বৃহস্পতিবার , ১৭ জানুয়ারি ২০১৯ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
  1. অপরাধ
  2. অর্থনীতি
  3. আইন ও আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. খেলাধুলা
  6. জাতীয়
  7. তথ্য-প্রযুক্তি
  8. ধর্ম
  9. বিনোদন
  10. বিশেষ সংবাদ
  11. রাজধানী
  12. রাজনীতি
  13. লাইফস্টাইল
  14. শিক্ষা
  15. শিল্প ও সাহিত্য

পুলিশের সহযোগিতায় নুতন জীবন পেল “মাও”শিশু কন্যা

প্রতিবেদক
bangladesh ekattor
জানুয়ারি ১৭, ২০১৯ ৩:০৯ পূর্বাহ্ণ

মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্যে, একটু সোহানু ভূতিকি মানুষ পেতে পারে না ,ও বন্ধু মানুষ,,,আমরা শুধু গানই শুনেছি বাস্তবে দেখলাম তার প্রতিফলন দেখিয়ে দিলেন দেওয়াট ফাঁড়ির ইনচার্জ মাসুদুর রহমান।
বাংলাদেশ একাত্তর.কম চট্টগ্রাম প্রতিনিধিঃ কামরুল ইসলাম।

জানা যায়, সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ এলাকার ডোবা পুকুর এলাকার আমিন কলোনিতে এঘটনা ঘটে। গত ৭ জানুয়ারি নগরীর আগ্রাবাদ বাদামতলী মোড়ের গ্রামীণ ফোন সেন্টারের রাস্তার পাশে কন্যা সন্তান প্রসব করা মানসিক ভারসাম্য লোপ পেতে থাকা রোজিনার কথা বলছিলাম।

সারাদিন নগরীর এপাশ-ওপাশ ঘুরঘুর করা রোজিনা সন্ধ্যায় ঠিকানা হয়ে উঠে আগ্রাবাদের বাদামতলী মোড়ের সামনের ফুটপাত।
অন্যদিনের মতো সন্ধ্যা সাতটায় ওই স্থানে গ্রামীণ ফোন সেন্টারের সামনে কন্যা সন্তান প্রসব করে কাতরাচ্ছিলেন। কন্যা সন্তান পৃথিবীর মুখ দেখানোর পরে প্রসব ব্যথার আর্তনাদে নগরীর ব্যস্ত সময়ে অনেকের চোখ আড়াল করলেও এগিয়ে আসেন এক পুলিশ সদস্য।
তিনি অতি দ্রুত মা ও কন্যা সন্তানকে উদ্ধার করে নিয়ে যান আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসার যাবতীয় খরচ বহন করে সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে আনেন মাও মেয়েকে। চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন দেরি হলে মা-মায়ের খারাপ কিছু হতে পারতো।
ফুটপাত থেকে প্রসূতি মাকে উদ্ধারের খবর কয়েকটি গণমাধ্যমে উঠে আসলে প্রশংসিত হতে থাকেন দেওয়াট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ও উপপরিদর্শক মাসুদুর রহমান।
মানবিক কাজের স্বীকৃতিপত্রস্বরুপ তাকে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কৃত করেন চট্টগ্রাম পুলিশ কমিশনার মাহবুবুর রহমান। কাজের মূল্যায়ন আর প্রশংসার কুড়িয়ে নেয়া মাসুদের দায়িত্ব যেন আরোও শতগুন বেড়ে যায়। নেমে পড়েন মা ও সন্তানের পুনর্বাসনের কাজে।
এদিকে, গত ৮ জানুয়ারি মা ও শিশু হাসপাতালে মোঃ ইসমাঈল নামের এক যুবক নিজেকে রোজিনার স্বামী দাবি করেন। পরে যাচাই-বাছাই শেষে তার হাতে রোজিনাকে তুলে দেন তিনি। সবমিলিয়ে পরিবারটিকে ভরণপোষণের জন্য নতুন ঘর ভাড়ার ব্যবস্থা করে দেন।
কন্যার ও মার জন্য কাপড়, কনকনে শীত নিবারণ জন্য গরম কাপড়ের ব্যবস্থা করেছেন। সোমবার সন্ধ্যায় ওই ভাড়া বাড়িতে মাসুদুর রহমানকে দেখতে যাওয়ার পরে  আশেপাশের শত শত লোকজন ভিড় করে রোজিনার বাড়িতে। সন্তানকে নিয়ে কখনও দুধ পান করাচ্ছেন কখনও বা তার সাথে কথা বলছেন।
রোজিনা জানান, নগরীর আগ্রাবাদের একটি পোশাক কারখানায় কাজ করার সুবাদে স্বামী ইসমাইলের সাথে পরিচয় হয়। বাবা-মা’র অমতে তাকে বিয়ে করেন। তবে গত তিন বছরের মধ্যে তাদের দাম্পত্য জীবন ভালো টানা পড়া চলছিল।
গত সাত মাসে বিচ্ছেদ হওয়ার উপক্রম হয়। বর্তমানে স্যার, মাসুদ সাহেবের সহায়তায় ভালো আছি। দাম্পত্য জীবনে দুই মেয়ে এক ছেলের কথা জানালেও তাদের বিষয়ে কিছু জানে না রোজিনা।

দেওয়াট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মাসুদুর রহমান কোলে নবজাতক শিশু।

কন্যা সন্তানটি মাসুদের কোলে নেয়ার পরে হাত দিয়ে খুনসুটি শুরু করেন। মাসুদুর রহমান অনেকটা উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে বলেন, একজন নাগরিক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। চেষ্টা করেছি কিছু করার। পরিবার, সন্তান সুস্থ ও নিরাপদ থাকলে ভালো লাগবে। তার স্বামীকে তরকারি বিক্রির জন্য ভ্যান গাড়ি ক্রয় করে দিব। এর পাশাপাশি কেউ সহায়তা করতে চাইলে তার কাছে পৌঁছে দিব।
এবিষয়ে এলাকাবাসী বলেন, বাংলাদেশের প্রতি জেলায় একটি করে যদি মাসুদুর রহমানের মত পুলিশ অফিসার থাকে তাহলে আমাদের মত সাধারণ মানুষের জান মালের নিরাপ্তা নিশ্চিত হবে। এই দেশে এখনো সৎ পুলিশ অফিসার আছে সবাই ষুষ খায়না। আল্লাহ তালা এই পুলিশ অফিসারের পরিবারের সবাইকে যেন সুস্থ ও শান্তিতে রাখে। যারা মানুষের বিপদে এগিয়ে আসে তাদের বিপদে আল্লাহ নিজে এগিয়ে আসবে।

সর্বশেষ - রাজনীতি