বাংলাদেশ একাত্তরঃ আর নয় সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিবাদে বৃহত্তর মিরপুর সাংবাদিক সোসাইটি। সাংবাদিকের ওপর হামলা বা নির্যাতন হলে কঠোর আন্দোলনের পাশাপাশি প্রয়োজনে জেলায় জেলায় মামলা দায়ের করা হবে বলে জানিয়েছে বৃহত্তর মিরপুর সাংবাদিক সোসাইটি।
সাংবাদিক নির্যাতন ও নিপীড়ন এর প্রতিবাদে মঙ্গলবার (১১ই ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টায় রাজধানীর মিরপুর-১০ নম্বর গোল চত্বরে বৃহত্তর মিরপুর সাংবাদিক সোসাইটি আয়োজিত মানববন্ধনে এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন বক্তারা।
মানববন্ধনে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিউজে) সভাপতি আবু জাফর সূর্য বলেন, সাংবাদিকদের নিয়ে কেউ কোনো কথা বলেন না। অন্য যেকোনো পেশার শ্রমিক-ব্যবসায়ী কারও কোনো কিছু হলে সবার জন্য কথা বলেন সাংবাদিকরা। সাংবাদিকদের চাকরি না হলে, বেতন না পেলে আমাদের জন্য কেউ কথা বলেন না। তিনি আরও বলেন, দেশে গণতন্ত্রের কথা, সুশাসনের কথা এ সাংবাদিকরাই বলেন। গণতন্ত্র আর গণমাধ্যম একই হাতের এপিঠ আর ওপিঠ। যদি আপনারা গণমাধ্যমের টুটি চেপে ধরেন, তাহলে দেশে গণতন্ত্র ও সুশাসন স্বাভাবিকভাবে চলতে পারে না। সাংবাদিকরা দেশের পক্ষে, মানবতার পক্ষে, সুশাসনের পক্ষে, সকল শ্রণী পেশা মানুষের পক্ষে থাকেন। আপনারা যদি সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন করেন তাহলে বাংলাদেশের পক্ষে কথা বলার লোক কমে যাবে। সাংবাদিকদের স্বাভাবিকভাবে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে দিতে হবে।
সাংবাদিক নির্যাতনের কথা উল্লেখ করে আবু জাফর সুর্য আরও বলেন, সিটি নির্বাচনে পেশাগত দায়িত্ব পালন করার সময় সাংবাদিক মোস্তাফিজুর রহমান সুমনকে রক্তাক্ত করা হয়েছে। তার অপরাধ কি ছিল? তার চোখের সামনে এমন একটি ঘটনা ঘটেছিল যেটার ছবি সে তুলেছিলেন এটাই কি তার অপরাধ? ঘটনাটি ছিল সমাজবিরোধী, রাষ্ট্রবিরোধী, স্বাধীনতাবিরোধী। কারণ আপনার মত প্রকাশের অর্থ হচ্ছে স্বাধীনতার চেতনা। আপনি কথা বলতে পারবেন সেটাই স্বাধীনতার চেতনা। আপনি ভোট দিতে পারবেন এটাই স্বাধীনতার চেতনা। আমার বন্ধু সুমনকে যে আহত করেছে সে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষের মানুষ হতে পারে না। সে যদি আওয়ামী লীগের পক্ষের ও মানুষ হয় তাহলে আওয়ামীলীগের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা স্বাধীনতাবিরোধী। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী তার কঠোর থেকে কঠোরতম শাস্তি হওয়া উচিৎ।
এসম সব সরকারের কথা উল্লেখ করে আবু জাফর সুর্য বলেন, সাংবাদিকরা রাষ্ট্রের কোনো ক্ষমতায় অংশগ্রহণ করেন না, অংশগ্রহণ করতে চায়ও না। আওয়ামী লীগের পক্ষে লেখলে বলে ভালো, বিএনপির পক্ষে লেখলে তারাও বলে ভালো। কারো পক্ষে লেখা কি সাংবাদিকের কাজ? আমরা সাংবাদিকরা হচ্ছি স্বাধীনতার পক্ষে স্বাধীনতার চেতনার পক্ষে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে। আমরা দুঃশাসনের বিরুদ্ধে কলম ধরি।
মানববন্ধনে বৃহত্তর মিরপুর সাংবাদিক সোসাইটির আহ্বায়ক হেমায়েত হোসেনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন- দৈনিক কালের কণ্ঠের সিনিয়র রিপোর্টার লায়েকুজ্জামান, বাংলাদেশ সাব-এডিটরস কাউন্সিলের সাবেক সভাপতি আশরাফুল ইসলাম, বৃহত্তর মিরপুর সাংবাদিক সোসাইটির যুগ্ম-আহ্বায়ক এস.এম. জহিরুল ইসলাম, সাংবাদিক মিরাজ মাহবুব ইফতি, সিনিয়র সাংবাদিক মোঃ নজরুল ইসলাম, সাংবাদিক আনিচুর রহমান আনিচ, সাংবাদিক মোল্লা মিজানুর রহমান, সাংবাদিক বাবুল খান, সাংবাদিক মিজানুর রহমান সাহসি, সাংবাদিক আব্দুলাহ আল মাসুম,সাংবাদিক দীন ইসলাম, সাংবাদিক মীর আলাউদ্দিন, সাংবাদিক সোলায়মান, সাংবাদিক কাজী ওবায়দুর রহমান, সাংবাদিক শেখ মোঃ মিজানুর রহমান, সাংবাদিক মোঃ ইব্রাহিম, সাংবাদিক মারুফ হায়দার, সাংবাদিক মোশারফ হোসেন মনা, সাংবাদিক আমিন, সাংবাদিক তুহিন ভুইয়া, সাংবাদিক মিজানুর রহমান, সাংবাদিক আব্দুল আজিজ, সাংবাদিক শহিদ, সাংবাদিক সেলিম মো, সাংবাদিক এস এম ইমন প্রমুখ।
পরে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মানববন্ধন কর্মসূচি শেষ হয়।