অনলাইন ডেক্সঃ ফেনীর মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যা মামলায় অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলাসহ ১৬ জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামনুুর রশিদ বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। এর আগে গত ৩০শে সেপ্টেম্বর আলোচিত এ মামলার রায়ের জন্য এ দিন ধার্য করেন আদালত। রায়ের মধ্য দিয়ে ৭ মাসের মধ্যেই আলোচিত এই মামলাটির বিচারকাজ শেষ হলো। নুসরাতকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে মামলা করেন তার মা। সেই ঘটনায় ২৭শে মার্চ গ্রেপ্তার করা হয় অধ্যক্ষকে।
এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ৬ এপ্রিল অধ্যক্ষের লোকজন পরীক্ষার হল থেকে ডেকে মাদ্রাসার প্রশাসনিক ভবনের ছাদে নিয়ে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। ৫ দিন মৃত্যুর সাথে লড়াই করে ১০ই এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান নুসরাত। এই ঘটনায় সোনাগাজী মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন নুসরাতের বড় ভাই। এরপর সারাদেশে প্রতিবাদের ঝড় উঠলে জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হয়। অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলাকে প্রধান আসামি করে ১৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন পুলিশ বুরো অফ ইনভেস্টিগেশন-পিবিআই এর তদন্ত কর্মকর্তা।
হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেয় ১২ আসামি। ৯২ জন সাক্ষীর মধ্যে ৮৭ জন সাক্ষ্য প্রদান করেন। আলোচিত এই রায়কে কেন্দ্র করে নুসরাতের বাড়িসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার রয়েছে বলে জানিয়েছেন ফেনী সোনাগাজী মডেল থানার এএসআই দিদার হোসেন। অধ্যক্ষের যৌন হয়রানির বিষয়ে নুসরাতের অভিযোগ গ্রহণের সময় তার ভিডিও ধারণ করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় সোনাগাজী থানার তৎকালীন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনেরও বিচার চলছে।