(বাংলাদেশ একাত্তর) সাদ্দাম হোসেন মুন্না। ঢাকার দুই সিটি ভোটে মেয়রদের পাশাপাশি প্রচারে ব্যস্ত কাউন্সিলর প্রার্থীরাও। প্রচারে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের ভিড়ে বিএনপি সমর্থিত ও বিদ্রোহী প্রার্থীরাও বিভিন্ন স্থানে শান্তিপূর্ণ ভাবেই মিছিল মিটিং করছে।
দেখা গেছে, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামীলীগের ভিতরেই কোণঠাসা আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা। কোণঠাসা বর্তমানে অন্যদলের থেকে না করলেও আওয়ামীলীগের নিজেরা নিজেদের ঠাসাঠাসিতে অন্যদলের রাস্তায় প্রচারে আপাতত যানজট নেই। ২নং ওয়ার্ডে আওয়ামীলীগের সমর্থিত প্রার্থী কদম আলী মাতবর, বিএনপির সমর্থিত সাজ্জাদ হোসেন। স্বতন্ত্র- ইসমাইল হোসেন বেনু বেশ আটঘাট বেঁধেই নির্বাচনীয় প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।
৩নং ওয়ার্ডের আওয়ামীলীগের সমর্থিত প্রার্থী জিন্নাত আলী মাতবরের তেমন কোনো মিটিং মিছিল বা গণসংযোগ না দেখা গেলেও একি ওয়ার্ডের বিভিন্ন স্থানে উঠান বৈঠক, মিছিল মিটিং করেছেন বিদ্রোহী প্রার্থী সাবেক কাউন্সিলর কাজী জহিরুল ইসলাম মানিক। একি ওয়ার্ডে বিএনপির সমর্থিত হাজ্বী আবু তৈয়ব , বিদ্রোহী প্রার্থী পল্লবী থানা ছাত্রদলের জামাল হোসেন বাপ্পী।
অন্যদিকে ৬নং ওয়ার্ডের আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থী সাবেক ছাত্রনেতা ও রুপনগর থানা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক সালাউদ্দীন রবিন ব্যাপক প্রচার প্রচারণায় সবার থেকে এগিয়ে। ওয়ার্ডের বিভিন্ন অলিগলিতে উঠান বৈঠক সহ গণসংযোগ করছে। পরিচিত অপরিচিত ভোট চাইছেন মানুষের ঘরে ঘরে। সালাউদ্দীন রবিনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে ৬নং ওয়ার্ডের জনগনের দায়ীত্ব পালন করতেই মনোনীত করেছেন। আমি ১০০% আশাবাদী সাধারণ জনগন নৌকা ও নৌকার মনোনীত প্রার্থীকেই তারা জয়ী করেই ঘরে ফিরবেন। সময় হলেই জোয়ারের পানি আপনা আপনিই নেমে দুরে চলে যাবে। তিনি বলেন, আমি কোনো চাঁদাবাজী, দখলবাজী, মাদক ব্যবসা ও বস্তির টাকা আত্মসাৎ এর সাথে যুক্তনা। দল ও গোয়েন্দা রিপোর্ট অনুযায়ী আমাকে মনোনীত করেছে যা অনেকেরই ভালো লাগছেনা।
ঢাকা উত্তর আওয়ামী যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তাইজুল ইসলাম চৌধুরী বাপ্পীও ৬নং ওয়ার্ডেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নির্বাচনের এলাকায় পোষ্টারিং সাটিয়ে ব্যাপক আলোচনায় তার সাথে যোগাযোগ করা হলে বরাবরের মতই তিনি বলেন আমি ব্যস্ত পরে কথা বলবো। বিএনপির মনোনীত প্রার্থী মাহফুজ হোসাইন খান সুমন তিনি জোরেশোরে নির্বাচনীয় প্রচার প্রচারণা করছে তার মিছিলের শোডাউন দেখা না গেলেও ঘরোয়াভাবে চলছে তার ভোটের প্রচার।
