী চালক জামালের স্ত্রী ও ছোট ছোট ৪টি সন্তান রয়েছে। চোখের সামনে বাবার এমন অবস্থা দেখে ধুকে ধুকে কাতরাচ্ছে তারা। এদিকে, গাড়ি চালক জামালের অভিযোগ অস্বীকার করে ঈগল গুল টোবাকো কোম্পানির চেয়ারম্যান, মোঃ মোজাম্মেল হোসেন জনি বলেন,   আমি লাথি  মারিনি। গাড়ির ক্ষয়ক্ষতি দেখতে গিয়ে জামাল অজ্ঞান হয়ে যায়। তখন তার দাঁত পড়ে যায়। মামলার অভিযোগ বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।

এ বিষয়ে পল্লবী থানার  এসআই  মোঃ কামরুল হাসান উজ্জ্বল (মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা) বলেন, শুনলাম কোর্ট থেকে জামিন নিয়েছেন আসামি। আমি জামিনের কাগজ দেখিনি। তবে জামিন না হওয়া পর্যন্ত গ্রেফতার করতে পারি।
তিনি আরও বলেন, জনি পালিয়ে বেড়াচ্ছে। বাসায় যায় না। যতো বড় কোম্পানির মালিকই হোক না কেন আমরা তাকে আইনের আওতায় এনে দ্রুত তাকে গ্রেফতার করা হবে।

সর্বশেষ - রাজনীতি