বৃহস্পতিবার , ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন ও আদালত
  3. আওয়ামীলীগ
  4. আন্তর্জাতিক
  5. খেলাধুলা
  6. জাতীয়
  7. তথ্য-প্রযুক্তি
  8. ধর্ম
  9. বি এন পি
  10. বিনোদন
  11. বিশেষ সংবাদ
  12. রাজধানী
  13. লাইফস্টাইল
  14. শিক্ষা
  15. শিল্প ও সাহিত্য

পচা আলুতেই আসল ঘি

প্রতিবেদক
bangladesh ekattor
ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৯ ১:১৪ অপরাহ্ণ

মীর আলাউদ্দিন  ঃ আলু পচিয়ে ঘি এর ফ্লেভার দিয়ে হচ্ছে আসল ঘি,কোম্পানীর মালিকদের জেল জরিমানা হলে দ্বিগুন উৎসাহে বাড়িয়ে দেন ব্যবসা,কাগজপত্র না থাকলেও প্রতিষ্ঠানের সেল্টার দিচ্ছে স্থানীয় পুলিশ বাহিনী ও সরকার দলীয় ক্যাডাররা,চোখে কাঠের চশমা লাগিয়ে নিজেদের পকেট ভারি করছে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ।

ডালডা, সাবান তৈরির সোডা, পামওয়েল, বিষাক্ত কেমিক্যাল, আর আলু পচিয়ে ঘি এর ফ্লেভার মিশিয়েই তৈরি হচ্ছে আসল ঘি।  বহু পুষ্টি গুনের খাবার ঘি। ১০০ বছরেও নষ্ট হয় না,এর্নাজি বাড়ায়, হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, বহু প্রচীন কাল থেকেই পজিটিভ ফুড হিসেবে পরিচিত এই ঘি। আর সেই ঘি নিয়েই ধান্দাবাজির রমরমা ব্যবসা খুলে বসেছে স্বনামধন্য বড় বড় কোম্পানী সহ অখ্যাত কুখ্যাত কোম্পানী গুলি। অধিকাংশ বড় বড় বা ছোট কোম্পানীর ঘি এর বোয়মে বা কৈৗটাই ঘি লেখা দেখে কিনলেও অনেক ক্ষেত্রেই ঘি এর স্বাদ পাওয়া তো দুরের কথা ঘি এর গন্ধও পাওয়া যায় না। অনেকে আবার নতুন কৈৗশলে ঘি বানিয়ে বাজারে ছাড়ছেন। আর এতে তাদের লাভের পরিমানটাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। জানা যায় রাজধানীসহ সারা দেশে প্রায় ১১০০০ নকল ঘি তৈরির কারখানা রয়েছে। যারা এই নকল ঘি সারা দেশে সয়লাব করে দিচ্ছে। মাঝে মাঝে লোক দেখনো দু চারটি অভিযান করে তাদের বিরুদ্ধে জেল জরিমানা করলেও একটি দিনের জন্য বন্ধ হয় না এই ভেজাল ঘি তৈরির কারখানা। জেল জরিমানা হলেই বাড়িয়ে দেন ঘি এর দাম জনগণের কাছ থেকে ওসুল করে নেন জারমানার টাকা। সরজমিনে রাজধানী মিরপুর ১২ পল্লবী এলাকায় একটি ঘি তৈরির কারখানায় যেয়ে দেখা যায় অস্বাস্থ্যকর নোংরা পরিবেশে তৈরী হচ্ছে ঘি। কিন্তু ঘি যেখানে তৈরী করে সেই বাড়ির পুরো জায়গা খুজেও মিলেনা ঘি তৈরির কোন উপাদান পাওয়া যায় শুধু বস্তা বস্তা পচা আলু আর ঘি এর ফ্লেভার এবং বাহারী নামের বিভিন্ন অখ্যাত কুখ্যাত কোম্পানির ঘি বাজারজাত করনের কৈৗটা। শ্রমিকদেও কেউ কেউ ব্যস্ত রয়েছেন বড় ডেকচিতে পচা আলু জ্বাল দেওয়ার কাজে। কেউ কেউ আবার বড় বড় ড্রামে ঘি এর ফ্লেভার আর কিছু কেমিক্যাল মিশাতে ব্যস্ত। ১৫/২০ জন শ্রমিক অনেক ব্যস্ত রয়েছেন ঘি  এর মোড়ক লাগাতে আর বাজারজাতকরনের সব কিছু শেষ করতে। আশে পাশে বসবাসরত এলাকা বাসি বলেন এখানে যে আজ দশ বছর ঘি ফ্যাক্টারি আছে আজই জানলাম। পাশের বাসার ভাড়াটিয়া