সরেজমনি ঘুরে দেখা যায়, সব থেকে আওয়ামী লীগের ভিতরেই কোণঠাসা আওয়ামী লীগ। নিজেদের ভিতরে নিজের শক্তি জানান দিতে একে অপরের অপপ্রচার করতে মাঠে ঘাটে উঠান বৈঠক। একি চিত্র ৫নং ওয়ার্ডে । আওয়ামীলীগের সমর্থিত প্রার্থী আব্দুর রউফ নান্নু তার প্রতিদ্বন্দ্বী পল্লবী থানা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল রানা এলাকার বিভিন্ন স্থানে উঠান বৈঠক, শোডাউন, ঘরোয়া বৈঠক করছে। একি ওয়ার্ডে আরও আছে পল্লবী থানা আওয়ামীলীগের প্রচার সম্পাদক আনোয়ার হোসেন রনি (পানি রনি) নিজে প্রার্থী হিসেবে জানান দিতে লাল মাটিয়া শেখ কামাল স্কুলের সামনে সড়ক দখল করা অস্থায়ী (চোরাই মোবাইল মার্কেটের আশপাশে তার কিছু পোষ্টার দেখা যায়। ৫নং ওয়ার্ডে বিএনপির সমর্থিত প্রার্থী বুলবুল মল্লিক এর নির্বাচনীয় কোনো সাড়া সব্দ না পেলেও কিছু পোষ্টারিং লক্ষকরা গেছে। একি ওয়ার্ডে বিএনপির সমর্থিত সংরক্ষিত ২-৩-৫ মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী মেহেরুন্নেসা হক ও আওয়ামীলীগ সমর্থিত সালমা কামল তারাও নির্বাচনীয় প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
তবে স্থানীয় নেতাকর্মীরা ধারনা করছে যারা দলীয় নিময়নীতির নির্দেশ অমান্য করে দলের ক্ষতি করছে ও হাইকমান্ড এর নির্দেশ ভেদ করে নির্বাচনে অংশ গ্রহন করছেন তারা অনেকেই ১লা ফেব্রুয়ারীর পর দল থেকে ঝড়ে পড়বে।
উত্তরে এখন পর্যন্ত অন্য কোন ওয়ার্ডে রক্তপাতের খবর পাওয়া না গেলেও ৫নং ওয়ার্ডে আ.লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে রক্তপাতের ঘটনা ঘটেছে। আব্দুর রউফ নান্নুর কর্মী শান্তকে বাউনিয়াবাধ ডি-ব্লকে রাত আনুমানিক ১০টার দিকে এলোপাতাড়ি ভাবে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়েছে দুর্বৃত্তরা। শান্তকে আহত করার কারনে নান্নুর সমর্থক গোষ্ঠী দায়ী করছেন প্রতিক্ষক পল্লবী থানা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল রানা সহ তার লোকজনকে। শান্ত এখন মৃত্যুের সাথে লাড়াই করছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাউনিয়াবাধ এলকায় “জুয়েল বাহিনী”র বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সভা করা হয়।
প্রতিবাদ সভার সার্বিক সহযোগিতা করেন ৫নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক খলিলুর রহমান খলিল, উক্ত প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা মহানগর উত্তরের মহিলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সাহিদা তারেক দৃপ্তি, কাউন্সিলর পদপ্রার্থী আব্দুর রউফ নান্নু, রুপনগর থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও ৬নং ওয়ার্ডের সদ্য-সাবেক কাউন্সিলর হাজ্বী রজ্জব হোসেন, পল্লবী থানা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক এস.এম. সারোয়ার আলম ও যুবলীগ, ছাত্রলীগ, কৃষকলীগ, সেচ্ছাসেবকলী নেতাকর্মী সহ অনেকে।
বক্তব্যে নান্নু বলেন, যারা দলের নির্দেশ অমান্য করে চলে তারা কোনোদিনও দলের ভালো চায় না, আমাকে দমানোর জন্যে আওয়ামীলীগের কর্মীর উপর সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে জুয়েল বাহিনী।
ঢাকা ১৬ আসনের এমপি আলহাজ্ব ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লা কে ইঙ্গিত করে বক্তব্যে দৃপ্তি বলেন, আপনি আওয়ামীলীগের এমপি হয়ে হাইকমান্ডের নির্দেশ অমান্য করে ৫-৬ ও ৩ নং ওয়ার্ডে প্রার্থী দাড় করিয়ে কাজটা ভালো করেননি এই ভুলের মাসুল আপনাকেই গুনতে হবে।