বৃহস্পতিবার , ১৭ আগস্ট ২০২৩ | ১৪ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থ ও বাণিজ্য
  2. আইন ও আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. খেলাধুলা
  5. জাতীয়
  6. তথ্য-প্রযুক্তি
  7. ধর্ম
  8. বিনোদন
  9. বিশেষ সংবাদ
  10. রাজধানী
  11. রাজনীতি
  12. শিক্ষা
  13. শিল্প ও সাহিত্য
  14. সর্বশেষ সংবাদ
  15. সারাদেশ

গোপালগঞ্জে কাউন্সিলর ঝন্টুর বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়

প্রতিবেদক
bangladesh ekattor
আগস্ট ১৭, ২০২৩ ১১:৫৩ অপরাহ্ণ

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি:

গোপালগঞ্জ পৌরসভা ১নং ওয়ার্ড নব্য কাউন্সিলর জুবায়ের ইসলাম ঝন্টুর বিরুদ্ধে গাদাগাদা অভিযোগের পাহাড় জমিয়েছেন ১নং ওয়ার্ড এলাকাবাসী।

এলাকার মানুষের আপদ বিপদে পাশে পাওয়া তো দুরের কথা ফোনেও পাওয়া যায়না এই তরুন কাউন্সিলরকে। কাউন্সিলর হওয়ার পর থেকেই তার চালচলন পোশাক আশাকে অহংকারীর ছাপ স্পষ্ট। হ্যান্ডশেক করার পরক্ষণেই টিস্যু দিয়ে হাত মুছতে ভুল করেনা সুন্দর (ফর্সা) চেহেরার অধিকারী ঝন্টু। স্থানীয়রা এমন সব একাধিক অভিযোগের কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশ একাত্তর’কে।

অভিযোগ উঠে, বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের সাথে ব্যবসায়ীক আলাপচারিতা বিভিন্ন মিটিং সিটিং করার সময় পেলেও তার নির্বাচনীয় ওয়ার্ড এলাকার মানুষের নাগরিক সেবা তো দুরের কথা। কল দিলে ফোন রিসিভ পর্যন্ত করেনা তিনি। এছাড়াও অফিস সময়ে গেলেও তাকে পাওয়া যায়না।

এলাকাবাসীর অভিযোগ তদন্ত; সরেজমিনে দেখা যায়, গোপালগঞ্জ সদর পৌরসভার নবগঠি ১নং ওয়ার্ড (সাবেক ৯নং ওয়ার্ড) এলাকায় এখনো সংযোগ সড়ক বা রাস্তাঘাটের কোনো অগ্রগতি নেই। ত্রিশ চল্লিশ বছর ধরে যে ভাবে জমির উপর দিয়ে মানুষ যাতায়াত করতেন। এখনো ঠিক সেই ভাবেই চলছে সংযোগ সড়কের অভাবে এলাকাবাসী। মানুষের বাড়ীর উঠান বা জমির উপর বা দেওয়াল টপকে যাতায়াত করতে হয় এলাকাবাসীদের। রিকশা ভ্যান (চলতে পারেনা) বাইক ও শতশত মানুষ সড়ক বিহীন পথে চলছে। যে কারনে (অন্যের জমি ) হাটাচলা নিয়েও ছোট খাটো ঝগড়া লাগে প্রতিবেশীদের সাথে। না জানি কোনদিন বড় ধরনের সংঘর্ষ বাধে।

সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন পেশাজীবি মানুষ জীবনের সব সঞ্চয় দিয়ে জমি ক্রয় করে বাড়ী ঘর নির্মাণ করেছেন এই এলাকায়। ছেলেমেয়েদের মানুষের মত মানুষ করতে শহরের পাশে মাথা গুজার ঠাই ও জীবনের শেষ ঠিকানা হিসেবে ১নং ওয়ার্ড এলাকা বেছে নিচ্ছেন শতশত পরিবার। নির্মাণ সামগ্রিক কলাবাগান সড়ক থেকে ভিতরে আনতে দুই তিন গুন লেবার খরচ বেশি হচ্ছে। এখনই রাস্তা প্রয়োজন। চলাচলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে এলাকার প্রায়ই ২ হাজার পরিবার। স্কুল কলেজ ভার্সিটি মাদ্রাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা সঠিক সময়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারছেনা। বৃষ্টি হলে মাঝে মধ্যে কাঁদাপানিতে নাকানিচুবানি খাওয়া লাগে সবার।

দেখা গেছে, কলাবাগান আনেয়ার শেখের মেয়ে পলির বাসা ঘেসে কলাবাগান জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন গোলাম মোস্তফা শেখের বাড়ী হয়ে মাদ্রাসা ও এতিমখানা সামনে দিয়ে হরিদাসপুর নদীর পাড় পর্যন্ত গড়িয়েছে আঁকাবাকা পথ। অন্যদিকে সাবেক ওয়ার্ড মেম্বার চুন্ন মোল্লার বাড়ী ঘেসে হায়দার মোল্লার বিল্ডিংয়ের পাশ দিয়ে ঘোষেচর (মঠ শ্মশান)  সংলগ্ন সড়কে ঠেলে উঠেছে। এই সংযোগ সড়ক দুটি নির্মাণ কাজ হলে এলাকাবাসীর দুর্ভোগ কমে আসবে।

