মঙ্গলবার , ১৬ জানুয়ারি ২০১৮ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন ও আদালত
  3. আওয়ামীলীগ
  4. আন্তর্জাতিক
  5. খেলাধুলা
  6. জাতীয়
  7. তথ্য-প্রযুক্তি
  8. ধর্ম
  9. বি এন পি
  10. বিনোদন
  11. বিশেষ সংবাদ
  12. রাজধানী
  13. লাইফস্টাইল
  14. শিক্ষা
  15. শিল্প ও সাহিত্য

আমরণ অনশন কর্মসূচি অসুস্থ শিক্ষকদের

প্রতিবেদক
bangladesh ekattor
জানুয়ারি ১৬, ২০১৮ ১:০৫ পূর্বাহ্ণ

সুত্র:দিনকাল : তীব্র শীতকে উপেক্ষা করে শিক্ষক সমাজ ন্যায্য বেতন-ভাতা আর মর্যাদার দাবিতে বাধ্য হয়ে রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে খোলা আকাশের নিচে প্রচন্ড শীতের মাঝে ধাপে ধাপে অবস্থান কর্মসূচির পর আমরণ অনশনের মতো কঠোর আন্দোলনে নেমেছেন। অথচ তাদের দাবির প্রতি ন্যূনতম সাড়া দিচ্ছেন না সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী এবং কর্মকর্তারা। গতকাল সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়করণের দাবিতে আমরণ অনশন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী অসুস্থ শিক্ষকদের স্যালাইন দিয়ে বাঁচিয়ে রাখা হচ্ছে। দূর থেকে মনে হচ্ছে পুরো প্রেসক্লাব এলাকায় অনশনকারীদের স্থলটি এখন মিনি হাসপাতালে পরিণত হয়েছে। : এদিকে তীব্র শীতকে উপেক্ষা করে জাতীয়করণের দাবিতে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছেন বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডের রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত ইবতেদায়ি মাদরাসার শিক্ষকরা। আর এই আমরণ অনশনে এ পর্যন্ত ১৭৮ জন শিক্ষক মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এই কর্মসূচিতে অংশ নেয়া বাকি শিক্ষকদেরও দিন দিন আরো করুন। বাংলাদেশ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. রুহুল আমিন বলেন, রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষকরা টানা ১৫ দিন ধরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে তারা অবস্থান করছেন। তবে গত ৮ দিন ধরে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষকরা। মাদরাসা শিক্ষকরা প্রথমে গত ১ জানুয়ারি থেকে ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। এতে সরকারের কাছ থেকে সাড়া না পেয়ে ৯ জানুয়ারি থেকে আমরণ অনশন শুরু করেন তারা। টানা ৮ দিন ধরে আমরণ অনশন এবং তীব্র শীতের কারণে অধিকাংশ শিক্ষক শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এর মধ্যে ১৭৮ জন শিক্ষককে অসুস্থ হওয়ায় চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া গুরুতর হওয়ায় কয়েকজনকে মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে। : তিনি বলেন, এমপিওভুক্তির বিষয়টি সরকারের সক্রিয় বিবেচনায় রয়েছে নেয়া হচ্ছে না। আমরা এখানে অনশনে অংশ নেয়া সবাই মাদরাসা শিক্ষক। এজন্য অবহেলার শিকার হচ্ছি। আমরা আশা করি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের কষ্ট উপলব্ধি করবেন এবং জাতীয়করণের ব্যবস্থা করবেন। : আমির হোসেন নামে এক শিক্ষক সাংবাদিকদের বলেন, নিয়মিত বেতন-ভাতা না পেয়ে ইবতেদায়ি শিক্ষকেরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। বেতনহীন চাকরিতে জীবন চালাতে হিমশিম খাচ্ছি আমরা। বাধ্য হয়ে দাবি আদায়ে মাঠে নেমেছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই আমরণ অনশন চলবে। এই শীতে মরে যাবো তবুও রাজপথ ছাড়বো না। এদিকে বেসরকারি শিক্ষা জাতীয়করণের এক দফা দাবিতে এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরাও এবার আমরণ অনশন শুরু করেছেন। বেসরকারি শিক্ষা জাতীয়করণ লিয়াজোঁ ফোরামের ডাকে গতকাল সোমবার সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই অনশন শুরু হয়। এর আগে গত ১০ জানুয়ারি থেকে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা। তারা আগেই ঘোষণা দিয়েছিলেন দাবি পূরণ না হলে সোমবার থেকে আমরণ অনশন শুরু করার। ফোরামের যুগ্ম আহ্বায়ক মতিউর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে দাবি পূরণের ঘোষণা না আসা পর্যন্ত এই অনশন চলবে। তিনি জানান, এই অনশনে যোগ দিতে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আরও শিক্ষকেরা এখন পথে আছেন। : প্রসঙ্গত, এর আগে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করেছেন। এবার এমপিওভুক্তির দাবিতে জাতীয় প্রসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা। গত ২৬ ডিসেম্বর সকাল ৮টা থেকে নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফাউন্ডেশনের ব্যানারে এই অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। এমপিওভুক্তি, সহকারী শিক্ষকদের মতো বেতন, বাসা ভাড়া ও চিকিৎসা ব্যয় পাওয়াসহ বিভিন্ন দাবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে হাজারেরও অধিক শিক্ষক-কর্মচারী এতে অংশ নেন। ফাউন্ডেশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যক্ষ গোলাম মাহমুদুন্নবী ডলার সাংবাদিকদের বলেন, দেশের ৯৮ শতাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বেসরকারি ব্যবস্থাপনা নির্ভর। এর মধ্যে নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ ও কারিগরি মাদ্রাসা রয়েছে। বিভিন্ন স্তরে পাঁচ-ছয় হাজারের বেশি স্বীকৃতিপ্রাপ্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির অপেক্ষায় আছে, যা এই স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এক-চতুর্থাংশ। : তিনি বলেন, এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মরত ৮০ হাজারেরও অধিক শিক্ষক-কর্মচারী ২০ লাখেরও বেশি শিক্ষার্থীকে পাঠদানের কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। কিন্তু প্রায় ১৫ বছর ধরে তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মানসম্পন্ন শিক্ষাদান কার্যক্রম চালানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে। : পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গেছে, শিক্ষক সমাজ আজ ন্যায্য বেতন ভাতা আর মর্যাদার দাবিতে বাধ্য হয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে খোরা আকাশের নিচে প্রচন্ড শীতের মাঝে ধাপে ধাপে অবস্থান কর্মসূচির পর আমরণ অনশনের মতো কঠোর আন্দোলনে নেমেছেন। এর আগে নন-এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা আমরণ অনশন পালনকালে প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসে তারা অনশন ভঙ্গ করে বাড়ি ফিরে যান।

সর্বশেষ - সর্বশেষ সংবাদ