হোসেন আলী বলেন এই বাসায় তো সারাদিন তালা বদ্ধই থাকে তবে মাঝে মাঝেই অনেক রাতে লোকজনের শব্দ শোনা যায়। ঘি ফ্যাক্টারির বিষয় বললে উনি বলেন স্যার ঘি ফ্যাক্টারি থাকলে তো আমরা জানতাম আমরা কখনোই কোন দুধ বা এমন কোন উপাদান আসতে দেখিনি যা ঘি তৈরি তে লাগে, তবে হা আমরা মাঝে মাঝেই ভ্যান বোঝাই আলু আসতে দেখি। আমরা তো ভেবেছিলাম হয়তো কোন হোটেল এর ব্যবসা আছে ঘি ফ্যাক্টারি রয়েছে আজ দশ বছর তা কখনোই জানতাম না। ঠিক তার উল্টো পাশেই রয়েছে বাংলাদেশের নামকার ঘি বাঘ বাড়ির ঘি তৈরির কারখানা । সেখানে সরজমিনে যেয়ে দেখা যায় কোন রকম ঝুকি নিয়ে দাড়িয়ে থাকা একটি পুরনো জরাশীর্ন বাড়িতেই তৈরি হয় স্বনামধন্য বাঘাবাড়ির নামকরা সেই ঘি। বাড়ির মুল ফটক দিয়ে ডুকতেই নাকে আসে বিকট দূর্গন্ধ প্রায় বমি আসার মত অবস্থা। বাড়ির ভিতরে বাইরে সবখানেই নোংরা সেঁতসে্যঁতে পরিবেশ শুধু একটি রুম ছাড়া। বাইরে থেকেই দেখা যায় ভিতরে এলোমেলো ভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে অসংখ্য নামীদামী কোম্পানির বিভিন্ন সাইজের ডিব্বা। বাইরে লোকজন দেখেই হতদন্ত হয়ে ছুটে আসে ভেতরে কাজ করতে থাকা এক শ্রমিক। কথাবার্তার একপর্যায়ে সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার সাথে সাথেই তিনি বলেন ভাই আমাদের এখানে প্রবেশ নিষেধ এখানে প্রবেশের জন্য পল্লবী থানা পুলিশ ও হাজ্বী রজ্জবের অনুমতি নিয়ে আসতে হবে। তারা কেন বড় বড় কোম্পানির নামে ভেজাল ঘি বাজারজাত করছে সে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন প্রতি মাসে থানা পুলিশ ও নেতারদের লক্ষ লক্ষ টাকা ভিক্ষা দেয় কি আপনার লগে ফাও পেচাল পারনের লাইগা। থানায় যান না হলে হাজ্বী রজ্জবের কাছ থেকে আসার লাইসেন্স নিয়ে প্রতি মাসের ১০ তারিখে দেখা করেন।নোয়াখালী লক্ষীপুরের প্রায় সব দোকানেই পাওয়া যায় ভেজাল ঘি। বিএসটিআই এর ভুয়া লোগো ও নামীদামী কোম্পানির নাম ব্যবহার কওে বাজার সয়লাব।রামগঞ্জ উপজেলার সোনপুর বাজারের ভেজাল ঘি বিক্রেতার মূল হোতা মের্সাস অনিল বণিক এন্ড সন্স এর মালিক পীযুষ বণিক,রাকিব হোসেন নাহিদ ফুড পোডাক্টস উত্তর মধ্যম হালিশহর এর বিরুদ্ধে লক্ষীপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্টেট আদালতে একটি মামলা করে বিএসটিআই। ২০১৫ সালের ২৮ শে নভেম্বর এ মামলা করেন বিএসটিআই চট্টগ্রাম এর ফিল্ড অফিসার রিয়াজ হোসেন মোল্লা।২০১৬ সালের ৪ঠা ফেব্রুয়ারি পীযুষ বনিকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আদালত। ওই বছর ১৬ ফেব্রুয়ারি পীযুষ বণিককে গ্রেপ্তার কওে পুলিশ। মাত্র ২১ দিন কারাভোগ করে জামিনে বের হয়ে আবারো দ্বিগুন উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে শুরু করে। সচেতন নাগরিকরা বলেন যদি সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহন না করেন তবে মারাত্নক স্বাস্থ্য ঝুকতে পরবে দেশের জনগণ।

সর্বশেষ - সর্বশেষ সংবাদ