স্থানীয়দের সাথে আলোচনা করে সংযোগ সড়ক দুটি আপাতত মাটি বালি ইটখোয়া দিয়ে ভরার্ট হলে সুবিধা হতো  প্রায়ই দুই হাজার পরিবারের চলাচলে। পরে সরকারি বাজেটে পিচ ঢালা সড়ক সহজে হবে এমনটি প্রত্যাশা এলাকাবাসীর।

চার দিন ঘুরে: ঝড় বৃষ্টি হলে ওই এলাকার কাচা সড়কে হাঁটু সমান পানি জমে নোংরা কাঁদামাটিতে লয়লয়কার ঘটে। মশা মাছি বিষাক্ত পোকামাকড় ভনভন করে। রাস্তা ঘাট না থাকায় ১নং ওয়ার্ড কলাবাগান এলাকার বেশ কয়েকটি বাড়ীতে বিয়ের উপযুক্ত ছেলে মেয়ে থাকলেও  বিয়ে দিতে পারছেনা।

কলাবাগান নাম শুনলে অনেকেই নাক ছিটকায়। কেউ কারো বাসায় বেড়াতেও আসেনা যাতায়াতের সুব্যবস্থা না থাকায়। এছাড়া হঠাৎ কেউ অসুস্থ হলে বেঁধে যায় কান্নাকাটির রোল। সড়ক না থাকায় ভিতরে রোগী বহনকারী এ্যাম্বুলেন্স আসতে পারেনা। কলাবাগান মুল সড়কে এ্যাম্বুলেন্স রেখে বাসা থেকে রোগী কোলে বা কাঁধে করে নিয়ে চিকিৎসা সেবা দিতে হয়। এছাড়াও ঘরের বড় আসবাপত্র খাট টেবিল চেয়ার ফ্রিজ ইত্যাদি মালামাল ও কাধে করে আনা নেওয়া করতে হয়। বৃষ্টিতে হলে এলাকার মা বোনদের হাঁটাচলা করতে ভিষণ লজ্জাকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়।

কালাবাগান এলাকা স্থানীয় একাধিক ভুক্তভোগী বাসিন্দারা বলেন, যে জেলায় বঙ্গবন্ধুর জন্ম, যে আসনের বার বার এমপি শেখ ফজলুর করিম শেখ সেলিম। সেই এলাকার মানুষের এতো দুর্ভোগ। দেশের সব জায়গায় উন্নয়ন হলেও আমাদের কলাবাগানের সংযোগ রাস্তাঘাটের উন্নয়ন ঘটেনি। পৌরসভা নির্বাচনের আগে ১নং ওয়ার্ড (বর্তমান) কাউন্সিলর জুবায়ের ইসলাম ঝন্টু বহু প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন নির্বাচনে জয়ী হলে এলাকার উন্নয়ন করবে। তবে সেই কথার কোনো সত্যতা খুজে এখন পাচ্ছিনা আমরা।

তাদের আরও অভিযোগ, নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত কলাবাগান এলাকায় পা দেনননি কাউন্সিলর ঝন্টু। এমন কি রাস্তা ঘাটের কোনো পরিকল্পনা বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে স্থানীয়দের সাথে আলোচনা করেনি। কাউন্সিলর এলাকায় না আসায় আমরা রাস্তাঘাট সমস্যায় ভুগছি। আমরা কার কাছে যাবো বুঝতেছিনা। নির্বাচনের আগে পানি কাঁদা মেখেও ভোট চাইতে বাড়ী বাড়ী এসেছিলো ঝন্টু। জয়ী হওয়ার পর ঝন্টুর সেই সুন্দর চেহেরাটা আর আমরা দেখছিনা।

ফোন রিসিভ না করাসহ বিভিন্ন অভিযোগের বিষয়ে জানতে ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জুবায়ের ইসলাম ঝন্টুর ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ওপাশ থেকে ফোন রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে ১ নং ওয়ার্ড (নারী কাউন্সিলর) ফোন রিসিভ করে বলেন, আমরাও ফোনে পাইনা ভাই, কি বলবো! কিছু বলার নেই। এলাকাবাসী আমাকে কল দিলে সবাই পায়। নাগরিক সুবিধা আমার থেকে যতদুর সম্ভব দেওয়া সবটুকুই চেষ্টা করি।

কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে জানতে গোপালগঞ্জ পৌরসভা নবনির্বাচিত মেয়র শেখ রকিব হোসেনের মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও তার মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

সর্বশেষ - রাজনীতি